মাহফুজ উল্লাহর উদ্দেশ্যই ছিল মানুষের কল্যাণে সমাজ পরিবর্তন করা: মির্জা ফখরুল
Published: 22nd, February 2025 GMT
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহর উদ্দেশ্যই ছিল মানুষের কল্যাণের জন্য সমাজে পরিবর্তন নিয়ে আসা। আমি খুব খুশি হয়েছি, তিনি অন্তত মরণোত্তর রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পেয়েছেন। সরকারকে ধন্যবাদ জানাতে চাই, সত্যিকার অর্থে একজন গুণী, অসাধারণ মেধাবী ও দেশপ্রেমী একজনকে তারা সম্মানিত করেছে।’
প্রয়াত সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহর মরণোত্তর একুশে পদক পাওয়া উপলক্ষে আজ শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘আজ আমরা সবাই অত্যন্ত আশাবাদী যে ফ্যাসিবাদের পরিবর্তন হয়েছে। ফ্যাসিবাদীরা পালিয়ে গেছে এবং আন্দোলনের মধ্য দিয়েই পালিয়ে গেছে। দেশের রাজনৈতিক দলগুলো ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে, সংগ্রাম করেছে। সর্বশেষ ছাত্র-জনতার সমবেত প্রচেষ্টায় সেটা সম্ভব হয়েছে।’
বাংলাদেশকে নতুনভাবে গড়ে তুলতে সবার আরও বেশি আন্তরিক হওয়া প্রয়োজন বলেন মির্জা ফখরুল। মাহফুজ উল্লাহর আরাধ্য কাজ করতে পারলে তাঁর প্রতি সম্মান দেখানো সম্ভব হবে বলেন তিনি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘মাহফুজ উল্লাহ একসঙ্গে একজন লেখক, সাংবাদিক, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও অ্যাকটিভিস্ট ছিলেন। সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ যে তিনি হচ্ছেন কনটেমপোরারি হিস্টোরিক্যাল।’
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘মাহফুজ উল্লাহকে আমার ব্যক্তিগত হিরো বলতে পারি। উনার বেশ কিছু বই আমি পড়েছি। তাঁকে বাংলাদেশের পরিবেশ সাংবাদিকতার অগ্রদূত বলা যায়। শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট রেজিমে মানুষ, সাংবাদিকেরা সত্য কথা ভুলে গিয়েছিলেন। উনি সত্য কথা বলতেন। ওইটাই মনে হতো যে ইটস অ্যান অ্যাক্ট অব ডিফাইন। ভয়াবহ রকমের স্রোতের বিপরীতে দাঁড়িয়ে উনি কথা বলছেন। সে জন্য তাঁকে অনেক মূল্য দিতে হয়েছে।’
এ বছর সংস্কৃতি ও শিক্ষায় একুশে পদক পাওয়া শহিদুল আলম এবং চিত্রকলায় একুশে পদক পাওয়া রোকেয়া সুলতানা আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত ছিলেন মাহফুজ উল্লাহর ভাই মাহবুব উল্লাহ, সাবেক সচিব ইসমাইল জবিউল্লাহ, সাংবাদিক গোলাম মর্তুজা প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ফখর ল
এছাড়াও পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ করতে কাজ করছে চীন
মাকিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে চুক্তি বাতিলকারী দেশগুলোর জন্য একটি স্পষ্ট বার্তা নিয়ে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বিশ্বজুড়ে কূটনৈতিক প্রচারণা চালাচ্ছেন। আর তার সেই বার্তাটি হচ্ছে- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এমন একটি দাঙ্গাবাজ দেশ, যাকে বিশ্বাস করা যায় না।
শুল্ক স্থগিতাদেশের সময় চীন ছাড়া সবদেশকে বাণিজ্য চুক্তিতে স্বাক্ষর করার জন্য ট্রাম্প যে ৯০ দিনের সময়সীমা দিয়েছেন, সেই সময়ের মধ্যে চীনা কর্মকর্তারা বিদেশী সরকারগুলোকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ঠেলে দেওয়ার জন্য দৌড়ঝাঁপ করছেন। মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট জানিয়েছেন, একবার এই চুক্তিগুলো কার্যকর হয়ে গেলে, তিনি চান মার্কিন মিত্ররা ‘একটি দল হিসেবে চীনের সাথে যোগাযোগ করুক’, যাতে মার্কিন পক্ষ আলোচনায় আরো বেশি সুবিধা পায়।
