সুনামগঞ্জে যাত্রীবাহী দু’ বাসের সংঘর্ষ, আহত ২০
Published: 23rd, February 2025 GMT
সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার গাগলী এলাকায় যাত্রীবাহী দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। আজ রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে উপজেলার জয়কলস ইউনিয়নের গাগলী এলাকায় মদনপুর-দিরাই আঞ্চলিক সড়কে দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, দিরাই থেকে ছেড়ে আসা সিলেটগামী যাত্রীবাহী বাস গাগলী-নারাইনপুর পয়েন্টে মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। তাই জনগণের তোপের মুখ থেকে বাঁচতে দ্রুত বাস চালাচ্ছিলেন চালক। বৃষ্টির কারণে রাস্তা পিচ্ছিল থাকায় বিপরীতদিক থেকে ছুটে আসা দিরাইগামী গেইটলক সার্ভিসের অপর যাত্রীবাহী বাসে সজোরে ধাক্কা দেয়। এ সময় উভয় বাসের ২০ জন আহত হয়েছেন।
স্থানীয়রা এগিয়ে এসে আহতদের উদ্ধার করে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠায়। শাঞ্জিগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা এসে বাসে আটকে থাকা চালককে গাড়ি কেটে বের করে। তার অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সিলেটে পাঠানো হয়েছে।
আরো পড়ুন:
চুরি-ডাকাতি বৃদ্ধি
রাত ১০টার পর বন্ধ থাকবে ঢাকা-সিলেট পুরাতন মহাসড়ক
সিরাজগঞ্জে অটোভ্যানে বাসের ধাক্কা, নিহত ২
উপজেলার জয়কলস ইউনিয়নের ৯নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার মোহাম্মদ সয়ফুজ্জামান জানান, দুটি বাসে অনেক যাত্রী ছিল। দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে সবাইকে উদ্ধার করা হয়েছে। ২০ থেকে ২২ জনকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
দুর্ঘটনার বিষয়টি রাইজিংবিডি-কে নিশ্চিত করেছেন শান্তিগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস স্টেশন ইনচার্জ মো.
ঢাকা/মনোয়ার/বকুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক পর বহন সড়ক দ র ঘটন আহত স ন মগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
৯ ঘণ্টা ধরে শাহবাগ অবরোধ, জনভোগান্তি চরমে
জুলাই ঘোষণাপত্র ও জুলাই সনদ বাস্তবায়ন এবং দ্রুত স্থায়ী বিধানে যুক্ত করার দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড় ৯ ঘণ্টা ধরে অবরোধ করে রেখেছেন ‘জুলাই যোদ্ধারা’। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে জুলাই শহীদ পরিবার ও জুলাই যোদ্ধাদের (আহত) ব্যানারে তাঁরা এ ‘অবস্থান কর্মসূচি’ পালন করছেন।
রাজধানীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই মোড় দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এর প্রভাব পড়ে আশপাশের সড়কগুলোতে। এসব সড়কে দিনভর ব্যাপক যানজট তৈরি হয়। ফলে বৃষ্টির মধ্যে জীবনের তাগিদে ঘর থেকে বের হওয়া মানুষদের বেশ ভোগান্তি পোহাতে হয়। বাধ্য হয়ে বিকল্প পথে চলে গণপরিবহন, অনেক যাত্রীকে গন্তব্যে পৌঁছাতে দেখা গেছে হেঁটে হেঁটে। বিশেষ করে অফিসফেরত মানুষকে বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
বেলা ১১টায় শাহবাগ মোড়ের সঙ্গে যুক্ত সব সড়কের মুখ আটকে দিয়ে সড়কের মাঝখানে অবস্থান নেন অবরোধকারীরা। এ সময় তাঁরা জুলাই সনদ দ্রুত বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন দাবি জানান। অবরোধকারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জুলাই যোদ্ধা সংসদ নামে একটি প্ল্যাটফর্ম ওই কর্মসূচির উদ্যোগ নেয়। এ সময় অবরোধকারীরা ‘জুলাই নিয়ে টালবাহানা, চলবে না চলবে না’, ‘জুলাইয়ের চেতনা দিতে হবে ঘোষণা’, ‘জুলাই সনদ দিতে হবে, দিতে হবে, দিতে হবে’ স্লোগান দিতে থাকেন।
বন্ধ হয়ে পড়ে শাহবাগ থেকে ফার্মগেট, সায়েন্স ল্যাব ও গুলিস্তানগামী প্রধান সড়কগুলোও। ফলে সকাল থেকেই এসব এলাকায় যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এসব সড়কে চলাচলকারী গণপরিবহনগুলো বিকল্প পথে চলাচল করে।
বেলা তিনটার দিকে দেখা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ–সংলগ্ন মূল সড়কে পুলিশের ব্যারিকেড ও বাঁশ ব্যবহার করে সড়ক আটকে রেখেছেন অবরোধকারীরা। শাহবাগ থানার সামনের সড়কেও প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেন তাঁরা।
বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা ষাটোর্ধ্ব নূরে আলম বলেন, ‘কেরানীগঞ্জে যাব। কোনো বাস পাচ্ছি না। রিকশায় যে কিছু দূর যাব, তারাও ভাড়া বেশি চাচ্ছে।’ একপর্যায়ে হেঁটেই রওনা দেন তিনি।
এক পথচারী ইমরান হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘দুই দিন পরপর সড়ক অবরোধ হয়। এর ভোগান্তি পোহাতে হয় আমাদের মতো সাধারণ মানুষদের।’
বেলা সাড়ে তিনটার দিকে শাহবাগ থানার সামনে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডা হতে দেখা যায় মোটরবাইক আরোহীদের। শাহবাগ থানার সামনে সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশাকে বাধা দিলে চালক বলেন, ‘এত দাবিদাওয়া এত দিন আছিলো কই।’ তবে গণপরিবহন আটকে দেওয়া হলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যানবাহন এবং তাদের ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচল করতে দেখা গেছে। এ ছাড়া রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স শুরু থেকেই চলাচল করতে দেখা গেছে।
অবরোধকারীদের দাবি
অবরোধকারীদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে জুলাই শহীদ ও জুলাই যোদ্ধাদের স্বীকৃতি; শহীদ পরিবার ও আহতদের আজীবন সম্মান; চিকিৎসা, শিক্ষা ও কল্যাণের পূর্ণ নিশ্চয়তা প্রদান করা; শহীদ পরিবার ও আহতদের প্রতি দায়িত্ব গ্রহণ করা; আহতদের চিকিৎসা, পুনর্বাসন, কর্মসংস্থান ও কল্যাণমূলক ব্যয় রাষ্ট্রকে বহন করা; আহত ও শহীদ পরিবারের জন্য আজীবন সম্মানজনক ভাতা নিশ্চিত করা; শহীদ পরিবার ও আহতদের জন্য বিশেষ আইনি সুরক্ষা ও সহায়তাকেন্দ্র গঠন করা; শহীদ ও আহতদের ওপর সংগঠিত দমন-পীড়নের জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে বিচারকাজ সম্পন্ন করা এবং একটি স্বাধীন সত্য ও ন্যায় কমিশন গঠন করা।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খালিদ মনসুর বলেন, সকাল থেকেই শাহবাগে অবরোধের কারণে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। শাহবাগ থানা-পুলিশ আলোচনার মাধ্যমে অবরোধকারীদের সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন।
তবে জুলাই যোদ্ধা সংসদের মুখ্য সংগঠক মাসুদ রানা জানান, তাঁদের আন্দোলন চলছে। সনদ ঘোষণা না আসা পর্যন্ত তাঁরা এখানেই থাকবেন।