ঢাবিতে পোশাক নিয়ে হেনস্তা: মামলা প্রত্যাহারের আবেদন সেই নারী শিক্ষার্থীর
Published: 7th, March 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে নারী শিক্ষার্থীকে হেনস্তার অভিযোগে করা মামলায় গ্রেপ্তার কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সহকারী বুক বাইন্ডার মোস্তফা আসিফ অর্ণবকে বৃহস্পতিবার জামিন দিয়েছেন আদালত। এরপর হেনস্তার শিকার হওয়া ঢাবির সেই ছাত্রী তার মামলা তুলে নিতে শাহবাগ থানায় আবেদন করেন।
বুধবার ঢাবি ক্যাম্পাসে ‘ওড়না পরা’ নিয়ে এক নারী শিক্ষার্থীকে হেনস্তা করার অভিযোগ ওঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী অর্ণবের বিরুদ্ধে। তাকে গ্রেপ্তার করে শাহবাগ থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। অর্ণবকে ছাড়াতে রাতভর থানার সামনে জড়ো হতে থাকে নিজেদের ‘তৌহিদী জনতা’ পরিচয় দেওয়া একদল ব্যক্তি।
বৃহস্পতিবার আদালতে নেওয়ার পর জামিনে মুক্তি পান অর্ণব। এ সময় তাকে কোরআন শরিফ হাতে ধরিয়ে পাগড়ি ও ফুলের মালা পরিয়ে বরণ করে নেয় রাতভর তার অপেক্ষায় বসে থাকা ব্যক্তিরা।
আরো পড়ুন:
ওড়না ও নেকাব কাণ্ডের মধ্যে ঢাবিতে নতুন সিদ্ধান্ত
ভেন্টিলেশনে ঢাবির সাবেক উপাচার্য আরেফিন সিদ্দিক
এদিকে, হেনস্তার শিকার হওয়া ঢাবির সেই নারী শিক্ষার্থী তার মামলা তুলে নিতে শাহবাগ থানায় আবেদন করেন। মামলা প্রত্যাহারের ঘটনা নিশ্চিত করে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
এর আগে বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফেরার পথে ক্যাম্পাসেই এক নারী শিক্ষার্থীকে হেনস্তা করেছেন মোস্তফা আসিফ অর্ণব-এমন অভিযোগ করে ভুক্তভোগী ঘটনার বিবরণ দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দেন। হেনস্তার শিকার ওই শিক্ষার্থী প্রথমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে অভিযোগ করেন।
পরে শাহবাগ থানায় মামলা করেন তিনি। ওই মামলায় মোস্তফা আসিফ অর্ণবকে গ্রেপ্তার করে শাহবাগ থানা পুলিশ। এরপর ‘তৌহিদী জনতা’ পরিচয়ে রাতে থানায় অবস্থান করে আসামিকে মুক্তির দাবি করে একদল মানুষ। তারা গারদে গিয়ে আসামির সঙ্গ কথা বলেন, যা গণমাধ্যমসহ সামাজিক মাধ্যমে প্রচার হলে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা হয়।
ঢাকা/এমআর/এসবি
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বৈষম্যবিরোধীদের তোপের মুখে যশোর মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদকের পদত্যাগ
আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেছেন যশোর মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আরিফুল ইসলাম ওরফে রিয়াদ। আজ বুধবার সন্ধ্যায় শহরের বকচর এলাকার কার্যালয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মী ও সমিতির নেতা-কর্মীদের সামনে তিনি পদত্যাগ করেন।
এর আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহেদ মোহাম্মদ রিজভীর নেতৃত্বে মিছিল সহকারে নেতা-কর্মীরা বাস মালিক সমিতির কার্যালয়ে জড়ো হন। এ সময় আরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন তাঁরা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তুলে আরিফুল ইসলামের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আরিফুলকে অপসারণে সময়সীমা বেঁধে দেন তাঁরা। আজ পদত্যাগের কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাস মালিক সমিতির কার্যালয়ে অবস্থান নেন তাঁরা। অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে কার্যালয়ের ভেতর থেকে ৮ থেকে ১০ জন ব্যক্তি সেখানে হামলার চেষ্টা করলে নেতা-কর্মীরা তা প্রতিহত করেন এবং একজনকে চাকুসহ আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন। এ সময় কয়েকজন পালিয়ে যান। এরপর নেতা-কর্মীদের তোপের মুখে আরিফুল ইসলাম পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করে সভাপতির কাছে জমা দেন। পরে অবস্থান কর্মসূচি পালনকারীরা সন্ধ্যায় আনন্দ মিছিল বের করেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের মুখপাত্র ফাহিম আল-ফাত্তাহ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আরিফুল ইসলাম আওয়ামী লীগের দোসর। ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের পর একজন দোসর এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সংগঠনের চেয়ারে থাকতে পারে না। তাই শিক্ষার্থীরা তাকে পদত্যাগের কর্মসূচি নেয়। আমরা শুনেছি রিয়াদ পদত্যাগ করেছে।’
এ বিষয়ে সংগঠনটির আহ্বায়ক রাশেদ খান বলেন, ‘রিয়াদকে পদত্যাগ করানো আমাদের দলীয় কোনো সিদ্ধান্ত নয়। তবে তিনি আওয়ামী লীগের দোসর। স্বৈরাচারী দোসররা ৫ আগস্টের পর কোনো দপ্তরের চেয়ারে থাকবে না, সেটা আমাদের নীতিগত সিদ্ধান্ত ছিল।’
যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল হাসনাত বলেন, মিনিবাস মালিক সমিতির কার্যালয়ে ছাত্ররা গিয়ে মব সৃষ্টি করে সাধারণ সম্পাদকের পদত্যাগ দাবি করেন। এ সময় এক যুবক চাকু নিয়ে ভেতরে ঢোকেন। তখন ছাত্ররা তাঁকে ধরে পুলিশের কাছে তুলে দেন। এরপর সেই যুবককে অস্ত্র আইনের মামলায় বিকেলে আদালতে পাঠালে বিচারক তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।