বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির‌ বিভিন্ন দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলন করায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ছাত্রদল ও ছাত্র ইউনিয়নের একাংশ।

রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) শিবিরের সংবাদ সম্মেলনের পর পৃথক বিবৃতিতে এ নিন্দা জানিয়েছে সংগঠন দুটি।

ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক (সহ-সভাপতি পদমর্যাদার) মো.

জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ছাত্রদল জানিয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্র রাজনীতির সূতিকাগার ঐতিহাসিক মধুর ক্যান্টিনের প্রতিষ্ঠাতা স্বত্বাধিকারী মধুসূদন দে (মধুদা) ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ হানাদার বাহিনীর হাতে শহীদ হন।

জামায়াতে ইসলামী এবং ইসলামি ছাত্র সংঘ পাক হানাদার বাহিনীর সহযোগী হয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীনতাবিরোধী ভূমিকা পালন করে। শহীদ মধুদার হত্যাকাণ্ডের নৈতিক দায় জামায়াতে ইসলামী, তাদের ছাত্রসংগঠন ইসলামি ছাত্রসংঘকে (পরবর্তীতে ইসলামি ছাত্রশিবির নামে পরিচিত) নিতে হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, মধুর ক্যান্টিনে স্বাধীনতাবিরোধী সংগঠন জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ইসলামি ছাত্রশিবিরের সংবাদ সম্মেলন শহীদ মধুদার প্রতি এবং তার পরিবারের প্রতি অসম্মানজনক। ছাত্রদল মধুর ক্যান্টিনে ছাত্রশিবিরের সংবাদ সম্মেলন আয়োজনের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে।

ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব এবং সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির আজ এক বিবৃতিতে বলেন, শহীদের নিজের আঙিনায় খুনির সহযোগীদের বিচরণ খুবই ন্যাক্কারজনক ঘটনা। অনুতাপ এবং বিবেকবোধ থেকেই ছাত্রশিবিরের মধুর ক্যান্টিনে আসা উচিত নয়। মধুর ক্যান্টিনে ছাত্রশিবিরের উপস্থিতি মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে কলঙ্কিত করবে।

অন্যদিকে, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের দপ্তর সম্পাদক মাহের খান আদর স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঢাবির মধুর ক্যান্টিনে ইসলামী ছাত্রশিবিরের সংবাদ সম্মেলনের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন। আজ মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে ছাত্রশিবির।

মধুর ক্যান্টিনের সত্ত্বাধিকারী মধুসুদন দে'র (মধুদা) হত্যাকারীদের রাজনৈতিক উত্তরাধিকার ইসলামী ছাত্র শিবির। ১৯৭১ সালে ২৫ মার্চ মধু দা’কে হত্যা করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। সেই ঘাতকদের রাজনৈতিক উত্তরাধিকার ইসলামী ছাত্রশিবির মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলন করে যে ধৃষ্টতা দেখিয়েছে, তা স্বাধীনতাকামী ও প্রগতিশীল ছাত্র-জনতা মেনে নেবে না।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি মাহির শাহরিয়ার রেজা এবং সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন শুভএক যৌথ বিবৃতিতে মধুর ক্যান্টিনে ইসলামী ছাত্র শিবিরের সংবাদ সম্মেলনের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।

নেতৃবৃন্দ বলেন, মধু দা’র হত্যাকারী পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর রাজনৈতিক উত্তরাধিকার ছাত্রশিবিরের মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলন আয়োজন স্বাধীনতাকামী ও প্রগতিশীল ছাত্র-জনতার জন্য লজ্জার। আমরা মধুর ক্যান্টিনে শিবিরের সংবাদ সম্মেলন আয়োজনের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

তারা বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যাকারী সংগঠন ইসলামী ছাত্র সংঘের সরাসরি উত্তরাধিকার ইসলামী ছাত্রশিবির মুক্তিযুদ্ধে আলবদর, আল শামস, রাজাকার বাহিনী গঠন করে গণহত্যা চালিয়েছে। আজো জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্র শিবির তাদের ঘৃণ্য অপরাধের জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চায়নি। আমরা শিবিরকে বয়কট করতে আপামর ছাত্র-জনতাকে আহ্বান জানাচ্ছি।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত র ইউন র র জন ত ছ ত রদল ইসল ম স গঠন

এছাড়াও পড়ুন:

হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত

ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স। 

গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’

পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।

হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।

আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।

সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’ 

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’

তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।

রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজায় নিহতের সংখ্যা ৬৫ হাজার ছাড়াল
  • গাজায় ইসরায়েলি অভিযানের ‘কঠোরতম ভাষায়’ নিন্দা জানিয়েছে সৌদি আরব
  • যারা জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলকে নিষিদ্ধ চায়, তারা আদালতে অভিযোগ দিতে পারে: সালাহউদ্দিন আহমদ
  • শিবিরের এই সাফল্য জাতীয় নির্বাচনে জামায়াতকে সুবিধা দেবে কি?
  • গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যার প্রমাণ পেয়েছে জাতিসংঘের তদন্ত কমিশন
  • হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
  • ‘গাজায় গণহত্যা চলছে, আমি সেই গণহত্যার নিন্দা করছি’