ব্রাজিলের আমাজন বনাঞ্চলের একটি শহরে কয়েকটি বিশাল গর্তের (সিঙ্কহোল) সৃষ্টি হয়েছে। এসব গর্ত আশপাশের কয়েকশ বাড়ি গ্রাস করে ফেলতে পারে– এমন আশঙ্কায় শহরটিতে জারি করা হয়েছে জরুরি অবস্থা। আমাজনের মারানহোর বুরিতিকুপু নামে শহরটির বেশ কয়েকটি ভবন ইতোমধ্যে সিঙ্কহোলে বিলীন হয়ে গেছে। ৫৫ হাজার বাসিন্দার শহরটির অন্তত ১ হাজার ২০০ মানুষের বাড়ি এসব গর্তের কারণে ধ্বংস হতে পারে বলে আশঙ্কা শহর কর্তৃপক্ষের।
এ মাসের শুরুতে সেখানকার স্থানীয় সরকার একটি ডিক্রি জারি করে। এতে বলা হয়, ‘গত কয়েক মাসের মধ্যে সিঙ্কহোলটির পরিধি বিস্তৃত হয়েছে, যা এখন আবাসিক ভবনের দিকে এগোচ্ছে।’ বুরিতিকুপু নামে শহরটিতে গত ৩০ বছর ধরেই দেখা যাচ্ছে এমন সিঙ্কহোল। তবে সম্প্রতি এগুলোর পরিধি এতটাই বেড়েছে, মানুষের বসতির জন্য এখন এগুলো হুমকি হয়ে উঠেছে। মূলত বৃষ্টির কারণে মাটি ক্ষয়, বন উজাড় করে অপরিকল্পিত বাড়িঘর নির্মাণে বাড়ছে সিঙ্কহোলের বিস্তৃতি। ভূগোলবিদ ও মারানহাউ ফেডারেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মার্সিলিনো ফারিয়াস বলেছেন, ভারী বৃষ্টির কারণে পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে।
বুরিতিকুপু শহরটিতে দীর্ঘ ২২ বছর ধরে থাকছেন ৬৫ বছর বয়সী বৃদ্ধ অ্যান্তোনিয়া দোস অ্যাঞ্জস। তিনি জানান, এখানে হয়তো আরও সিঙ্কহোলের সৃষ্টি হতে পারে। এ নিয়ে তারা সবাই আতঙ্কিত। শহরটির পাবলিক ওয়ার্কসের সেক্রেটারি ও প্রকৌশলী লুকাস কোনসিকা বলেন, তাদের কাছে এ সমস্যার সমাধান নেই।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: অ য ম জন
এছাড়াও পড়ুন:
সুদানে ‘গণহত্যা’ হয়েছে
সুদানের এল-ফাশের শহর ও এর আশপাশের বিভিন্ন স্থানে গণহত্যা চলছে। কৃত্রিম ভূ–উপগ্রহের ছবি বিশ্লেষণ করে ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা এমন দাবি করেছেন। জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেখানকার পরিস্থিতিকে ‘ভয়াবহ’ বলে উল্লেখ করেছেন।
২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে দেশটির আধা সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সসের (আরএসএফ) লড়াই চলছে। গত রোববার তারা এল-ফাশের দখল করে। এর মাধ্যমে প্রায় দেড় বছরের দীর্ঘ অবরোধের পর পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে সেনাবাহিনীর সর্বশেষ শক্ত ঘাঁটিটিও ছিনিয়ে নেয় তারা।
শহরটি পতনের পর থেকে সেখানে বিচারবহির্ভূত হত্যা, যৌন সহিংসতা, ত্রাণকর্মীদের ওপর হামলা, লুটপাট এবং অপহরণের খবর পাওয়া যাচ্ছে। সেখানকার যোগাযোগব্যবস্থা প্রায় সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন।
এল-ফাশের থেকে পালিয়ে পার্শ্ববর্তী তাওইলা শহরে জীবিত বেঁচে ফেরা কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে এএফপির সাংবাদিক কথা বলেছেন। সেখানে গণহত্যা হয়েছে জানিয়ে তাঁরা বলেন, শহরটিতে মা-বাবার সামনেই শিশুদের গুলি করা হয়েছে। প্রাণ বাঁচাতে পালানোর সময় সাধারণ মানুষকে মারধর করে তাঁদের মূল্যবান সামগ্রী লুট করা হয়েছে।
পাঁচ সন্তানের মা হায়াত শহর থেকে পালিয়ে আসা ব্যক্তিদের একজন। তিনি বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে থাকা তরুণদের আসার পথেই আধা সামরিক বাহিনী থামিয়ে দেয়। আমরা জানি না, তাদের কী হয়েছে।’
ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যানিটারিয়ান রিসার্চ ল্যাব বলেছে, গত শুক্রবার পাওয়া কৃত্রিম উপগ্রহের ছবিতে ‘বড় ধরনের কোনো জমায়েত চোখে পড়েনি।’ এ কারণে মনে করা হচ্ছে, সেখানকার জনগণের বড় একটি অংশ হয় ‘মারা গেছে, বন্দী হয়েছে কিংবা লুকিয়ে আছে।’ সেখানে গণহত্যা অব্যাহত থাকার বিভিন্ন ইঙ্গিত স্পষ্টভাবে দেখা গেছে।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, আল-ফাশের থেকে এখন পর্যন্ত ৬৫ হাজারের বেশি মানুষ পালিয়েছে। এখনো কয়েক হাজার মানুষ শহরটিতে আটকা পড়েছে। আরএসএফের সর্বশেষ হামলার আগে সেখানে প্রায় আড়াই লাখ মানুষ বসবাস করত।
শনিবার বাহরাইনে এক সম্মেলনে জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োহান ভাডেফুল বলেন, সুদান একটি ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। সেখানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে। আরএসএফ নাগরিকদের সুরক্ষার অঙ্গীকার করেছিল। কিন্তু তাদের এই কর্মকাণ্ডের জন্য জবাবদিহির মুখোমুখি হতে হবে।