জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগের একটাই উদ্দেশ্য- একটি আদর্শ সমাজ বিনির্মাণ করা। এ কাজের জন্য জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের নিজেদের গড়তে হবে। জামায়াতকে দেশ গড়ার দায়িত্ব দিলে একটি বৈষম্যহীন মানবিক রাষ্ট্র উপহার দেওয়া সম্ভব হবে।

সোমবার খুলনায় জামায়াতের খুলনা মহানগর কার্যালয়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী একটি আদর্শবাদী সংগঠন। জামায়াত দেশকে একটি মডেল রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য দীর্ঘ পরিসরে আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। এ মহতী কাজ সম্পাদনের জন্য একদল আদর্শ ও চরিত্রবান লোক তৈরি করার কোনো বিকল্প নেই। সে লক্ষ্যেই আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা ইতোমধ্যে এমন একটি জনগোষ্ঠী তৈরি করতে সক্ষম হয়েছি যারা দেশ ও জাতির কল্যাণ এবং আল্লাহর আইন ও সৎ লোকের শাসন প্রতিষ্ঠায় যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত রয়েছেন।

মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, যে শক্তি বিতাড়িত হয়েছে তাদের ব্যাপারে পাহারাদারের ভূমিকায় থাকতে হবে। তারা যেন দেশে ঢুকে আবার অন্যায় করতে না পারে। তাদের এখন একটাই পরিকল্পনা, কীভাবে বাংলাদেশের এই পরিবেশকে নস্যাৎ করে দুনিয়াকে দেখানো যায়,বাংলাদেশ অচল হয়েছে।

তিনি বলেন, বিগত ফ্যাসিবাদী আমলে আমাদের সবগুলো অফিস সিলগালা করে দেওয়া হয়েছিল। আমাদের নেতাকর্মীদের ঘর থেকে তুলে নিয়ে গুম খুন নির্যাতন করা হয়েছে। আমাদের নেতাদের বিচারের নামে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু আমরা তাদের প্রতি প্রতিশোধে বিশ্বাসী নই। তবে জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করার জন্য ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিচারের আওতায় আনা দরকার।

মহানগর আমির অধ্যাপক মাহফুজুর রহমানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন মহানগর নায়েবে আমির অধ্যাপক নজিবুর রহমান, সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলাল, সহকারী সেক্রেটারি প্রিন্সিপাল শেখ জাহাঙ্গীর আলম ও আজিজুল ইসলাম ফারাজী, মহানগর ছাত্রশিবিরের সভাপতি আরাফাত হোসেন মিলন, সেক্রেটারি রাকিব হাসান, মাওলানা শেখ ওয়ালিউল্লাহ, ইকবাল হোসেন, মীম মিরাজ হোসাইন প্রমুখ।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ ম য় ত ইসল ম র জন য ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করে নভেম্বরে গণভোট, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন দিতে হবে

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের মধ্যে দিয়ে আগামী নভেম্বরে গণভোট এবং ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। 

শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) সকালে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার স্বাধীনতা চত্বরে হিন্দু সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ দাবি জানান। ডুমুরিয়া উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর হিন্দু কমিটি এ সম্মেলনের আয়োজন করে।

সম্মেলনে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, স্বাধীনতার পর যারাই দেশ চালিয়েছে, তারা সবাই হিন্দুদের ব্যবহার করে শুধু নিজেদের ভাগ্যের উন্নয়ন করেছে। এবার হিন্দুদের ভাগ্যের উন্নয়ন ও অবকাঠামো উন্নয়নে প্রয়োজন ইসলামী সরকার। 

গোলাম পরওয়ার বলেন, যারা দাঁড়িপাল্লার জোয়ার দেখে হিন্দুদের ভয়-হুমকি দিচ্ছে, তাদের হুমকিতে এবার হিন্দুরা ভয় পাবে না। হিন্দুদের কেউ বাধা দিলে জনগণ প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। এখন হিন্দুদের স্লোগান—সব মার্কা দেখা শেষ, দাঁড়িপাল্লার বাংলাদেশ।

