জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেন, ‘শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের নেতারা নির্বিঘ্নে চুরি-ডাকাতি, খুন-গুম করার জন্য আমাদের জেলে নিয়েছে। তারা মনে করেছে, তারা যা চাবে, তা–ই পাবে। তারা মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। তারা (আওয়ামী লীগ) মানুষকে মানুষ মনে করত না। রাজনৈতিক নেতাদের উপহাস করে কথা বলত। তাদের ধারণা, তারা দীর্ঘকাল শাসন করে বেড়াবে। তারা ভুলে গেছে, সবকিছুর মালিক আল্লাহ। তিনি বসাতেও পারেন, খসাতেও পারেন।’

আজ শনিবার বেলা তিনটায় চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম বাজার বিশ্বরোড এলাকায় জামায়াতের পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে দলটির আমির এ কথা বলেন। জেলা জামায়াত এ পথসভার আয়োজন করে।

আওয়ামী লীগকে ইঙ্গিত করে শফিকুর রহমান বলেন, ‘তারা এমনভাবে শাসন করল, শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকেই পালিয়ে গেল। সামান্য অজুহাতে আমাদের ডাকাত, চোর, ধর্ষক—এগুলো বলত। আওয়ামী লীগের একটি পরিবার দেশের মানুষকে দাস মনে করত। তারা ভুলে গেছে, মানুষ অনেক কিছু পরিকল্পনা করে, তার কিছু বাস্তবায়ন হয়, কিছু হয় না। কিন্তু আল্লাহ যা পরিকল্পনা করেন, তার পুরোটাই বাস্তবায়ন হয়।’

পথসভায় জামায়াতের আমির আরও বলেন, ‘আমরা তো তাদের (আওয়ামী লীগ) যাইতে বলি নাই। তারা দেশের নিরীহ মানুষের বিরুদ্ধে গেছে, জুলম-অত্যাচার করেছে। এর ফল তারা পেয়েছে, আরও পাবে।’ নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জনদুর্ভোগ নিরসনের জন্য স্থানীয় নির্বাচনটা দিতে হবে। স্থানীয় নির্বাচন হলেই জনগণের এই দুর্ভোগ কাটবে। তারপর অবশ্যই জাতীয় নির্বাচনও দিতে হবে। তবে জাতীয় নির্বাচনের আগে জনগণ কিছু মৌলিক সংস্কার চায়।

জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মো.

মাসুদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি শাহজাহান মিয়ার সঞ্চালনায় পথসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি এ টি এম মাসুদ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মোবারক হোসাইন, ঢাকা মহানগরের (দক্ষিণ) সহকারী সেক্রেটারি কামাল উদ্দিন, জেলা জামায়াতের সাবেক আমির আবদুর রহিম পাটোয়ারী, সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক আবুল হোসাইন জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, চাঁদপুর শহর জামায়াতের আমির আইনজীবী মো. শাহজাহান খান প্রমুখ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র আম র আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিলেন ইশরাক হোসেন

বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব দেওয়ার দাবিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নগর ভবনে ঈদের বিরতির পর ফের অবস্থান নিয়েছেন সংস্থাটির কর্মচারীরা। এর সঙ্গে ঢাকাবাসীর ব্যানারে নগরভবনে একত্রিত হয়েছেন ইশরাকের অনুসারীরা। সেখানে উপস্থিত হয়ে আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন ইশরাক হোসেন।

আজ রোববার সকাল থেকে ইশরাকের অনুসারীরা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নগরভবনে একত্রিত হয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করলেও। সকাল ১১ টার দিকে নগরভবনে প্রবেশ করেন ইশরাক হোসেন এবং আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্যে আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন তিনি।

