আল মাহমুদের বাড়িতে জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করবে সরকার: ফারুকী
Published: 27th, February 2025 GMT
কবি আল মাহমুদের গ্রমের বাড়িতে জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করা হবে ঘোষণা দিয়েছেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরওয়ার ফারুকী।
তিনি বলেছেন, “কবি আল মাহমুদ বাংলা সাহিত্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তার রচনা, বাড়ি, স্মৃতি- আগামী প্রজন্মের জন্য রাখা ও ছড়িয়ে দেওয়া জরুরি। পরিবারের সম্মতি পেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কবি আল মাহমুদের বাড়ি সংরক্ষণ ও স্মৃতি জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করা হবে। এ বিষয়ে আমাদের আগ্রহ আছে। গণ অভ্যুত্থান পরবর্তী সরকার এ কাজটি গুরুত্ব দিয়ে করবে।”
বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে কবি আল মাহমুদের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে কালের কলসের আয়োজনে ‘বিপ্লব বসন্তে আল মাহমুদ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
সংস্কৃতি উপদেষ্টা বলেন, “কলকাতার হেজিমনির মধ্যে লেখালেখি শুরু করেছিলেন আল মাহমুদ। চার দশক ধরে আল মাহমুদকে নিয়ে সাংস্কৃতিক আধিপত্যবাদীদের কথিত মেইন স্ট্রিম সাহিত্যে উঠতে না দেওয়ার পেছনে ছিল রাজনীতি। আল মাহমুদ কোন রাজনৈতিক দলের নন, তিনি পুরো বাংলা ভাষার লেখক।”
কবি আবদুল হাই শিকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি কবি ও বুদ্ধজীবী ফরহাদ মজহার বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আল মাহমুদ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্তমূলকভাবে হাজির হয়েছে। তার চিন্তা ছড়িয়ে দিতে হবে। জুলাই আন্দোলনে প্রমাণ হয়েছে, আমরা ঘুমিয়ে নেই। জেগে আছি, দেশের যেকোন সংকট মোকাবিলা করব সম্মিলিতভাবে। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়কে শক্তিশালী করলে আমাদের এমন কাজগুলো সহজ হবে।”
তিনি বলেন, “২৪ এর বিপ্লব যেন বেহাত না হয়, এজন্য সাংস্কৃতিক লড়াই অবধারিত। এ লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিতে হবে শিল্পী, কবি ও সংস্কৃতিকর্মীদের।
এ সময় অন্যদের মাঝে বক্তব্য দেন, একুশে পদকজয়ী আলোকচিত্রী নাসির আলী মামুন, জাতীয় কবিতা পরিষদের যুগ্ম-সম্পাদক কবি শাহীন রেজা, কবি জাকির আবু জাফর, ড.
অনুষ্ঠানে আল মাহমুদের গান পরিবেশন করেন শিল্পী আমিরুল মোমেনিন মানিক ও জান্নাতুন নাঈম পিংকী। কবিতা আবৃত্তি করেন শিমুল পারভীন, কামরুল হাসান জুয়েল, মুক্তা বরমন, ফারাহ দোলন, কঠোর হাসান, মুসা আখন্দ, এম. তারেক হাসিব, মনিরুজ্জামান পলাশসহ অনেকে।
কবি ও আবৃত্তি শিল্পী শাকিল মাহমুদ ও মুশফিকা নিপার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই বিপ্লবে শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় ফাতেহা পাঠ ও এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
আল মাহমুদ ১৯৩৬ সালের ১১ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মোড়াইল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।তার পিতৃপ্রদত্ত নাম মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ। আল মাহমুদ নামে অধিক পরিচিত ছিলেন আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম এ প্রধান কবি। তিনি একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক, ছোটগল্প লেখক, শিশুসাহিত্যিক এবং সাংবাদিক ছিলেন।
বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়াংশে সক্রিয় থেকে তিনি আধুনিক বাংলা কবিতাকে নতুন আঙ্গিকে, চেতনায় ও বাকভঙ্গীতে বিশেষভাবে সমৃদ্ধ করেছেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন প্রবাসী সরকারের দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা-পরবর্তীকালে প্রতিষ্ঠিত সরকারবিরোধী সংবাদপত্র দৈনিক গণকণ্ঠের (১৯৭২-১৯৭৪) সম্পাদক ছিলেন।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অন ষ ঠ ন সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনের পরবর্তী শুনানি বুধবার
রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের (রিভিউ) ওপর পরবর্তী শুনানির জন্য আগামীকাল বুধবার দিন রেখেছেন আপিল বিভাগ। আজ মঙ্গলবার শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের বেঞ্চ পরবর্তী ওই দিন ধার্য করেন।
এর আগে গত ১৮ মে শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ শুনানির জন্য ১ জুলাই দিন ধার্য করেছিলেন। ধার্য তারিখে বিষয়টি শুনানির জন্য রিভিউ আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবীর সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ ১৫ জুলাই পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন। আজ বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকার ৭ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।
ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স সংশোধন করে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। পরে ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। রায়ে রাষ্ট্রের সাংবিধানিক পদধারীদের পদক্রম ওপরের দিকে রাখা ও অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়। পাশাপাশি জেলা জজদের পদক্রম আট ধাপ উন্নীত করে সচিবদের সমান করা হয়।
আপিল বিভাগের রায়ের পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতির পদক্রম এক ধাপ উন্নীত করে জাতীয় সংসদের স্পিকারের সমান এবং রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের (স্বাধীনতা পুরস্কার, একুশে পদক ও মহান স্বাধীনতাসংগ্রামে অংশগ্রহণ করে যে মুক্তিযোদ্ধারা বীর উত্তম খেতাব পেয়েছেন) পদক্রমে যথাযথভাবে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত বলে উল্লেখ করা হয়।
ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) তৎকালীন চেয়ারম্যান ২০১৭ সালে পৃথক আবেদন করেন। রিভিউ আবেদনে রাষ্ট্রের ৯০ জন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল পক্ষভুক্ত হন। পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের ওপর গত ২৭ এপ্রিল শুনানি শুরু হয়।
আজ আদালতে রিভিউ আবেদনকারী মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন শুনানি করেন। রিট আবেদনকারী পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম শুনানিতে অংশ নেন।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী, ১৯৮৬ সালে ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরি করে। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর একই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর তা জারি করা হয়। পরে বিভিন্ন সময়ে তা সংশোধন করা হয়।
সর্বশেষ সংশোধন করা হয় ২০০৩ সালের ডিসেম্বরে। সংশোধিত এই ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরির ক্ষেত্রে সাংবিধানিক পদ, সংবিধান কর্তৃক স্বীকৃত ও সংজ্ঞায়িত পদগুলো প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিচের ক্রমিকে রাখা হয়েছে—এমন উল্লেখ করে এর বৈধতা নিয়ে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের তৎকালীন মহাসচিব মো. আতাউর রহমান ২০০৬ সালে রিট করেন।
রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট আট দফা নির্দেশনাসহ ১৯৮৬ সালের ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স (সংশোধিত) অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ২০১১ সালে আপিল করে। এ আপিলের ওপর শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ২০১৭ সালে করা আবেদনের ওপর শুনানি চলছে।