বাংলাদেশে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তায় বিদেশি বিনিয়োগ ও বাণিজ্যে প্রভাব ফেলছে। ফলে ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগ থামিয়ে রেখেছেন বলে মনে করেন ঢাকায় নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়াং-সিক।

বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে ঢাকায় ওভারসিজ করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ওকাব) আয়োজিত মিট দ্য ওকাব অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

এক প্রশ্নের উত্তরে দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে রয়েছে। যখনই আমি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলি, সমস্যাটা দেখি, তাঁরা বিনিয়োগ থামিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন। দেখি কী হয়—অবস্থায় আছেন তাঁরা।’ তিনি বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তা দুই দেশের জন্য সমস্যা তৈরি করছে। রাজনৈতিক বিষয়ের মীমাংসা হওয়া প্রয়োজন।

বাংলাদেশের মতো দক্ষিণ কোরিয়ায়ও রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রসঙ্গ টেনে এক প্রশ্নের উত্তরে পার্ক ইয়াং-সিক বলেন, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টকে অভিশংসন করা হয়েছে। অভিশংসন টিকবে কি টিকবে না, তা আদালতে রায়ের অপেক্ষায় আছে। তবে যথাযথ অভ্যন্তরীণ বন্দোবস্ত, বৈদেশিক বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ থাকার কারণে কোরিয়ার ক্ষেত্রে অত বেশি সমস্যা হবে না। একক পণ্যে নির্ভরতার ফলে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি অত বেশি না হওয়া এবং বৈদেশিক কর্মসংস্থান কমার প্রেক্ষাপটে দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশকে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের চেষ্টা চালানোর পরামর্শ দেন এই রাষ্ট্রদূত।

পার্ক ইয়াং-সিক বলেন, বঙ্গোপসাগর উপকূলে থাকা এবং নবম শীর্ষ ভোক্তা বাজার হওয়ায় বাংলাদেশে বিনিয়োগ আসবে বলে বিদেশিরা ‘লিপ সার্ভিস’ দেয়, সেটাতে অত মনোযোগ দেওয়ার দরকার নেই। বাংলাদেশ চীন ও মধ্যপ্রাচ্য থেকে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ আনার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাতে হবে।

দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত বলেন, ১৯৭৩ সালের পর থেকে কোরিয়ার ১১১টি কোম্পানি বাংলাদেশে ২৪০টি অবকাঠামো তৈরি করেছে। বিশেষ করে ২০১৬-২২ পর্যন্ত বাস্তবায়ন হয়েছে ৫৪০ কোটি মার্কিন ডলারের প্রকল্প। অবকাঠামোর ক্ষেত্রে দক্ষিণ কোরিয়ার দেওয়া শূন্য দশমিক শূন্য ১ শতাংশ হারে সুদ এবং ৪০ বছর মেয়াদের ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন (ইডিসিএফ) ঋণ ব্যবহার করা যেতে পারে।

২০২৭ সাল পর্যন্ত ইডিসিএফের পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে ৩০০ কোটি ডলার। জাপানের সরকারি ঋণের সুদহার ১ দশমিক ৩ থেকে ১ দশমিক ৭ শতাংশ, চীনের ২ শতাংশ এবং এডিবি–বিশ্বব্যাংকের সুদের হার ৫-৬ শতাংশ বলে উল্লেখ করেন কোরীয় রাষ্ট্রদূত।

বাংলাদেশের জন্য কোটা বাড়িয়েও প্রয়োজনীয় কর্মী না পাওয়ার কথা তুলে ধরে এক প্রশ্নের উত্তরে রাষ্ট্রদূত বলেন, ভাষাগত দক্ষতার অভাব এবং কাজের চুক্তি না মানার কারণে দক্ষিণ কোরিয়ায় কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশিরা অন্যান্য দেশের তুলনায় পিছিয়ে পড়েন।

‘মিট দ্য ওকাব’ অনুষ্ঠানে সংগঠনের সভাপতি নজরুল ইসলাম এবং সাধারণ সম্পাদক জুলহাস আলম বক্তব্য দেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন ত ক

এছাড়াও পড়ুন:

তেহরানে ইন্টারনেট বন্ধ করল সরকার, স্টারলিংক চালু করলেন মাস্ক

ইসরায়েলি হামলার প্রেক্ষাপটে ইরান সরকার যখন রাজধানী তেহরানে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ ঘোষণা করেছে, তখন মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্ক সেখানে স্টারলিংক স্যাটেলাইট যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু করেছেন বলে জানিয়েছেন।

শনিবার সকালে মাইক্রোব্লগিং সাইট এক্সে এক পোস্টে মাস্ক লিখেন, “The beams are on,” অর্থাৎ “সংযোগ চালু হয়েছে।”

এর আগে শুক্রবার ভোরে ইসরায়েলের হামলায় পারমাণবিক স্থাপনার ক্ষতি হওয়ার পর ইরান সরকার রাজধানী তেহরানে ইন্টারনেট সেবা অস্থায়ীভাবে বন্ধ ঘোষণা করে। ইরানের যোগাযোগ মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় দেশটির সাধারণ মানুষ আন্তর্জাতিক সংবাদ ও তথ্যের উৎস থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। এ অবস্থায় স্টারলিংকের মাধ্যমে বিকল্প ইন্টারনেট সংযোগ চালু করেন ইলন মাস্ক।

উল্লেখ্য, স্টারলিংক হলো স্পেসএক্সের মালিকানাধীন একটি স্যাটেলাইট-ভিত্তিক ইন্টারনেট পরিষেবা, যা পৃথিবীর যে কোনো প্রান্তে দ্রুতগতির ইন্টারনেট সরবরাহ করতে সক্ষম। সূত্র: টাইমস অব ইসরায়েল ও ওয়াশিংটন টাইমস

সম্পর্কিত নিবন্ধ