ভাষার মাসে চলে গেলেন শহীদ আলতাফ মাহমুদের স্ত্রী
Published: 23rd, February 2025 GMT
‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’— গানের সুরস্রষ্টা আলতাফ মাহমুদের স্ত্রী সারা আরা মাহমুদ মারা গেছেন। রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টা ২৫ মিনিটে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মায়ের মৃত্যুর খবর জানিয়েছেন আলতাফ মাহমুদের কন্যা শাওন মাহমুদ।
মায়ের মৃত্যুর খবর জানিয়ে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন শাওন মাহমুদ। তাতে তিনি লেখেন, “মা নাই। চলে গেছে। শহীদ আলতাফ মাহমুদের স্ত্রী সারা মাহমুদ আজ সন্ধ্যা ৬টা ২৫ মিনিটে ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। ভাষার মাসেই চলে গেলেন তিনি।”
আগামীকাল (২৪ ফেব্রুয়ারি) বাদ জোহর সারা মাহমুদকে রাজধানীর বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে বলে জানিয়েছেন শাওন মাহমুদ।
আরো পড়ুন:
শিরোনামহীনের ‘প্রিয়তমা’ প্রশংসা কুড়াচ্ছে
অ্যাকাপেলায় একুশের গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো’
দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন সারা আরা মাহমুদ। গত ১০ জানুয়ারি রাতে পা পিছলে পড়ে যান তিনি। এতে তার বাম দিকের হিপজয়েন্ট ভেঙে দুই টুকরো হয়ে যায়। বাম পা অকেজো হয়ে যায়। এর কয়েক দিন পরই সারা আরা মাহমুদের অস্ত্রোপচার হয়। সর্বশেষ আর ফেরানো গেল না শহীদ জায়াকে।
বাংলা সংগীত ভুবনে শহীদ আলতাফ মাহমুদ অমর স্রষ্টা। অসংখ্য জনপ্রিয় গানের সুর সৃষ্টির মধ্য দিয়ে বাংলা গানের জগতে অবিস্মরণীয় হয়ে আছেন। বিশেষ করে ভাষা আন্দোলন নিয়ে আব্দুল গাফফার চৌধুরীর লেখা ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কী ভুলিতে পারি’ গানের সুরকার হিসেবে বাঙালির ইতিহাসের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে গেছেন। বায়ান্ন থেকে একাত্তর পর্যন্ত ঢাকার প্রায় প্রতিটি সাংস্কৃতিক মঞ্চ ও জনসমাবেশে আলতাফ মাহমুদ ছিলেন অনিবার্য একটি চরিত্র। মুক্তিযুদ্ধেও তার ছিল বড় ভূমিকা।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।
মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।
এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।
প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।
মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।
নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।