রিয়াল সোসিয়েদাদ দর্শকদের ‘অসহিষ্ণু আচরণ’ এমন পর্যায়ে চলে গিয়েছিল যে, রেফারি বাধ্য হলেন খেলা থামাতে। স্টেডিয়ামের বড় পর্দায় ভেসে উঠল একটি বার্তা, “বর্ণবাদী, জাতিগত–বিদ্বেষী ও অসহিষ্ণু স্লোগান দেওয়া যাবে না। দলকে সমর্থন দিন, প্রতিপক্ষকে সম্মান করুন।” স্বাগতিক দর্শকরা মূলত প্রতিপক্ষ রিয়াল মাদ্রিদের তরুণ ডিফেন্ডার রাউল আসেনসিওকে উদ্দেশ্য করে স্লোগান তুলেছিল, “আসেনসিও মরো”। এই হট্টগোলের মাঝেই অবশ্য বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) দিবাগত রাতে কোপা দেল রে’র সেমিফাইনালের প্রথম লেগে সোসিয়েদাদকে ১-০ ব্যবধানে পরাজিত করেছে রিয়াল।

রিয়ালের ২২ বছর বয়সী ডিফেন্ডার আসেনসিওর বিরুদ্ধে দর্শকদের ক্ষেপে উঠে মূলত, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটা ভিডিও শেয়ার দেওয়ায়। রিয়ালের বয়সভিত্তিক দলের দুজন খেলোয়াড় কিছুদিন আগে অপ্রাপ্তবয়স্ক এক মেয়ের আপত্তিকর ভিডিও করেছিলেন। সেটাই নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করেন আসেনসিও। সেই অভিযোগে আসেনসিওর বিরুদ্ধে মামলা এবং তদন্তও চলছে।

আরো পড়ুন:

দুই গোলে এগিয়ে থেকেও বার্সার ড্র

দিস ইজ নট ফুটবল, দিস ইজ লা লিগা! 

এদিকে সোসিয়েদাদের ঘরের মাঠ রিয়াল অ্যারেনায়, ম্যাচের ১৯ মিনিটে প্রতি–আক্রমণ থেকে মাদ্রিদের হয়ে গোল করেন ১৮ বছর বয়সী স্ট্রাইকার এনদ্রিক। জুড বেলিংহ্যামের দুর্দান্ত দূরপাল্লার পাস উরু দিয়ে থামিয়ে দার্শনীয় ফিনিশিংয়ে বল জালে জড়ান রিয়ালের উঠতি তারকা। এই ব্রাজিলিয়ান তারকার একমাত্র গোলটাই প্রথম লেগের পার্থক্য গড়ে দেয় দুদলের মাঝে। এনদ্রিক এই নিয়ে কোপা দেল রে’তে টানা তৃতীয় ম্যাচে গোল করলেন। ম্যাচ শেষে তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেন রিয়াল বস কার্লো আনচেলত্তি।

তারকায় ঠাসা রিয়ালের আক্রমণভাগের কারণে লা লিগায় ও চ্যাম্পিয়নস লিগে খুব একটা সুযোগ হয় না এনদ্রিকের। সে কারণে তাকে কোপা দেল রের দিকেই তাকিয়ে থাকতে হয়। সংবাদ সম্মেলনে রিয়াল কোচ আনচেলত্তি বলেন, “সে দুর্দান্ত ও নান্দনিক। যখনই সুযোগ পেয়েছে, নিজের অসাধারণ দিকগুলো সে মেলে ধরেছে। তার নিশানা দারুণ, খুবই গতিময় সে। বল পায়ে অবশ্য এখনও অনেক উন্নতি করার জায়গা আছে। তবে তার ড্রিবলিং, দৌড়, পায়ে যে শট আছে, ওহ, দুর্দান্ত।”

ঢাকা/নাভিদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স প য ন শ ফ টবল

এছাড়াও পড়ুন:

ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে গুরুত্ব আরোপ

কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কার্যত সামরিক সংঘাতে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে। এ পরস্থিতিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে ফোন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। বুধবার দুজনকে করা এ ফোন কলে তিনি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া উত্তেজনা কমানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এছাড়া দুই 

ফোনালাপের বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে দেওয়া পৃথক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় মার্কো রুবিও বলেন, তিনি পেহেলগাম হামলায় নিহতদের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছেন এবং যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। 

তবে তিনি আরও বলেন, ভারত যেন পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করার আগে সতর্ক থাকে, কারণ এখনও পর্যন্ত ভারত এই হামলায় পাকিস্তানের সম্পৃক্ততার কোনও প্রমাণ প্রকাশ করেনি।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক বিবৃতিতে বলেছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণহানির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে সহযোগিতার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তেজনা কমাতে এবং শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে ভারতকে পাকিস্তানের সঙ্গে কাজ করার জন্য বলেছেন।

পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে ফোনালাপে রুবিও- ২২ এপ্রিল ভারত-শাসিত কাশ্মীরের পর্যটন কেন্দ্র পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন।

তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, রুবিও এই অযৌক্তিক হামলার তদন্তে পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন।

জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ বলেন, ভারতের উস্কানিমূলক আচরণ শুধু উত্তেজনাই বাড়াচ্ছে এবং পাকিস্তানের সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টাকে বিভ্রান্ত করছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানান, যেন তারা ভারতের ওপর দায়িত্বশীল আচরণ ও ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করতে চাপ প্রয়োগ করে।

এর আগে গত ২২ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকেলে কাশ্মীরের পেহেলগাম জেলার বৈসরণ তৃণভূমিতে বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হন, যাদের প্রায় সবাই পর্যটক। হামলার দায় স্বীকার করে রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট নামে একটি সংগঠন। এটিকে পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়্যেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে মনে করা হয়।

এ ঘটনায় আরও বেশ কয়েকজনকে আহত হন। যাদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, তারা সবাই পুরুষ। বস্তুত, ২২ এপ্রিলের হামলা ছিল ২০১৯ সালের পুলোয়ামা হামলার পর জম্মু ও কাশ্মীরে সবচেয়ে বড় প্রাণঘাতী হামলা। বর্তমানে এ ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

পেহেলগামের ভয়াবহ ওই হামলার জেরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। দুই দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে ভারত। জবাবে সিমলা চুক্তি স্থগিত ও ভারতীয় বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দেয় পাকিস্তান।

তাছাড়া, হামলার পরে দুই দেশই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেশী দেশের নাগরিকদের ভিসা বাতিল করে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। সূত্র-এএফপি 

সম্পর্কিত নিবন্ধ