রোজার দিনে কড়া রোদে দীর্ঘ অপেক্ষা
Published: 9th, March 2025 GMT
ঘড়িতে বেলা ১১টা। চট্টগ্রাম নগরের আগ্রাবাদ জাম্বুরি পার্কের পাশে এলোমেলোভাবে দাঁড়িয়ে আছেন ২৫০ জন মানুষ। সুলভ মূল্যের পণ্য নিয়ে ট্রাক আসতেই কিছুটা বিশৃঙ্খলা হলো। পরে নারী ও পুরুষ—দুই সারিতে দাঁড় করালেন বিক্রয়কর্মীরা। এরপর শুরু হয় ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পণ্য বিক্রি কার্যক্রম। তবে কড়া রোদ হওয়ায় পণ্যের জন্য অপেক্ষায় হাঁপিয়ে উঠছিলেন ক্রেতারা।
আজ রোববার আগ্রাবাদ জাম্বুরি পার্কের পাশে টিসিবির পণ্য বিক্রি কার্যক্রমের চিত্র ছিল এমন। পবিত্র রমজান মাসে পণ্যের আশায় কড়া রোদে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা ছিল ভোক্তাদের। রোদের কারণে কেউ ছাতা ধরেছেন, কেউ-বা সঙ্গে আনা বস্তা মাথায় ধরেছেন রোদ থেকে বাঁচতে। অধিকাংশ ভোক্তাকে দেখা গেছে, রোদ থেকে বাঁচতে ছায়ার খোঁজে লাইন থেকে কিছুটা দূরে সরে দাঁড়িয়েছেন।
তাঁদের একজন ষাটোর্ধ্ব আবুল কাশেম। ছয় সদস্যের পরিবার নিয়ে থাকেন চট্টগ্রাম নগরের আগ্রাবাদ এলাকায়। রোদের তীব্রতা থেকে বাঁচতে ফুটপাতে গাছের নিচে বসে ছিলেন। এর আগে ঘণ্টাখানেক দাঁড়িয়ে ছিলেন টিসিবির পণ্য কেনার সারিতে। তিনি বলেন, ছয় সদস্যের পরিবার নিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে ছেলেমেয়েরা। তাই রোদ উপেক্ষা করে টিসিবির পণ্য নিতে এসেছেন। তবে ট্রাক দাঁড়িয়েছে রোডের মধ্যে। তাই রোদ থেকে বাঁচতে এখানে বসেছেন।
এদিন দুপুর ১২টা পর্যন্ত টিসিবির পণ্য নিতে ২৫০–২৬০ জন ভোক্তা সারিতে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ক্রেতাদের ভাষ্য, রোজায় পণ্যগুলো রোদের মধ্যে দেওয়া হচ্ছে। যেহেতু রমজানে ভোক্তাদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়াতে কষ্ট হয়, তাই একটু ছায়ায় পণ্য বিক্রি করলে সুবিধা হয়। তবে টিসিবির কর্মকর্তারা বলছেন, পরিবেশকদের বলা আছে যাতে তাঁরা রোজায় অন্তত ছায়াযুক্ত এলাকায় ট্রাক দাঁড় করিয়ে পণ্য বিক্রি করে।
নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় গত বছরের ২৪ অক্টোবর থেকে চট্টগ্রাম নগরের ২০টি স্থানে ট্রাকের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি কার্যক্রম শুরু করে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। গত ৩১ ডিসেম্বরের পর এ কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। রমজান মাস উপলক্ষে ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে আবার এ কার্যক্রম শুরু করেছে সংস্থাটি।
শুরুতে প্রতি ট্রাকে ২০০ জন করে নগরে প্রতিদিন চার হাজার ভোক্তার কাছে পণ্য বিক্রি করত টিসিবি। তবে প্রতিদিন প্রতি ট্রাক থেকেই অন্তত ৫০ থেকে ১৫০ জন ক্রেতা ফেরত যেতেন। এ ছাড়া ট্রাক থেকে পণ্য নিতে বিশৃঙ্খলা ও হট্টগোল হতো। বিষয়টি মাথায় রেখে গত বুধবার থেকে প্রতিটি ট্রাকের বরাদ্দ ২০০ থেকে বাড়িয়ে ৪০০ জন করা হয়েছে। পাশাপাশি ৫০০ গ্রামের পরিবর্তে খেজুরের পরিমাণ জনপ্রতি এক কেজি করা হয়েছে।
