আ’লীগ নেতাকে নিয়ে ডিসির পুরস্কার বিতরণ, ক্ষোভ
Published: 2nd, March 2025 GMT
নীলফামারীর সৈয়দপুরে আওয়ামী লীগের এক নেতাকে পাশে নিয়ে শিক্ষার্থীদের হাতে পুরস্কার তুলে দিয়েছেন জেলা প্রশাসক ও ইউএনও। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগে নেতার সঙ্গে ডিসি ও ইউএনও একই মঞ্চে বসায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা।
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে অংশ নেওয়া আওয়ামী লীগ নেতার নাম হাফিজুর রহমান। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। শনিবার বিকেলে সৈয়দপুর সরকারি কলেজের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান ছিল। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ইউএনও নূর-ই আলম সিদ্দিকী। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে আজ রোববার। আওয়ামী লীগ নেতাকে পাশে নিয়ে তাদের পুরস্কার বিতরণের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে অভিযোগ করেছেন, প্রশাসনের কর্মকর্তারা আওয়ামী লীগের নেতাদের কৌশলে পুনর্বাসনের চেষ্টা চালাচ্ছেন।
সৈয়দপুর রাজনীতিবিদ জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল গফুর সরকার বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের দুঃশাসনে মানুষ সীমাহীন দুর্ভোগে ছিল। আন্দোলন চলাকালে মানুষের ওপর নির্বিচারে গুলি করেছে। নিষিদ্ধ না হলেও সর্বমহলে তাদের অবাঞ্ছিত করা হচ্ছে। কীভাবে সেই দলের স্থানীয় শীর্ষ পর্যায়ের নেতাকে নিয়ে পাশে বসেন ডিসি ও ইউএনও? এতে বোঝা যায়, এখনও সেই পিছুটান রয়েছে। কলেজের অধ্যক্ষের সাবধান হওয়া উচিৎ ছিল।
এ বিষয়ে সৈয়দপুর সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ গোলজার হোসেনের ভাষ্য, তিনি জানতেন হাফিজুর রহমান আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা। তিনি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ হওয়ায় তাঁকে অতিথি করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান বলেন, মঞ্চে পাশে বসা হাফিজুর রহমান আওয়ামী লীগ নেতা, তা জানতেন না তিনি। জানলে তিনি অনুষ্ঠানেই যেতেন না।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আওয় ম ল গ অন ষ ঠ ন স য়দপ র কল জ র সরক র আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
পরিবারের কাছে ফিরে গেলেন অভিনেতা সমু চৌধুরী
অভিনেতা সমু চৌধুরী পরিবারের কাছে ফিরে গেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সোয়া ৩টার পর পুলিশ তাঁকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। এর আগে ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে মাজারের গাছতলায় গামছাপরিহিত সমু চৌধুরীর ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে নানা জল্পনা শুরু হয়।
গফরগাঁওয়ের পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস আলম বলেন, অভিনেতা সমু চৌধুরীকে রাত ৩টা ২০ মিনিটের দিকে খালাতো ভাই অপু চৌধুরীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ সময় অভিনয়শিল্পী সংঘের লোকজনও ছিলেন। তিনি বলেন, সমু চৌধুরী এর আগে মাজারটিতে কয়েকবার এলেও কেউ তাঁকে চিনতে পারেননি। এবারও মাজারে একাকী সময় কাটাতে এসেছিলেন তিনি।
এর আগে গত বুধবার রাতে ঢাকা থেকে মোটরসাইকেলে করে গফরগাঁও উপজেলার মশাখালী ইউনিয়নে অবস্থিত মুখী শাহ্ মিসকিনের মাজারে আসেন সমু চৌধুরী। পরদিন গতকাল দুপুরে মাজারের গাবগাছের নিচে শুয়ে থাকতে দেখা যায় তাঁকে। মাজারের পাশের বাসিন্দা আল মামুন হৃদয় ফেসবুকে তাঁর গাছতলায় শুয়ে থাকার ছবি পোস্ট করেন। দ্রুত সেটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা সমু চৌধুরীকে মানসিকভাবে অসুস্থ বলে দাবি করেন। সমু চৌধুরীকে এমন অবস্থায় দেখতে পেয়ে সেখানে ভিড় করেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। বিকেল গাড়িয়ে সন্ধ্যা হলে পুলিশের অনুরোধেও থানায় যাননি সমু চৌধুরী। সন্ধ্যার পর লোকজন আরও বাড়তে থাকে। এ অবস্থায় পুলিশের পাশাপাশি মাজার প্রাঙ্গণে সেনাবাহিনী অবস্থান নেয়। এ সময় সমু চৌধুরী জানান, তিনি সুস্থ আছেন। সারা রাত মাজারে ধ্যানে ছিলেন।
আরও পড়ুনঅভিনেতা সমু চৌধুরীকে উদ্ধারের চেষ্টা করেছে পুলিশ, কী হয়েছিল তাঁর২১ ঘণ্টা আগেগতকাল রাত ৯টার দিকে সমু চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করেন গফরগাঁওয়ের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এন এম আবদুল্লাহ-আল-মামুন। সমু চৌধুরী সুস্থ আছেন কি না, তা জানতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন সেখানে উপস্থিত হন।
ইউএনও এন এম আবদুল্লাহ-আল-মামুন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা এক ঘণ্টার বেশি সময় অভিনেতার সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয় এবং তাঁকে সুস্থ পাওয়া যায়। তাঁর বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হয়, পুরো ঘটনা তাঁর জবানিতে শোনা হয়। অভিনেতা মাজারভক্ত মানুষ। এ মাজারে আগেও এসেছিলেন। তাঁকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব দিলেও গতকাল তাঁর ভাষায় গুরুবার ও গুরুত্বপূর্ণ রাত হওয়ায় তিনি মাজারেই অবস্থান করার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ছবির কারণে বিড়ম্বনার সৃষ্টি হয়।’
সমু চৌধুরীর বয়স ৬২ বছর। তিনি ১৯৯০ সালে একটি নাটকের মাধ্যমে অভিনয়জীবনে প্রবেশ করেন। এ ছাড়া উদীচীর সঙ্গে ছিলেন ১২ বছর। ব্যক্তিজীবনে তিনি অবিবাহিত। তাঁর বাড়ি যশোর। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে শুধু মা জীবিত আছেন। সমু চৌধুরী যশোরে থাকেন বলেও জানান ইউএনও।
আরও পড়ুনমাজার থেকে সরতে চাইছেন না সমু চৌধুরী১৮ ঘণ্টা আগে