নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার নজিপুর-সাপাহার সড়কের মানাষী ও করমজাই এর মাঝামাঝি এলাকায় রাস্তায় গাছ ফেলে বিআরটিসি বাস ও মাইক্রো থামিয়ে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে।

শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানান, সড়কের গাছ কেটে রাস্তা ব্যারিকেড দিয়ে একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত দল বিআরটিসি বাস আটকিয়ে নগদ টাকা, মোবাইল ফোন, অন্যান্য মালামাল নিয়ে যায়। মাঝেমধ্যেই এই রোডে ডাকাতির ঘটনা ঘটছে বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। 

এবিষয়ে পত্নীতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনায়েতুর রহমান বলেন, প্রায় রাত বারোটার দিকে নওগাঁ-সাপাহার সড়কে গাছ ফেলে সড়ক আটকায় দুর্বৃত্তরা। এ সময় রাজশাহী থেকে সাপাহারগামী একটি বিআরটিসি বাস আটকায় তারা। সেখান থেকে বেশ কিছু মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়া হয়। পরে স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায় ছিনতাইকারীরা। 

ওসি আরও জানান, এ ঘটনায় কাউকে চিহ্নিত করা যায়নি। মামলাও হয়নি এখনও। ঘটনার পর পরই সড়কে যোগাযোগ স্বাভাবিক করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই তারা যাত্রীর দুই একটা ফোন ও মালামাল নিয়ে গেছে। পুরো ঘটনাটি আমরা তদন্ত করছি। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হবে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা

‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। 

জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’

এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন। 

এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী  বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’

প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’

প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