এস এম ইমদাদুল হক ১৯৭১ সালে ছিলেন পশ্চিম পাকিস্তানে। চাকরি করতেন সেনাবাহিনীতে। তিনি তখন লেফটেন্যান্ট। বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে কয়েকজন বাঙালি সহকর্মীর সঙ্গে আলাপ করে পালানোর সুযোগ খুঁজতে থাকেন। মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহে একদিন তাঁরা ১২ জন একসঙ্গে পালিয়ে ভারতে যান। এস এম ইমদাদুল হককে নিয়মিত মুক্তিবাহিনীর অষ্টম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তিনি প্রথমে যুদ্ধ করেন ১১ নম্বর সেক্টর এলাকায়, পরে জেড ফোর্সের অধীন বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলে। ৭ নভেম্বর মৌলভীবাজারের ধামাই চা-বাগানে এক খণ্ডযুদ্ধে তিনি শহীদ হন।

ধামাই চা-বাগানে ছিল পাকিস্তান সেনাবাহিনীর শক্ত একটি ঘাঁটি। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলে মুক্তিবাহিনীর স্বল্প তৎপরতার কারণে পাকিস্তান সেনাবাহিনী এই এলাকায় ব্যাপক আধিপত্য বিস্তার করে। ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে ধামাই চা-বাগানের অবস্থান ছিল গুরুত্বপূর্ণ। এ জন্য সেখানে আক্রমণ করা, চা-বাগানের দখল নেওয়া মুক্তিবাহিনীর জন্য অপরিহার্য হয়ে পড়ে। এই আক্রমণের দায়িত্ব পড়ে এস এম ইমদাদুল হকের ওপর। ৭ নভেম্বর রাতে তাঁর নেতৃত্বে প্রায় ১০০ মুক্তিযোদ্ধা সীমান্ত অতিক্রম করে চা-বাগান থেকে দূরে এক স্থানে তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে অবস্থান নেন।

আক্রমণের নির্ধারিত সময় ছিল ভোররাত। আক্রমণ শুরুর আগে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধাকে সঙ্গে নিয়ে তিনি এগিয়ে যান পাকিস্তানি সেনাদের অবস্থান নিজ চোখে দেখার জন্য। এ সময় বাগানে থাকা কয়েকটি কুকুর ডেকে উঠলে পাকিস্তানি সেনারা তাঁদের উপস্থিতি টের পেয়ে গুলি শুরু করে। তাঁর সঙ্গে থাকা মুক্তিযোদ্ধারাও পাল্টা গুলি করেন। তিনি নিজে পাকিস্তানি ক্যাম্প লক্ষ্য করে গ্রেনেড ছোড়েন। শুরু হয় প্রচণ্ড গোলাগুলি। এর মধ্যে দূরে থাকা সহযোদ্ধারাও তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন। ইমদাদুল হক সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন এবং যুদ্ধ করেন। একপর্যায়ে কয়েকজন সহযোদ্ধাকে নিয়ে ঢুকে পড়েন পাকিস্তানি সেনাদের অবস্থানের একদম ভেতরে। এ সময় আহত হন তাঁর এক সহযোদ্ধা। তাঁকে উদ্ধার করতে তিনি নিজেই এগিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মেশিনগানের গুলি এসে লাগে তাঁর বুকে। শহীদ হন এই সাহসী যোদ্ধা। সে যুদ্ধে আরও দুজন শহীদ হন। পরে মুক্তিযোদ্ধারা তাঁর এবং অন্য দুই সহযোদ্ধার মরদেহ উদ্ধার করে সমাহিত করেন ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের চল্লিশধন কদমতলায়।

# এস এম ইমদাদুল হক, বীর উত্তম

গ্রাম: মাটলা, সদর, গোপালগঞ্জ। বাবা আবদুল মালেক, মা রওশন নেছা। অবিবাহিত। খেতাবের সনদ নম্বর ২৬। শহীদ ৭ নভেম্বর, ১৯৭১।

সূত্র: একাত্তরের বীরযোদ্ধা, খেতাব পাওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা। প্রথম খণ্ড। প্রথমা প্রকাশন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সহয দ ধ অবস থ ন

এছাড়াও পড়ুন:

কোন আসনে বিএনপির প্রার্থী কে, দেখে নিন

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৩৭ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিএনপি। কোন আসনে বিএনপির মনোনয়ন কে পাচ্ছেন, তার তালিকা প্রকাশ করেছে দলটি। জাতীয় সংসদের আসন ৩০০টি। এর মধ্যে কিছু আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়নি আর কিছু আসন জোট শরিকদের জন্য রেখে দিয়েছে বিএনপি।

আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি জানান, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ফেনী–০১, বগুড়া–০৭ ও দিনাজপুর–০৩ আসন থেকে প্রার্থী হচ্ছেন। আর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নির্বাচন করবেন বগুড়া-৬ আসনে।

প্রার্থী ঘোষণার আগে দুপুর সাড়ে ১২টায় জরুরি বৈঠকে বসেন বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। প্রায় পাঁচ ঘণ্টাব্যাপী চলা এই বৈঠকে লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত এবং চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে করণীয় নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়।

আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এর আগে ডিসেম্বরের শুরুর দিকে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

বিএনপির প্রার্থীর তালিকা নিচে তুলে ধরা হলো–

সম্পর্কিত নিবন্ধ