গোবিপ্রবির সাবেক ভিসিসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
Published: 2nd, March 2025 GMT
গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (গোবিপ্রবি) প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও সেকশন অফিসার পদে নিয়ম বহির্ভুতভাবে নিয়োগ দেয়ায় সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিনসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ রবিবার (২ মার্চ) দুদকের সহকারী পরিচালক রিজন কুমার রায় বাদী হয়ে গোপালগঞ্জ দুদকের জেলা কার্যালয়ে এ মামলা দায়ের করেন। জেলা কার্যালয়ে থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
মামলার আসামিরা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর ড.
আরো পড়ুন:
নোয়াখালীতে স্কুলে যাওয়ার পথে ছাত্রীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ
সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ‘ষড়যন্ত্র’ করার অভিযোগ
মামলার বিবরণে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালের ২০১৮ সালের ২০ সেপ্টেম্বর হতে ২০১৯ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্মারক নং-৭৬৩-তে প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও সেকশন অফিসারের ১৬টি পদসহ বিভিন্ন পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত ১৬টি শূন্য পদের স্থলে শারমিন চৌধুরীসহ ২০ জনকে প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও সেকশন অফিসার পদে নিয়োগ দেওয়া হয়।
দুদক আরো জানায়, ওই পদে ৮৭০ জন আবেদকারীর ডাটা শিটে তৎকালীন ভিসি ড. খোন্দকার নাসির উদ্দিনের স্বাক্ষর রয়েছে। তালিকায় আসামি শারমিন চৌধুরীর নাম নেই। তাছাড়া নিয়োগ কমিটির সুপারিশ তালিকার ৮৭৩ নম্বর ক্রমিকে শারমিন চৌধুরীকে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হলেও বাস্তবে ৮৭৩ নম্বর ক্রমিক ডাটা শিটে নেই। অর্থাৎ আবেদন তালিকায় না থাকার পরও জাল-জালিয়াতি করে শারমিন চৌধুরীকে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির শর্তে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের তারিখে প্রার্থীর বয়স ৩২ বছর হওয়ার কথা থাকলেও প্রকৃতপক্ষে আসামি শারমিন চৌধুরীর বয়স ৩২ বছরের বেশি ছিল। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত ১৬টি শূন্য পদের স্থলে ২০ জনকে নিয়োগ ও ডাটা শিটে নাম না থাকার পরও নিয়োগ দিয়ে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করা হয়েছে।
দুদক আরো জানায়, বিশ্ববিদ্যালেয়ের কর্মকর্তা তুহিন মাহমুদের বিষয়ে প্রকাশ্য অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। এছাড়া নজরুল ইসলাম হীরার বিরুদ্ধে প্রকাশ্য অনুসন্ধান দুদক প্রধান কার্যালয়ে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
গত ১২ জানুয়ারি নানা অনিয়ম ও অভিযোগের ভিত্তিতে গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিযান চালায় দুর্নীতি দমন কমিশনের একটি দল। এ অভিযানে অনিয়মের সত্যতা পায়।
ঢাকা/বাদল/বকুল
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।
মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।
এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।
প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।
মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।
নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।