ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ
Published: 23rd, February 2025 GMT
ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে এবং নারী, শিশুসহ সব মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে সমাবেশ করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তাঁরা অবিলম্বে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন।
আজ রোববার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭১–এর গণহত্যা ভাস্কর্যের সামনে ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ফোরাম’ ব্যানারে এই প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ নেন শিক্ষার্থীরা। সমাবেশ শুরুর আগে বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি কলা অনুষদ, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ও বিজ্ঞান অনুষদের চত্বর প্রদক্ষিণ করে শহীদ মিনারের সামনে দিয়ে ৭১–এর গণহত্যা ভাস্কর্যের সামনে এসে শেষ হয়।
মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘বাঁচার মতো বাঁচতে দাও, নইলে গদি ছেড়ে দাও’; ‘আমার বোন ধর্ষিত কেন, ইউনূস সরকার জবাব চাই’; ‘অবিলম্বে ধর্ষকদের গ্রেপ্তার করো, বিচার করো’; এ ধরনের স্লোগান দেন।
প্রতিবাদ সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী শতাব্দীকা উর্মি বলেন, ঘুম থেকে উঠে একের পর এক ধর্ষণ, ছিনতাই, খুনের খবরে দেশের মানুষ আতঙ্কিত। গণ–অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে সরকার ক্ষমতায় এসেছে, তাদের রাষ্ট্র চালনার ধরন দেখে মনে হচ্ছে তারা অভ্যুত্থানের সঙ্গে প্রতারণা করতে চায়। এই সরকারকে অবিলম্বে জনতার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, তা না পারলে ব্যর্থতা স্বীকার করে ক্ষমতা ছাড়ার আহ্বান জানান এই শিক্ষার্থী।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী ইভান তাহসীব বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানে নারীদের ভূমিকা ছিল সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য। অথচ এখন আমাদেরকে নারীবান্ধব রাষ্ট্রের দাবি তুলতে হচ্ছে।’
নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী কিশোয়ার সাম্য বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে যথেষ্ট সময় পেয়েছে, এবার তাদের দায় নেওয়ার পালা, প্রতিটি ধর্ষণের দায় তাদের নিতে হবে, বিচার নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং ব্যর্থতার দায়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে হবে।
সমাবেশে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম মারুফ ও ছাত্র ইউনিয়নের সংগঠক অরুণাভ আশরাফসহ আরও বেশ কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুনঢাকা-রাজশাহী রুটে চলন্ত বাসে ডাকাতির যে বর্ণনা দিলেন যাত্রীরা২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
সুদানে ‘গণহত্যা’ হয়েছে
সুদানের এল-ফাশের শহর ও এর আশপাশের বিভিন্ন স্থানে গণহত্যা চলছে। কৃত্রিম ভূ–উপগ্রহের ছবি বিশ্লেষণ করে ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা এমন দাবি করেছেন। জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেখানকার পরিস্থিতিকে ‘ভয়াবহ’ বলে উল্লেখ করেছেন।
২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে দেশটির আধা সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সসের (আরএসএফ) লড়াই চলছে। গত রোববার তারা এল-ফাশের দখল করে। এর মাধ্যমে প্রায় দেড় বছরের দীর্ঘ অবরোধের পর পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে সেনাবাহিনীর সর্বশেষ শক্ত ঘাঁটিটিও ছিনিয়ে নেয় তারা।
শহরটি পতনের পর থেকে সেখানে বিচারবহির্ভূত হত্যা, যৌন সহিংসতা, ত্রাণকর্মীদের ওপর হামলা, লুটপাট এবং অপহরণের খবর পাওয়া যাচ্ছে। সেখানকার যোগাযোগব্যবস্থা প্রায় সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন।
এল-ফাশের থেকে পালিয়ে পার্শ্ববর্তী তাওইলা শহরে জীবিত বেঁচে ফেরা কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে এএফপির সাংবাদিক কথা বলেছেন। সেখানে গণহত্যা হয়েছে জানিয়ে তাঁরা বলেন, শহরটিতে মা-বাবার সামনেই শিশুদের গুলি করা হয়েছে। প্রাণ বাঁচাতে পালানোর সময় সাধারণ মানুষকে মারধর করে তাঁদের মূল্যবান সামগ্রী লুট করা হয়েছে।
পাঁচ সন্তানের মা হায়াত শহর থেকে পালিয়ে আসা ব্যক্তিদের একজন। তিনি বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে থাকা তরুণদের আসার পথেই আধা সামরিক বাহিনী থামিয়ে দেয়। আমরা জানি না, তাদের কী হয়েছে।’
ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যানিটারিয়ান রিসার্চ ল্যাব বলেছে, গত শুক্রবার পাওয়া কৃত্রিম উপগ্রহের ছবিতে ‘বড় ধরনের কোনো জমায়েত চোখে পড়েনি।’ এ কারণে মনে করা হচ্ছে, সেখানকার জনগণের বড় একটি অংশ হয় ‘মারা গেছে, বন্দী হয়েছে কিংবা লুকিয়ে আছে।’ সেখানে গণহত্যা অব্যাহত থাকার বিভিন্ন ইঙ্গিত স্পষ্টভাবে দেখা গেছে।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, আল-ফাশের থেকে এখন পর্যন্ত ৬৫ হাজারের বেশি মানুষ পালিয়েছে। এখনো কয়েক হাজার মানুষ শহরটিতে আটকা পড়েছে। আরএসএফের সর্বশেষ হামলার আগে সেখানে প্রায় আড়াই লাখ মানুষ বসবাস করত।
শনিবার বাহরাইনে এক সম্মেলনে জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োহান ভাডেফুল বলেন, সুদান একটি ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। সেখানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে। আরএসএফ নাগরিকদের সুরক্ষার অঙ্গীকার করেছিল। কিন্তু তাদের এই কর্মকাণ্ডের জন্য জবাবদিহির মুখোমুখি হতে হবে।