পবিত্র রমজান শুরু হতে আর দুই–তিন দিন বাকি। তবে এর মধে৵ই বাজারে বেড়েছে লেবু, বেগুন ও শসার দাম। সাধারণত রোজার সময় এসব পণ্যের চাহিদা বেশি থাকে। তবে খেজুর, ছোলা, চিড়া, মুড়ি, গুড় প্রভৃতি পণ্যের দাম এখনো বাড়েনি। আগের দামেই স্থিতিশীল রয়েছে এসব পণ্য।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর শেওড়াপাড়া, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট ও টাউন হল বাজার ঘুরে ‘রোজার পণ্যে’র দরদামের এমন চিত্র দেখা গেছে।

ইফতারের সময় লেবুর শরবতের বেশ চাহিদা থাকে। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দুই সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় দ্বিগুণ দামে লেবু বিক্রি হচ্ছে। দুই সপ্তাহ আগে এলাচি লেবুর হালি ছিল ২০ থেকে ৪০ টাকা। এখন ৪০ থেকে ৫০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে না। সিলেটের শরবতি লেবুর দাম প্রতি হালি ১০০-১২০ টাকা। আর প্রতি হালি কাগজি লেবুর দাম ৭০-৮০ টাকা।

বিক্রেতারা বলছেন, রোজার কারণে হঠাৎ বাজারে লেবুর চাহিদা অনেক বেড়েছে; কিন্তু সে তুলনায় লেবুর সরবরাহ আসছে না। এ কারণে দাম বেড়েছে। এখন অবশ্য লেবুর মৌসুম নয়।

লেবুর পাশাপাশি মাল্টার দামও কেজিতে ১৫-২০ টাকা করে বেড়েছে। আজ বিভিন্ন বাজারে এক কেজি মাল্টা ২৫০-২৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ইফতারের সময় খাওয়া হয় এমন অন্যান্য ফলের দামও কেজিতে ১০-৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

ইফতারের সময় বহুল ব্যবহৃত দুটি পণ্য—বেগুন ও শসার দামও কিছুটা বাড়তি। আজ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি বেগুন ৪৫ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে হাইব্রিড শসা ৫০-৬০ টাকা ও দেশি শসা ৮০-১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। সপ্তাহখানেক আগে বেগুন ও শসার দাম কেজিতে ১০-২০ টাকা করে কম ছিল।

তবে বাজারে স্থিতিশীল রয়েছে খেজুর, ছোলা, চিড়া, মুড়ি, গুড় প্রভৃতি পণ্যের দাম। আগের বছরগুলোতে রোজার শুরুতে খেজুর, ছোলা প্রভৃতির দামে কিছুটা বাড়তি প্রবণতা দেখা যেত। তবে এবার ব্যতিক্রম। এর কারণ, এ বছর রমজানের আগে সরকার খেজুর আমদানিতে শুল্ক-কর কমিয়েছে; যার ফলে বেড়েছে আমদানি। ব্যবসায়ীরা জানান, গত এক মাসের মধ্যে মানভেদে খেজুরের দাম কেজিতে ২০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত দাম কমেছে। যেমন বর্তমানে প্রতি কেজি জায়েদি খেজুর ২২০-৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত বছর ৩০০-৪৫০ টাকা ছিল। এ ছাড়া সাধারণ মানের মাবরুম খেজুর ১২০০-১৩০০ টাকা, আজওয়া ৭০০-৮০০ টাকা, মেডজুল ৯০০-৯৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে ছোলার দামও আগের তুলনায় কমেছে। এক মাস আগে এক কেজি ছোলার দাম ছিল ১৩০ টাকা। আজ প্রতি কেজি ছোলা ১০৫ থেকে ১১৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। এ ছাড়া চিড়া, মুড়ি, গুড় প্রভৃতি পণ্যের দাম আগের মতোই রয়েছে। মানভেদে প্রতি কেজি চিড়া ৭০-৮০ টাকা, আখের গুড় ১৪০-১৮০ টাকা, খেজুর গুড় ২৫০-৩০০ টাকা ও মুড়ি ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ৮০ ট ক র সময়

এছাড়াও পড়ুন:

