খুলনায় সাবেক মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র ও তাঁর স্ত্রীর নামে দুদকের মামলা
Published: 3rd, March 2025 GMT
সাবেক ভূমিমন্ত্রী ও খুলনা-৫ আসনের (ডুমুরিয়া-ফুলতলা) সাবেক সংসদ সদস্য নারায়ণ চন্দ্র চন্দ ও তাঁর স্ত্রী ঊষা রাণী চন্দের নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুটি মামলা হয়েছে। আজ সোমবার দুপুরে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) খুলনার সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলা দুটি করা হয়েছে।
নারায়ণ চন্দ্র চন্দের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন দুদক খুলনার সহকারী পরিচালক রকিবুল ইসলাম। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, নারায়ণ চন্দ্র চন্দ খুলনা-৫ আসনের সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী থাকার সময় দুর্নীতির মাধ্যমে ১ কোটি ৭৯ লাখ ৬৮ হাজার ৩৭৭ টাকার জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ সম্পদ অর্জন করেছেন।
দুদক কর্মকর্তারা জানান, অনুসন্ধানকালে রেকর্ডপত্র ও তথ্যাদি পর্যালোচনায় নারায়ণ চন্দ্র চন্দের নামে ১ কোটি ৪৪ লাখ ৭৭ হাজার ৪০০ টাকার স্থাবর ও ২ কোটি ৫ লাখ ২৫ হাজার ১৬৬ টাকার অস্থাবরসহ মোট ৩ কোটি ৫০ হাজার ২ হাজার ৫৬৬ টাকা মূল্যের সম্পদ পাওয়া যায়। এ সময়ে তাঁর গ্রহণযোগ্য আয়ের উৎস পাওয়া যায় ৩ কোটি ৯ লাখ ৯৩ হাজার ৩২৮ টাকা এবং পারিবারিক ও অন্যান্য খাতে ব্যয় পাওয়া যায় ১ কোটি ৩৯ লাখ ৫৯ হাজার ১৩৯ টাকা। ব্যয় ছাড়া সম্পদ অর্জনের জন্য নিট আয় পাওয়া যায় ১ কোটি ৭০ লাখ ৩৪ হাজার ১৮৯ টাকা। এ হিসাবে নারায়ণ চন্দ্র চন্দের জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ সম্পদের পরিমাণ পাওয়া গেছে ১ কোটি ৭৯ লাখ ৬৮ হাজার ৩৭৭ টাকা।
এ ছাড়া পৃথক আরেকটি মামলা করেছেন দুদকের একই কার্যালয়ের আরেক সহকারী পরিচালক মাহমুদুল হাসান। এই মামলার প্রধান আসামি নারায়ণ চন্দ্র চন্দের স্ত্রী ঊষা রাণী চন্দ, আর দুই নম্বর আসামি নারায়ণ চন্দ্র চন্দ। মামলাটির এজাহারে বলা হয়েছে, ঊষা রাণী চন্দের নামে ১ লাখ টাকার স্থাবর ও ১ কোটি ১৩ লাখ ১০ হাজার ২৩৮ টাকার অস্থাবরসহ মোট ১ কোটি ১৪ লাখ ১০ হাজার ২৩৮ টাকার সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়। একই সময়ে তাঁর দায়-দেনার পরিমাণ ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা। দায়-দেনা বাদ দিয়ে ঊষা রাণী চন্দের নিট সম্পদের পরিমাণ ১ কোটি ১০ লাখ ৫০ হাজার ২৩৮ টাকা। একই সময়ে তাঁর গ্রহণযোগ্য আয়ের পরিমাণ ৬০ লাখ ৩৯ হাজার ২৪৯ টাকা এবং পারিবারিক ও অন্যান্য ব্যয়ের পরিমাণ ১২ লাখ ৩২ হাজার ২২২ টাকা। ব্যয় বাদে তাঁর নিট আয়ের পরিমাণ ৪৮ লাখ ৭ হাজার ২৭ টাকা। সেই মোতাবেক উষা রাণী চন্দের জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ সম্পদের পরিমাণ ৬২ লাখ ৪৩ হাজার ২১১ টাকা। এ কারণে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ঊষা রাণী চন্দ্র ও তাঁর স্বামী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ্রের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক।
দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় খুলনার উপপরিচালক আবদুল ওয়াদুদ প্রথম আলোকে বলেন, নারায়ণ চন্দ্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ সাপেক্ষে ২০২৪ সালের ২৩ অক্টোবর তদন্ত শুরু করে দুদক। তদন্তের একপর্যায়ে দেখা যায়, নারায়ণ চন্দ্রের পাশাপাশি তাঁর স্ত্রী ঊষা রাণী চন্দও অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন করেছেন। এ কারণে নারায়ণ চন্দ্রের বিরুদ্ধে পৃথক একটি এবং স্বামী-স্ত্রী দুজনের নামে আরেকটি মামলা করা হয়েছে। তদন্ত করে তাঁদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হবে। তদন্তের সময়ে যদি আরও সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়, সেই বিষয়েও অভিযোগপত্রে তুলে ধরা হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র পর ম ণ জ ঞ ত আয় কর ছ ন স থ বর তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
তারেক রহমানসহ আসামিদের খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের শুনানি ১৩ আগস্ট
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ আসামিদের খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিলের পরবর্তী শুনানির জন্য ১৩ আগস্ট দিন রেখেছেন আপিল বিভাগ। আজ বৃহস্পতিবার শুনানি নিয়ে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বিভাগ ওই সময় পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন।
এর আগে পেপারবুক (মামলার বৃত্তান্ত) থেকে রাষ্ট্রপক্ষের উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে ১৭ জুলাই আপিলের ওপর শুনানি শুরু হয়।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্যাহ আল মাহমুদ। আসামিপক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান, আইনজীবী কায়সার কামাল ও মোহাম্মদ শিশির মনির প্রমুখ।
প্রায় দুই দশক আগে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলার ঘটনায় করা পৃথক মামলায় (হত্যা ও বিস্ফোরক মামলা) বিচারিক আদালতের দেওয়া সাজার রায় বাতিল করে গত বছরের ১ ডিসেম্বর রায় দেন হাইকোর্ট। এতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ গ্রেনেড হামলা মামলার আসামিরা খালাস পান।
আরও পড়ুন২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় তারেক-বাবরসহ সব আসামি খালাস০১ ডিসেম্বর ২০২৪পৃথক দুটি মামলার (হত্যা ও বিস্ফোরক মামলা) হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর রাষ্ট্রপক্ষ পৃথক লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে। শুনানি নিয়ে গত ১ জুন লিভ টু আপিল (বিস্ফোরক মামলায়) মঞ্জুর করেন আপিল বিভাগ। এর ধারাবাহিকতায় আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। এই আপিলের ওপর আজ দ্বিতীয় দিনের মতো শুনানি হলো।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলা হয়। এতে ২৪ জন নিহত হন। আহত হন দলটির শতাধিক নেতা-কর্মী।