ইশরাক হোসেন বলেন, সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি, আপনারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তি করেন। তাহলে অচল অবস্থা কেটে যাবে। এই সমস্যা সুরাহা না করা পর্যন্ত এই কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের এই আন্দোলন চলমান থাকবে। স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা সংবিধান লংঘন করেছেন। আন্দোলন চলমান থাকবে। এখান থেকে ফিরে আসার কোনো সুযোগ নেই। এই লড়াই থেকে ফিরে আসার কোনো সুযোগ নেই। প্রধান উপদেষ্টাকে আহ্বান জানাবো, তিনি যেন বিষয়টি সরাসরি নিজে তত্ত্বাবধান করেন। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমরা নিয়মতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিচালনায় বিশ্বাস করি। এখন আমাদের আন্দোলন যেভাবে চলছে কোনো অবস্থাতেই আমরা এখান থেকে ফিরে যেতে পারি না। আদালতের রায় জনগণের রায়কে আপনারা মেনে নিন। 

ইশরাক বলেন, আমরা যদি এখান থেকে পেছনের দিকে চলে যাই, তাহলে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হবে না। সরকারকে আহ্বান জানাবো, আপনারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটা নিষ্পত্তি করেন। নইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এই সংকটে চলবেই। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের যেসব দৈনন্দিন কার্যক্রম চলবে, জনগণের জন্য ভোগান্তি না হয়। এগুলো আমাদের তত্ত্বাবধানে চলমান থাকবে।

এদিকে তারা ‘শপথ শপথ শপথ চাই, ইশরাক ভাইয়ের শপথ চাই’, ‘মেয়র নিয়ে তালবাহানা, সহ্য করা হবে না’, ‘চলছে লড়াই চলবে, ইশরাক ভাই লড়বে’, ‘নগর পিতা ইশরাক ভাই, আমরা তোমায় ভুলি নাই’- এমন নানা স্লোগান দিয়ে যাচ্ছেন আন্দোলনকারীরা। তাদের স্লোগানে উত্তাল ছিল পুরো নগরভবন। তাদের আন্দোলনের ফলে বিরতির আগে ১৫ মে থেকে ৩ জুন পর্যন্ত নগর ভবন থেকে দেওয়া সব নাগরিক সেবা বন্ধ ছিল। ঈদের ছুটির পর আজ থেকে ফের তারা আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন ইশরাকের অনুসারীরা।

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হয়। সে সময় আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপসকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। নির্বাচনে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ফল বাতিল চেয়ে ২০২০ সালের ৩ মার্চ মামলা করেন ইশরাক।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ২৭ মার্চ ঢাকার নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল সেই ফল বাতিল করে অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে। এরপর ২৭ এপ্রিল ইশরাককে ডিএসসিসি মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু তাকে যেন শপথ পড়ানো না হয়; সেজন্য গত ১৪ মে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়। এমন পরিস্থিতিতে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে গত ১৫ মে থেকে আন্দোলন নামেন ইশরাক সমর্থকরা। তাদের আন্দোলনের কারণে ডিএসসিসি নগর ভবন কার্যত অচল হয়ে পড়ে। কিন্তু আইনি জটিলতার কথা বলে ইশরাকের শপথের আয়োজন থেকে বিরত থাকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।

এরপর এ রিট মামলার ওপর কয়েক দফা শুনানির পর তা খারিজ করে আদেশ দেন হাইকোর্টের বেঞ্চ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মানুষ বলছে, সব দলের শাসন দেখা হয়েছে, বাকি শুধু ইসলামি শাসন দেখার: গোলাম পরওয়ার
  • ইরানের শাসকদের ক্ষমতাচ্যুত করার আহ্বান সাবেক শাহের পুত্রের
  • আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিলেন ইশরাক হোসেন
  • আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিলেন ইশরাক হোসেন
  • আড়াইহাজারে জামায়াতের পথসভায় বিএনপির হামলা, আহত ৫
  • আড়াইহাজারে জামায়াতে ইসলামীর পথসভায় বিএনপির হামলা, আহত ৫
  • বাজেটের ত্রুটি সংশোধনের আহ্বান
  • ড. ইউনূসকে দেশের কাজে যুক্ত রাখতে চায় বিএনপি
  • জনগণের উদ্দেশে ভাষণ দেবেন ইরানের প্রেসিডেন্ট
  • সহসাই রাজনীতির কালো মেঘ কেটে যাবে: ডা. জাহিদ