নিউজিল্যান্ড-দক্ষিণ আফ্রিকার জার্নি বাই প্লেন
Published: 5th, March 2025 GMT
২০ সেকেন্ডের রিলসে পুরো ব্যাপারটি বেশ মজা করেই তুলে ধরেছে নিউজিল্যান্ড দলের মিডিয়া ম্যানেজার। দুবাইয়ে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ শেষ হয় রাত ৮টা ১৫ মিনিটে। স্টেডিয়ামেই ডিনার, রাত ৮টা ৪০ মিনিটে। হোটেল ফিরে ব্যাগ গুছিয়ে এয়ারপোর্টে যেতে যেতে রাত ১২টা ৫০ মিনিট। প্লেনের বোর্ডিং পাস নিতে তখন রাত ১টা ১৫ মিনিট। লাহোরে ল্যান্ড সকাল ৭টা ৪০ মিনিট। হোটেল ফিরতেই সকাল ৮টা ৩০ মিনিট। দু’দেশ বদলিয়ে প্রায় ১২ ঘণ্টার যাত্রা সম্পন্ন করে দুবাই থেকে লাহোরে সেমিফাইনাল খেলতে এসেছে নিউজিল্যান্ড।
শরীরের ওপর কতটা ধকল গেছে রিলসে সেটাই বোঝাতে চেয়েছে ব্ল্যাক ক্যাপসরা। অবশ্য তাদের চেয়েও এই দৌড়াদৌড়িটা বেশি করতে হয়েছে প্রোটিয়াদের। ইংল্যান্ডকে হারিয়ে করাচি থেকে তাদের রওনা দিতে হয়েছে দুবাইয়ের পথে। সেখানে এক দিন অপেক্ষার পর ফের দুবাই থেকে লাহোরে যেতে হয়েছে। ‘জার্নি বাই প্লেন’র এই ক্লান্তি ঝেড়ে ফেলে দু’দল আজ সেমিফাইনালে মুখোমুখি হতে যাচ্ছে।
আসলে হাইব্রিড মডেলের শর্ত মেনেই তাদের এই হুড়োহুড়িতে পড়তে হয়েছে। ভারত পাকিস্তানে গিয়ে না খেলায় সে দিন ইংল্যান্ড ম্যাচের পর অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা দু’দলকেই দুবাই যেতে হয়। সেদিন নিউজিল্যান্ড ভারতের বিপক্ষে জিতলে দুবাই থেকে যেত দক্ষিণ আফ্রিকা। ‘দুবাই থেকে আমাদের লাহোরে ফিরে আসার জোর সম্ভাবনা ছিল। এতটা ভ্রমণ শরীরের জন্য আদর্শিক নয়। তবে আমরা দুবাইয়ে অন্তত কিছু ঘুরেফিরে বেরিয়েছি। এটা আমাদের জানাই ছিল, কোনো এক দলের হয়তো ফিরে আসতে হবে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদেরই ভ্রমণ করতে হয়েছে বেশি।’
দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটার ক্লাসেন আক্ষেপ ঝেড়ে ফেলে দিয়েছেন। জানিয়েছেন, এই ঘোরাঘুরির জন্য তাদের কোনো অভিযোগ নেই। দু’দিনে তাদের অন্তত ১৮ ঘণ্টা হোটেল টু মাঠ, মাঠ টু এয়ারপোর্ট করতে হয়েছে। পাকিস্তানে নিরাপত্তার কারণেই তারা হোটেল থেকে শপিংমল বা অন্য কোনো জায়গায় বেরোতে পারেননি। সেই সুযোগ দুবাইতে গিয়ে কাজে লাগিয়েছে প্রোটিয়ারা। নিউজিল্যান্ড দলকেও করাচি দুবাই করতে হয়েছে। তারও এক প্রকার মেনে নিয়েছেন আকাশ ভ্রমণের ক্লান্তি।
‘এটা এমন একটা ব্যাপার, যা কিনা আমাদের হাতে নেই। সুতরাং এ নিয়ে আমরা ভাবছিও না। আমাদের সব ফোকাস এখন সেমিফাইনাল ম্যাচ ঘিরে।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।
মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।
এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।
প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।
মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।
নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।