রাজধানী ঢাকায় বুধবার রাত ১২টা থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত আরও ১৮৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাত থেকে গতকাল মধ্যরাত পর্যন্ত চলা ১১ দিনের সাঁড়াশি অভিযানে এ নিয়ে ২ হাজার ৩৪২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আজ শুক্রবার ডিএমপির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, সর্বশেষ গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে ৬ জন ডাকাত, ২২ জন পেশাদার ছিনতাইকারী, ৪ জন চাঁদাবাজ, ৭ জন চোর, ২০ জন চিহ্নিত মাদক কারবারি, ৩০ জন পরোয়ানাভুক্ত আসামিসহ অন্যান্য অপরাধে জড়িত ব্যক্তিরা রয়েছেন।

অভিযানে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কাছ থেকে পিস্তলের একটি ম্যাগাজিন, তিনটি চায়নিজ কুড়াল, দুটি স্টিলের চাকু, একটি হ্যাকসো ব্লেড, একটি সার্কিট ব্রেকার, তিনটি চাবি, একটি চাবির রিং, একটি ব্যাগ, তিনটি মুঠোফোন ও ১৯ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া তাদের কাছ থেকে ৬৩ কেজি ৫৭০ গ্রাম গাঁজা ও ৫০টি ইয়াবা জব্দ করা হয়েছে। এসব ঘটনায় ডিএমপির বিভিন্ন থানায় ৬৭টি মামলা করা হয়েছে।

আরও পড়ুনঢাকায় ৮ দিনের সাঁড়াশি অভিযানে গ্রেপ্তার ২ হাজার০৫ মার্চ ২০২৫

ডিএমপির সংবাদ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, গতকাল রাত ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীর ৫০ থানা এলাকায় ২ পালায় পুলিশের ৬৬৭টি টহল দল দায়িত্ব পালন করেছে। এর মধ্যে রাতে ৩৪০টি ও দিনে ৩২৭টি। এ ছাড়া ঢাকা মহানগর এলাকায় নিরাপত্তা বাড়াতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এবং কৌশলগত স্থানে ৭১টি তল্লাশিচৌকি পরিচালনা করা হয়েছে।

ডিএমপির দলের পাশাপাশি মহানগরের বিভিন্ন অপরাধপ্রবণ স্থানে দুই পালায় কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) ১৪টি, তিন পালায় অ্যান্টিটেররিজম ইউনিটের (এটিইউ) ১২টি এবং ডিএমপির সঙ্গে রাতে র‍্যাবের ১০টি টহল দল দায়িত্ব পালন করে। এ ছাড়া ডিএমপির সঙ্গে পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) ২০টি তল্লাশিচৌকি পরিচালনা করেছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ড এমপ র

এছাড়াও পড়ুন:

সবাই ভেবেছিলেন কিশোরী ডুবে গেছে, ১০ দিন পর ফোন করে জানাল সে গাজীপুরে আছে

১০ দিন আগে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর মরা কালিগঙ্গা নদীতে গোসল করতে গিয়েছিল কিশোরী সোহানা খাতুন। বাড়িতে ফিরে না আসায় পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসী তাকে খুঁজতে শুরু করেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল নদীতে অভিযান চালিয়েও তার সন্ধান পায়নি। তবে গত বুধবার রাতে মাকে ফোন করেছে সোহানা; জানিয়েছে সে গাজীপুরে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে।

নিখোঁজ হওয়া কিশোরীর নাম সোহানা খাতুন। তার বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাগুলাট ইউনিয়নের বাঁশগ্রাম কারিগর পাড়ায়। তার বাবা গোলাম মওলা ও মা শিরিনা খাতুন।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯ জুলাই দুপুরে বাড়ির পাশের মরা কালিগঙ্গা নদীতে গোসল ও কাপড় ধুতে গিয়েছিল সোহানা। দীর্ঘ সময়েও না ফেরায় তার মা নদীর ধারে যান; দেখেন, সোহানার কাপড় পড়ে আছে। এরপর স্বজন ও এলাকাবাসী তাকে খুঁজতে শুরু করেন। খবর পেয়ে ওই রাতে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল নদীতে উদ্ধার অভিযান চালায়। পরদিন খুলনা ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ১২ ঘণ্টা অভিযান চালিয়েও তার সন্ধান না পেয়ে অভিযান স্থগিত করে। ২১ জুলাই এক কবিরাজ এনে নদীতে খোঁজার চেষ্টাও করেন সোহানার বাবা–মা।

এমন অবস্থায় বুধবার রাতে হঠাৎ সোহানা তার মায়ের ফোনে কল দিয়ে জানায়, সে ঢাকার গাজীপুরে তার প্রাক্তন স্বামীর কাছে রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান সোহানার বাবা গোলাম মওলা। তিনি বলেন, ‘প্রথমে ভেবেছিলাম, মেয়ে নদীতে ডুবে গেছে। সবাই মিলে খোঁজাখুঁজি করেছি। এমনকি কবিরাজও এনেছিলাম। কিন্তু হঠাৎ বুধবার আমার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে জানায়, সে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে। আমরা বিষয়টি গতকাল রাতে পুলিশকে জানিয়েছি।’ বিষয়টি বুঝতে না পেরে সবাইকে কষ্ট দেওয়ার জন্য তিনি ক্ষমা চান।

স্থানীয় লোকজন জানান, প্রায় দুই বছর আগে খালাতো ভাই কুতুব উদ্দিনের সঙ্গে পালিয়ে যায় সোহানা এবং দুজন বিয়ে করে। তবে বনিবনা না হওয়ায় তিন মাস আগে সোহানা তাকে তালাক দিয়ে বাবার বাড়ি চলে আসে। নদীতে নিখোঁজ হওয়ার ‘নাটক’ করে সে পালিয়ে গেছে।

এ বিষয়ে কুমারখালী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আমিরুল ইসলাম বলেন, শুরুতে পরিবারের লোকজন জানিয়েছিল, নদীতে গোসলে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছে সোহানা। গতকাল আবার তার বাবা জানিয়েছে, মেয়ে গাজীপুরে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