মুসলিম ‘গণহত্যার’ জন্য ক্ষমা চাইলেন থাইল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী
Published: 24th, February 2025 GMT
মুসলিমদের ওপর গণহত্যা চালানোর ঘটনায় ক্ষমা চেয়েছেন থাইল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রা। ‘তাক বাই গণহত্যা’ নামে পরিচিত এই ঘটনার জন্য এবারই প্রথম জনসমক্ষে ক্ষমাপ্রার্থনা করলেন তিনি। সেই ঘটনায় সাত সন্দেহভাজনের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ বাদ দেওয়ার প্রায় চার মাস পরে এই ক্ষমাপ্রার্থনা সামনে এলো। খবর এএফপির।
খবরে বলা হয়েছে, গণহত্যার সময় থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন থাকসিন সিনাওয়াত্রা। সাবেক এই সরকারপ্রধান বলেছেন, তিনি এমন যে কোনও কাজের জন্য ক্ষমা চান; যা মানুষকে ‘অস্বস্তি বোধ করাতে পারে’। ‘ডিপ সাউথ’ নামে পরিচিত এই থাইল্যান্ডের এই এলাকায় গত ১৯ বছরের মধ্যে প্রথম সফরের সময় গণহত্যা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলাম, তখন স্থানীয় মানুষের দিকে খেয়াল রাখাই ছিল আমার প্রধান উদ্দেশ্য। যদি আমার দ্বারা কোনও ভুল বা কোনও অসন্তোষ সৃষ্টি হয়ে থাকে, তাহলে আমি ক্ষমা চাইতে চাই।’
উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের ২৫ অক্টোবর থাইল্যান্ডের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকা দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর তাক বাই শহরে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। সেসময় নিরাপত্তা বাহিনী মালয়েশিয়ার সীমান্তের কাছে নারাথিওয়াত প্রদেশের তাক বাই শহরে একটি থানার বাইরে বিক্ষোভরত জনতার ওপর গুলি চালায়, এতে সাতজন নিহত হয়। পরবর্তীতে আটককৃত ৭৮ জনকে হাত-পা বেঁধে সামরিক ট্রাকের পেছনে ঠাসাঠাসি করে নেওয়ার সময় শ্বাসরুদ্ধ হয়ে তাদের মৃত্যু হয়। সেসময় এটি ‘তাক বাই গণহত্যা’ নামে পরিচিত হয় এবং এতে তৎকালীন সময়ে বিশ্বজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