দক্ষিণ কোরিয়া থেকে শুরু করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন পর্যন্ত মার্কিন মিত্ররা নিরাপত্তার জন্য ওয়াশিংটনের উপর নির্ভর করে এবং অর্থনৈতিকভাবে ট্রাম্পকে সন্তুষ্ট করার জন্য তাদের উৎসাহ রয়েছে। অবশ্য চীন আরো সমান তালে শুল্ক যুদ্ধের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ট্রাম্পের শেষ বাণিজ্য যুদ্ধের পর থেকে বেইজিং মার্কিন রপ্তানি থেকে তার অর্থনীতিকে মুক্ত করার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছে। দেশটিতে নিবেদিতপ্রাণ এবং সক্রিয় সৈন্য সংখ্যার বিচারে বিশ্বের বৃহত্তম সামরিক বাহিনী রয়েছে।
শি ট্রাম্পের সাথে ফোনে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন এবং তার সরকার ‘পাল্টাপাল্টি’ শুল্ক বাতিলের দাবি জানাচ্ছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র জোর দিয়ে বলছে যে, অন্য পক্ষ, অর্থাৎ চীনকে উত্তেজনা কমানোর প্রথম পদক্ষেপ নিতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের মাধ্যমে, চীন নিজেকে নিয়মভিত্তিক ব্যবস্থার একজন চ্যাম্পিয়ন হিসেবে উপস্থাপন করছে এবং অন্যান্য দেশকে ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে বেইজিংয়ের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছে।
সাংহাইয়ের ফুদান বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর আমেরিকান স্টাডিজের পরিচালক উ জিনবো বলেন, “এটি কেবল চীন-মার্কিন সম্পর্কে নয়। এটি আসলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক ব্যবস্থা সম্পর্কে।”
গত বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রাজনীতিবিদদের সাথে দেখা করার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেওয়া উ জানান, অন্যান্য সরকারেরও বুঝতে হবে বেইজিংয়ের প্রচেষ্টা তাদের উপকার করেছে।
তিনি বলেন, “যদি চীন আমেরিকার বিরুদ্ধে না দাঁড়াত, তাহলে আমেরিকা কীভাবে তাদের ৯০ দিনের বিরতি দিত। চীনের উপর শুল্ক আরোপের ফলে ট্রাম্প অন্যান্য দেশের উপর শুল্ক আরোপ বন্ধ করার জন্য আবরণ পেয়েছেন। তাদের এটা উপলব্ধি করা উচিত।”
চীনের শীর্ষ কূটনীতিক ওয়াং ই সোমবার ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত ব্রিকস ব্লকের দেশগুলোকে ট্রাম্পের দাবি প্রতিহত করার জন্য বেইজিংয়ের সাথে যোগ দিতে আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, “আপনি যদি নীরব থাকেন, আপস করেন এবং পিছু হটতে চান, তাহলে এটি কেবল বুলিকে আরো আক্রমণাত্মক হয়ে উঠতে সাহায্য করবে।”
তার এই বক্তব্যের কয়েক ঘন্টা পরে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইংরেজি সাবটাইটেলসহ একটি ভিডিওতে ওয়াশিংটনকে ‘সাম্রাজ্যবাদী’ শক্তি হিসেবে চিহ্নিত করে। সেখানে দাবি করা হয়েছে, গত শতাব্দীতে জাপানি রপ্তানি সীমিত করার মার্কিন পদক্ষেপ তোশিবার মতো কোম্পানিগুলোকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
ওয়াং ই বলেছেন, “একজন ধর্ষকের কাছে মাথা নত করা ঠিক তৃষ্ণা নিবারণের জন্য বিষ পান করার মতো, এটি কেবল সংকটকে আরো গভীর করে তোলে। চীন পিছু হটবে না যাতে দুর্বলদের কণ্ঠস্বর শোনা যায়।”
ঢাকা/শাহেদ