ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে এবং নারী, শিশুসহ সব মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে সমাবেশ করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তাঁরা অবিলম্বে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন।

আজ রোববার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭১–এর গণহত্যা ভাস্কর্যের সামনে ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ফোরাম’ ব্যানারে এই প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ নেন শিক্ষার্থীরা। সমাবেশ শুরুর আগে বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি কলা অনুষদ, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ও বিজ্ঞান অনুষদের চত্বর প্রদক্ষিণ করে শহীদ মিনারের সামনে দিয়ে ৭১–এর গণহত্যা ভাস্কর্যের সামনে এসে শেষ হয়।

মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘বাঁচার মতো বাঁচতে দাও, নইলে গদি ছেড়ে দাও’; ‘আমার বোন ধর্ষিত কেন, ইউনূস সরকার জবাব চাই’; ‘অবিলম্বে ধর্ষকদের গ্রেপ্তার করো, বিচার করো’; এ ধরনের স্লোগান দেন।

প্রতিবাদ সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী শতাব্দীকা উর্মি বলেন, ঘুম থেকে উঠে একের পর এক ধর্ষণ, ছিনতাই, খুনের খবরে দেশের মানুষ আতঙ্কিত। গণ–অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে সরকার ক্ষমতায় এসেছে, তাদের রাষ্ট্র চালনার ধরন দেখে মনে হচ্ছে তারা অভ্যুত্থানের সঙ্গে প্রতারণা করতে চায়। এই সরকারকে অবিলম্বে জনতার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, তা না পারলে ব্যর্থতা স্বীকার করে ক্ষমতা ছাড়ার আহ্বান জানান এই শিক্ষার্থী।

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী ইভান তাহসীব বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানে নারীদের ভূমিকা ছিল সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য। অথচ এখন আমাদেরকে নারীবান্ধব রাষ্ট্রের দাবি তুলতে হচ্ছে।’

নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী কিশোয়ার সাম্য বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে যথেষ্ট সময় পেয়েছে, এবার তাদের দায় নেওয়ার পালা, প্রতিটি ধর্ষণের দায় তাদের নিতে হবে, বিচার নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং ব্যর্থতার দায়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে হবে।

সমাবেশে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম মারুফ ও ছাত্র ইউনিয়নের সংগঠক অরুণাভ আশরাফসহ আরও বেশ কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুনঢাকা-রাজশাহী রুটে চলন্ত বাসে ডাকাতির যে বর্ণনা দিলেন যাত্রীরা২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত

ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স। 

গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’

পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।

হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।

আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।

সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’ 

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’

তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।

রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজায় ইসরায়েলি অভিযানের ‘কঠোরতম ভাষায়’ নিন্দা জানিয়েছে সৌদি আরব
  • যারা জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলকে নিষিদ্ধ চায়, তারা আদালতে অভিযোগ দিতে পারে: সালাহউদ্দিন আহমদ
  • গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যার প্রমাণ পেয়েছে জাতিসংঘের তদন্ত কমিশন
  • হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
  • ‘গাজায় গণহত্যা চলছে, আমি সেই গণহত্যার নিন্দা করছি’