প্রেম ছিল না তবু কেন মধুবালাকে বিয়ে করেছিলেন কিশোর কুমার

দিলীপ কুমারের সঙ্গে বিচ্ছেদের কিছুদিন পরই কিশোর কুমারকে বিয়ে করেন অভিনেত্রী মধুবালা। তবে তখন তিনি ছিলেন অসুস্থ। কিশোর কুমার জানিয়েছিলেন, ভালোবাসা থেকে নয়, বরং কথা রাখতেই তিনি এ বিয়ে করেছিলেন।
মধুবালা ও দিলীপ কুমারের প্রেম নিয়ে একসময় মুখর ছিল মুম্বাই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। কিন্তু অভিনেত্রীর বাবার বাধার কারণে সে সম্পর্কে ফাটল ধরে এবং দুজনের বিচ্ছেদ ঘটে। কিছুদিন পরেই কিশোর কুমারকে বিয়ে করেন মধুবালা। তাঁদের এই বিয়ে অনেককে চমকে দিয়েছিল। কারণ, তাঁদের প্রেমের কথা তখনো গোপন ছিল। তবে মধুবালার শরীর তখন ভালো যাচ্ছিল না। বলা হয়, দীর্ঘ রোগভোগের সময় কিশোর কুমার তাঁকে মায়ের বাড়িতে রেখেই চলে যান।

দ্য ইলাস্ট্রেটেড উইকলি অব ইন্ডিয়াকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কিশোর কুমার বলেছিলেন, ‘বিয়ের আগেই জানতাম, ও খুব অসুস্থ। কিন্তু কথা তো দিয়েছিলাম। তাই সে কথা রেখেই ওকে ঘরে এনেছিলাম স্ত্রী হিসেবে। জানতাম, ওর জন্মগত হৃদ্‌রোগ আছে। তবু ৯ বছর ধরে সেবা করেছি। চোখের সামনেই ওকে মরতে দেখেছি। কেউ বুঝবে না এর যন্ত্রণা, না ভুগলে। ও অসম্ভব সুন্দরী ছিল। আর কত যন্ত্রণায় মারা গেছে, সেটা চোখে না দেখলে বিশ্বাস হবে না। হতাশায় চিৎকার করত, কান্নাকাটি করত। এত প্রাণোচ্ছল মানুষ নয়টা বছর বিছানায় শুয়ে থাকবে—এ কল্পনাই করা যায় না। ডাক্তার বলেছিল, ওকে হাসিখুশি রাখতে হবে। আমি তা–ই করেছি—ওর শেষনিশ্বাস পর্যন্ত। কখনো হেসেছি, কখনো কেঁদেছি ওর সঙ্গে।’

তবে কিশোর কুমারের এই বক্তব্য নিয়ে সংশয় তৈরি হয়। কারণ, পরে ফিল্মফেয়ার সাময়িকীতে দেওয়া সাক্ষাৎকারে একেবারে ভিন্ন কথা বলেন তিনি। সেই সাক্ষাৎকারে কিশোর কুমার বলেন, ‘মধুবালার সঙ্গে আমি প্রেমে পড়িনি কখনো। বরং ওর প্রেমিক ছিল আমার বন্ধু দিলীপ কুমার। আমি তো শুধু ওদের বার্তা পৌঁছে দিতাম। বিয়ের প্রস্তাবটা দিয়েছিল মধুবালাই। এমনকি, যখন আমার প্রথম স্ত্রী রুমা তখনো আমার সঙ্গে ছিল, তখনো মধু বলত, “ওকে কখনো ছেড়ো না, না হলে আমি তোমার হয়ে যাব।”’

আরও পড়ুনকিশোর কুমার কি সত্যিই ঘরে কঙ্কাল আর মাথার খুলি নিয়ে ঘুমাতেন২৭ মে ২০২৫

মধুবালার পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, চিকিৎসকেরা তখন বলেছিলেন, অভিনেত্রীর পক্ষে শারীরিক সম্পর্ক কিংবা সন্তানধারণ কোনো কিছুই সম্ভব নয়। সেই বাস্তবতা হয়তো প্রভাব ফেলেছিল কিশোরের সিদ্ধান্তে। এক ঘনিষ্ঠজন বলেন, ‘আমরা বলছি না কিশোরদা ভুল করেছিলেন। ডাক্তার তো স্পষ্ট বলেছিল—শারীরিক সম্পর্ক বা সন্তান কোনোটাই সম্ভব নয়। তবে একজন নারীর তো মানসিক সঙ্গীও দরকার হয়।’
ওই ঘনিষ্ঠজন আরও জানান, কিশোর কুমার তিন মাসে একবার আসতেন মাত্র। বলতেন, ‘আমি এলে তুমি কাঁদবে, আর এতে তোমার হৃদ্‌যন্ত্রের ক্ষতি হবে। তুমি বিষণ্ন হয়ে পড়বে।’ সে সময় মধু অনেক ছোট ছিলেন, ঈর্ষাও ছিল স্বাভাবিক। হয়তো এ দূরত্বই ধীরে ধীরে তাঁকে শেষ করে দিয়েছিল।
১৯৬৯ সালে মাত্র ৩৬ বছর বয়সে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান বলিউড অভিনেত্রী মধুবালা

সম্পর্কিত নিবন্ধ