পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে আ’লীগ নেতাকে ছিনিয়ে নিল সমর্থকরা
Published: 24th, February 2025 GMT
পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে হেলাল খান নামে এক আওয়ামী লীগ নেতা ও নাশকতা মামলার আসামিকে ছিনিয়ে নিয়েছে তার সমর্থক ও স্বজনরা। সোমবার দুপুরে উপজেলার ঢেপসাবুনিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। ছিনিয়ে নেওয়া আসামি হেলাল খান উপজেলার বালিপাড়া ইউনিয়নের একটি ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
এ ঘটনায় পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে মজনু নায়েব ও ইদ্রিস নায়েব নামে দুই ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। আটক ব্যক্তিরা উপজেলার বালিপাড়া ইউনিয়নের ঢেপসাবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার দুপুরে একটি জিয়াফত অনুষ্ঠানে স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা হেলাল খানের উপস্থিতির খবর পেয়ে ইন্দুরকানী থানা পুলিশের একটি দল তাকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় হেলাল খানের সহযোগী আওয়ামী সমর্থক ও স্বজনরা তাকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়। আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার সময় তারা পুলিশের সঙ্গে হাতাহাতিতে লিপ্ত হয়। পরে পুলিশ দু’জনকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করে। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, গত ৫ আগস্টের পর ঘোষেরহাট বাজারে বিএনপির মিছিলে হামলা ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় দায়ের করা মামলার অন্যতম আসামি হেলাল খান। বাদীপক্ষের অভিযোগ, হেলাল খান এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরলেও পুলিশ তাকে আটক করছে না।
ইন্দুরকানী থানার ওসি মো.
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
গাইবান্ধায় চোর সন্দেহে মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় তিস্তা নদীর দুর্গম চরাঞ্চলে গরু চোর সন্দেহে আব্দুস সালাম (৫০) নামে মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করেছে স্থানীয়রা। এ ঘটনায় দুলালী বেগম (৪৩) নামে এক নারীকে আটক করেছে পুলিশ।
শনিবার (১ নভেম্বর) সকালে উপজেলার বেলকা ইউনিয়নের বেলকা নবাবগঞ্জ গ্রামের তিস্তার চরে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। খবর পেয়ে সুন্দরগঞ্জ থানা পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
আরো পড়ুন:
গাজীপুরে যুবককে কুপিয়ে হত্যা
ঝিনাইদহে কৃষকের হাত-পা ও গলা বাঁধা মরদেহ উদ্ধার
নিহত আব্দুস সালাম একই ইউনিয়নের রামডাকুয়া গ্রামের ওমেদ আলীর ছেলে। স্বজনরা জানান, সালাম দীর্ঘদিন ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছিল।
আটক দুলালী বেগম বেলকা নবাবগঞ্জ গ্রামের আব্দুল গণি মিয়ার স্ত্রী।
সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হাকিম আজাদ বলেন, ‘‘খবর পাওয়ার পর পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার দুলালী বেগম ছাড়াও যারা জড়িত ছিল, তা শনাক্তে তদন্ত চলছে।’’
নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) গভীর রাতে সালাম আব্দুল গণি মিয়ার গোয়ালঘরে প্রবেশ করে। বিষয়টি টের পেয়ে দুলালী বেগম স্বামী ও আশপাশের লোকজনকে খবর দেয়। স্থানীয়রা সালামকে রশি দিয়ে বেঁধে বেধড়ক মারধর করে। একপর্যায়ে তিনি অচেতন হয়ে পড়লে তাকে পুকুরপাড়ে রেখে দেওয়া হয়। ভোরের দিকে আবার তাকে পাশের গোয়ালঘরে নিয়ে নির্যাতন চালানো হয়। এতে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়।
অভিযুক্ত আব্দুল গণি মিয়া বলেন, ‘‘কয়েক দিন আগে শ্যালো মেশিন চুরি হয়ে গেছে। রাতে গোয়ালে সালামকে দেখি। তাই প্রতিবেশীদের খবর দেই। পরে তারা এসে মারধর করে।’’
আটক দুলালী বেগম বলেন, ‘‘এক সপ্তাহ আগে মেশিন হারিয়েছে। রাতে শব্দ শুনে দেখি গোয়ালের বাঁধন খুলছে। পরে লোকজন এসে মারধর করে।’’
নিহতের স্বজনরা জানান, আব্দুস সালাম দীর্ঘদিন ধরে মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন ছিলেন এবং মানুষের সাহায্যে জীবন চলত। তার বিরুদ্ধে আগে কখনো চুরির অভিযোগ ওঠেনি। তারা দাবি করেন, পরিকল্পিতভাবে নির্যাতন করে তাকে হত্যা করা হয়েছে। নিহতের তিনটি ছোট ছেলে রয়েছে, বাবাকে হারিয়ে তারা অসহায় অবস্থায় পড়েছে।
বেলকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইব্রাহিম খলিলুল্যাহ জানান, ঘটনাস্থল দুর্গম চরাঞ্চল হওয়ায় খবর পেতে দেরি হয়। স্বজনদের বক্তব্য অনুযায়ী নিহত ব্যক্তি মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) বিদ্রোহ কুমার কুণ্ডু, সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি আব্দুল হাকিম আজাদ এবং স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
ঢাকা/মাসুম/বকুল