রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেনকে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া শত শত কোটি ডলারের সহায়তা ফেরত চান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় শনিবার রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসির বাইরে নিজ দল রিপাবলিকান পার্টির সদস্যদের বার্ষিক জমায়েত—কনজারভেটিভ পলিটিক্যাল অ্যাকশন কনফারেন্সে এ কথা বলেছেন তিনি।

তিন বছর ধরে ইউক্রেন যুদ্ধ চলছে। এই যুদ্ধ থামাতে বেশ তৎপর ট্রাম্প। এ নিয়ে এরই মধ্যে রাশিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেছেন তাঁর প্রশাসনের কর্তা-ব্যক্তিরা। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ফোনকলে কথাও বলেছেন তিনি। তবে যুদ্ধ বন্ধের আলোচনায় ইউক্রেনকে যুক্ত করা হয়নি। দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে নিয়ে আক্রমণাত্মক কথাও বলেছেন ট্রাম্প।

এরই মধ্যে এবার ইউক্রেনকে সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনের দেওয়া সহায়তার অর্থ ফেরত নেওয়ার প্রসঙ্গে কথা বললেন ট্রাম্প। শনিবারের সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমি প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গে কাজ করছি। প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে কাজ করছি। আমি (সহায়তার) অর্থ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি।’

ট্রাম্প আরও বলেন, ইউক্রেনকে ঋণ হিসেবে অর্থ দিয়েছে ইউরোপ। তারা তাদের অর্থ ফেরত পাবে। তবে যুক্তরাষ্ট্র এমন কোনো শর্তে ইউক্রেনকে অর্থ দেয়নি। তাই তিনি চান যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া অর্থের বিনিময়ে ইউক্রেন যেন কিছু একটা দেয়। যুক্তরাষ্ট্র তাদের কাছে বিরল খনিজ সম্পদ ও জ্বালানি তেল বা যে কোনো কিছু চাচ্ছে।

সম্প্রতি ইউক্রেনকে একটি খনিজ চুক্তি করার প্রস্তাব দেন ট্রাম্প। প্রস্তাবে যুদ্ধের সময় ওয়াশিংটন কিয়েভকে যে সামরিক সহায়তা দিয়েছে, তার বিনিময়ে ইউক্রেনের কাছ থেকে ৫০ হাজার কোটি মার্কিন ডলারের খনিজ সম্পদের মালিকানা চান ট্রাম্প। তাঁর আশা এই প্রস্তাবটি দ্রুতই মেনে নেবেন ভলোদিমির জেলেনস্কি।

তবে ওই প্রস্তাব নাকচ করেছেন জেলেনস্কি। গত বুধবার তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এখন পর্যন্ত যে সামরিক সহায়তা পাঠিয়েছে, তা ট্রাম্প যে পরিমাণ অর্থ ফেরত চাইছেন, তার থেকে অনেক কম। এরপর ট্রাম্প তাঁকে ‘স্বৈরশাসক’ আখ্যা দিয়ে বলেন, রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি নিশ্চিত করতে জেলেনস্কিকে দ্রুত সরে যেতে হবে অথবা তিনি তাঁর দেশ হারাতে পারেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইউক র ন

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