বাধা পেরিয়ে স্বপ্ন পূরণের প্রত্যয়
Published: 8th, March 2025 GMT
কেউ বললেন সাফল্যের গল্প। কেউ শোনালেন স্বপ্নের কথা। সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রের নারীরা লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে চলার দুর্দমনীয় সংকল্পের কথা তুলে ধরলেন অতিথিদের সামনে। অনুপ্রাণিত করলেন তাঁদের। অতিথিরাও বিপুল করতালিতে অভিনন্দিত করলেন কৃতীদের।
শনিবার সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফল নারীদের সংবর্ধনা ও তাঁদের দৃপ্তপ্রত্যয়ে এগিয়ে যাওয়ার সংকল্পের ভেতর দিয়ে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদ্যাপন করল প্রথম আলো।
বরাবরের মতোই ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবসে প্রথম আলো নারীদের নিয়ে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ধানমন্ডির ছায়ানট সাংস্কৃতিক ভবন মিলনায়তনে। এতে সহায়তা দিয়েছে সিটি ব্যাংকের নারী ব্যাংকিং সেবা কার্যক্রম ‘সিটি আলো’। অনুষ্ঠানে প্রথম আলো ও সিটি ব্যাংকের নারী কর্মীরা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের অগ্রগণ্য নারী ব্যক্তিত্ব, শিক্ষক, উদ্যোক্তা, চিকিৎসক, ক্রীড়াবিদ, শিক্ষার্থীসহ তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। মিলনায়তনের ধারণ ক্ষমতার অধিক ছিল উপস্থিতি। এবার দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘সমতা ক্ষমতায়ন অধিকার, কন্যা নারী সবার।’
বেলা সাড়ে তিনটায় অনুষ্ঠানের সঞ্চালক প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক সুমনা শারমীন স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘আজ আমরা যখন এখানে নারী দিবসের অনুষ্ঠান করছি, তখন হয়তো দেশের কোথাও কোনো কন্যা রাজপথে হেনস্তার শিকার হচ্ছেন। কোনো নারী গণপরিবহনে নিগৃহীত হচ্ছেন বা সহিংসতার শিকার হচ্ছেন। এ মুহূর্তে মাগুরায় পাশবিকতার শিকার সেই শিশু হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে নারীদের জন্য একটি নিরাপদ সমাজ নির্মাণের প্রত্যাশাকেই তুলে ধরতে চাই।’
অনুষ্ঠানে ছিল কয়েকটি পর্যায়। প্রথমে সফল নারীদের সংবর্ধনা। পোশাক তৈরির প্রতিষ্ঠান মানাস ও রেস্তোরাঁ সঞ্চয়িতার উদ্যোক্তা ফায়জা আহমেদ মঞ্চে এসে বলেন, চারুকলায় প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শেষে তিনি পেশাগত জীবন শুরু করেন ইন্টেরিয়র ডিজাইন নিয়ে। তাঁর স্বপ্ন ছিল স্বাধীনভাবে কাজ করা। একটা সময় তিনি ফ্যাশন ডিজাইন নিয়ে কাজ শুরু করেন। পরে যুক্ত করেছেন রেস্তোরাঁ। কঠিন পথ অতিক্রম করে সফল হয়েছেন।
প্রথম আলো ট্রাস্টের সহায়তায় শিক্ষাবৃত্তি নিয়ে কৃতিত্বের সঙ্গে শিক্ষা শেষে পেশাগত জীবন শুরু করা দুই অদম্য মেধাবী ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক খায়রুম ইসলাম (মাঝে) ও এক্সিম ব্যাংকের কর্মকর্তা তানিয়া আক্তারকে (বাঁয়ে)। তাঁদের অভিনন্দন জানান সেন্ট্রাল উইমেনস ইউনিভার্সিটির উপাচার্য পারভীন হাসান.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।
মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।
এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।
প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।
মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।
নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।