অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ না করায় বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ২
Published: 23rd, February 2025 GMT
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ না করার ঘটনায় নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে দুজন আহত হয়েছেন। আজ রোববার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তবাংলার সামনে এ ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষে আহত হওয়া দুজন হলেন দুমকী উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ইব্রাহিম ও সদস্য মতিউর রহমান দিপু। তাঁদের দুমকী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২৬ ফেব্রুয়ারি পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পালন উপলক্ষে প্রশাসনের সঙ্গে আজ রোববার প্রস্তুতমূলক মতবিনিময় সভা হয়। ওই সভায় কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.
ওই মতবিনিময় সভায় আমন্ত্রণ না করা নিয়ে আলতাফ হোসেন চৌধুরীর সমর্থক ও দুমকী উপজেলা বিএনপির অপর পক্ষের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ইব্রাহিম ও সদস্য মতিউর রহমান আহত হন।
এ বিষয়ে দুমকী উপজেলা বিএনপির সদস্য আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, ‘ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন না করার কারণে হাতাহাতি হয়েছে, আর কিছুই নয়।’
তবে উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. খলিলুর রহমান বলেন, ‘আলতাফ হোসেন চৌধুরী কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান। তাঁর ক্যাম্পাসে আগমন সম্পর্কে আমরা উপজেলা বিএনপি কিছুই জানি না।’
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়েছে কি না, জানতে চাইলে রেজিস্ট্রার ইকতিয়ার উদ্দিন বলেন, ‘আলতাফ হোসেন চৌধুরী রাজনৈতিক ব্যক্তি হিসেবে ক্যাম্পাসে আসেননি, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠালগ্নে অবদান থাকায় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের প্রস্তুতি বৈঠকে তাঁকে আমন্ত্রণ করা হয়েছে। তবে তাঁর উপস্থিতিতে ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি হলে সুস্পষ্ট তথ্য–প্রমাণ এবং অভিযোগের ভিত্তিতে প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।’
গত ১৩ আগস্ট শিক্ষার্থীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এস এম হেমায়েত জাহান স্বাক্ষরিত এক দাপ্তরিক আদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধরনের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আলত ফ হ স ন চ ধ র ব এনপ র স সদস য ম র রহম ন স ঘর ষ উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।
মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।
এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।
প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।
মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।
নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।