সম্মেলনে ডুমুরিয়া উপজেলা হিন্দু কমিটির সভাপতি কৃষ্ণ নন্দীর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি অধ্যক্ষ দেবপ্রসাদ মণ্ডলের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সহ-সভাপতি ও অতিরিক্ত জিপি অ্যাডভোকেট আবুল খায়ের, শোভনা ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি মো. মোসলেম উদ্দিন, শরাফপুর সর্বজনীন পূজা মন্দিরের ঘোসাই সাধু প্রমথ গাইন, ডুমুরিয়া উপজেলা হিন্দু কমিটির সহ-সভাপতি ডা. হরিদাস মন্ডল, কানাই লাল কর্মকার ও প্রভাষক প্রশান্ত কুমার মন্ডল, কোষাধ্যক্ষ গৌতম কুমার মন্ডল, পল্লীশ্রী মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ সুভাষ সরদার, মাগুরখালী ইউনিয়ন সহ-সভাপতি সুজিৎ কুমার সরকার, ডুমুরিয়া সার্বজনীন পূজা মন্দিরের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আপোষ সিংহ, ধামালিয়া ইউনিয়ন সভাপতি গোবিন্দ কুন্ডু, রুদাঘয়া ইউনিয়ন সভাপতি বিপ্লব সরকার, রঘুনাথপুর ইউনিয়ন সভাপতি কার্তিক চন্দ্র সরকার, খর্ণিয়া ইউনিয়ন সভাপতি নারায়ন রাহা, মাগুরঘোনা ইউনিয়ন সভাপতি বিশ্বনাথ দাস, সাহস ইউনিয়ন তন্ময় মন্ডল সভাপতি, ভান্ডারপাড়া ইউনিয়ন সভাপতি নিরঞ্জন রায়, রংপুর ইউনিয়ন সভাপতি তরুন কুমার মন্ডল, শোভনা ইউনিয়ন হিন্দু কমিটির মহিলা সম্পাদক শ্রীমতি প্রিয়ংকা মন্ডল, মাগুরখালী ইউনিয়ন সভাপতি প্রদীপ কুমার সরকার, আটলিয়া ইউনিয়ন সভাপতি অনিমেষ মন্ডল, গুটুদিয়া ইউনিয়ন সভাপতি মনোরঞ্জন মন্ডল, শরাফপুর ইউনিয়ন সভাপতি গোবিন্দ কুমার বিশ্বাস, শোভনা ইউনিয়ন সভাপতি স্বদেশ হালদার, ডুমুরিয়া ইউনিয়ন সভাপতি অরুন কুমার আচার্য প্রমুখ। 

মিয়া গোলাম পরওয়ার আরো বলেন, ৫৪ বছর যারা দেশ চালিয়েছে, তারা সন্ত্রাস, দখলদারিত্ব ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে হিন্দুদের শোষণ করেছে। জামায়াত রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলে দেশ থেকে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও দখলদারদের নির্মূল করবে। দেশের মানুষ পরিবর্তন চায়, আমরা সেই পরিবর্তন আনতে চাই।

তিনি বলেন, “লাঙলের শাসন দেখেছি, ধানের শীষের শাসন দেখেছি, নৌকার শাসনও দেখেছি। একটি দলই বাকি- জামায়াতে ইসলামী, তার প্রতীক দাঁড়িপাল্লা।”

২০২৪ সালের আন্দোলনে দেড় হাজার শহীদ ও ৪০ হাজার আহতের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঢাবি, চবি, রাবি, জাবিসহ সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পরিবর্তনের বার্তা দিয়েছে। আগামীতেও সেই বার্তা জনগণ দেবে।

সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে উপজেলা হিন্দু কমিটির সভাপতি কৃষ্ণ নন্দী বলেন, “নতুন প্রজন্মের প্রথম ভোট দাঁড়িপাল্লার পক্ষে হোক।” 

আগামী নির্বাচনে দাঁড়িপাল্লায় ভোট দিয়ে মিয়া গোলাম পরওয়ারকে সর্বোচ্চ ভোটে নির্বাচিত করার আহ্বান জানান তিনি।

মতুয়া সংঘের সভাপতি ডা. সুদীপ্ত কুমার সুন্দর মন্ডল বলেন, “আমরা আর সংখ্যালঘু পরিচয় শুনতে চাই না। আমরা সবাই বাংলাদেশি। স্বাধীনতার পর কোনো সরকার হিন্দুদের দাবিতে কাজ করেনি। এবার প্রমাণ হবে হিন্দু মানেই একটি নির্দিষ্ট দল নয়।”

এ সম্মেলনকে ঘিরে ডুমুরিয়ার ১৪টি ইউনিয়ন থেকে মিছিল নিয়ে আসেন হিন্দু সম্প্রদায়ের বিপুল সংখ্যক মানুষ। বাদ্যযন্ত্রসহ নারী-পুরুষ ও যুবকরা এতে অংশ নেন। সমাবেশ শেষে একটি গণমিছিল ডুমুরিয়া সদরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। মিছিলে নেতৃত্ব দেন উপজেলা হিন্দু কমিটির সভাপতি কৃষ্ণ নন্দী।

ঢাকা/নূরুজ্জামান/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সরকার ‘গোপন সমঝোতা’ করলে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ভঙ্গ হতে পারে: গোলাম পরওয়ার
  • হিন্দুদের ভাগ্যোন্নয়নে প্রয়োজন ইসলামি সরকার: গোলাম পরওয়ার
  • জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করে নভেম্বরে গণভোট, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন দিতে হবে