বর্তমানে চট্টগ্রাম নগরে প্রতিদিন ২০টি ওয়ার্ডের আট হাজার গ্রাহকের কাছে ট্রাকে করে তেল, ডাল, চিনি, ছোলা ও খেজুর বিক্রি করা হচ্ছে। একজন ভোক্তা সর্বোচ্চ দুই লিটার ভোজ্যতেল, দুই কেজি মসুর ডাল, এক কেজি চিনি, দুই কেজি ছোলা ও এক কেজি খেজুর কিনতে পারবেন। সব মিলিয়ে এর মূল্য ৬৬৫ টাকা। পণ্য কিনতে আপাতত পরিবার কার্ডের প্রয়োজন হচ্ছে না।
তবে এ মাসে টিসিবির কার্যক্রমে এখনো চাল দেওয়া হচ্ছে না। খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন টিসিবি ৩০ টাকা দরে এসব চাল বিক্রি করে। অনুমোদন না নেওয়ার কারণে চাল বিক্রি হচ্ছে না। তবে আগামী মাসে ট্রাকে চাল বিক্রি হবে বলে জানিয়েছেন টিসিবির কর্মকর্তা। টিসিবি ছাড়া নগরে প্রতিদিন ২৫ টন ও প্রতি উপজেলায় ৩ টন করে ওএমএস দোকানের মাধ্যমে চাল বিক্রি করে খাদ্য অধিদপ্তর।
টিসিবি চট্টগ্রামের যুগ্ম পরিচালক মো.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সংগীতশিল্পী দীপ মারা গেছেন
রাস্টফ ব্যান্ডের ভোকাল আহরার মাসুদ মারা গেছেন। সেমাবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। ভক্তদের কাছে দীপ নামে পরিচিত ছিলেন আহরার মাসুদ।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টায় ব্যান্ডের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে এ তথ্য জানানো হয়। তবে এ শিল্পীর মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি।
আরো পড়ুন:
৫০ শয্যার থানচি হাসপাতাল চলছে একজন চিকিৎসকে
সিজেএফবি পারফরম্যান্স অ্যাওয়ার্ড ঘোষণা
রাস্টফ ব্যান্ডের ফেসবুক পেজে দীপের মৃত্যুর খবর জানিয়ে লেখা হয়, “এমন এক বেদনাদায়ক মুহূর্তে সঠিক শব্দ খুঁজে পাওয়া বা কোনো শব্দ খুঁজে পাওয়া—প্রায় অসম্ভব। প্রিয় ভোকালিস্ট, বন্ধু ও সহযাত্রী আহারার ‘দীপ’ মাসুদের মৃত্যুসংবাদ আমাদের স্তম্ভিত করেছে। আমরা শোকে ভেঙে পড়েছি, এখনো অবিশ্বাসের ভেতর ডুবে আছি। গত রাতেই তিনি আমাদের ছেড়ে চিরবিদায় নিয়েছেন।”
দীপের শূন্যতা ব্যাখ্যা করে লেখা হয়, “তার পরিবার, বন্ধু ও প্রিয়জনদের প্রতি আমাদের অন্তরের সমবেদনা ও প্রার্থনা। আপনাদের মতো আমরাও এই অপূরণীয় ক্ষতি বোঝার চেষ্টা করছি, চেষ্টা করছি দীপের অসাধারণ প্রতিভাকে সম্মান জানাতে এবং তার চেয়েও বড় কথা—মানুষ হিসেবে তিনি আমাদের কাছে যে অমূল্য ছিলেন, তাকে স্মরণ করতে। এই কঠিন সময়ে সবার কাছে অনুরোধ, দয়া করে পরিবার ও কাছের মানুষদের ব্যক্তিগত পরিসরকে সম্মান করুন এবং তার আত্মার শান্তির জন্য প্রার্থনা করুন। শান্তিতে ঘুমাও, দীপ। তোমার শূন্যতা চিরকাল বেদনাময় হয়ে থাকবে।”
তরুণদের কাছে জনপ্রিয় আরেকটি ব্যান্ড পাওয়ারসার্চও দীপের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে। ব্যান্ডের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে লেখা হয়েছে, “স্মরণ করছি আহরার মাসুদ দীপকে। কিছুক্ষণ আগে আমরা হারিয়েছি আমাদের প্রিয় ভাই, ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং এক সত্যিকারের শিল্পীকে। এক্লিপস, কার্ল, ক্যালিপসো ও সবশেষ রাস্টফ ব্যান্ডের অবিস্মরণীয় কণ্ঠ আহরার মাসুদ দীপ আমাদের মাঝে আর নেই। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।”
পাওয়ারসার্চ আরো লেখেন, “আহরার মাসুদ দীপ শুধু একজন ভোকালিস্টই ছিলেন না, তিনি ছিলেন শক্তি, সৃজনশীলতা আর আবেগের প্রতীক, যিনি তার চারপাশের সবাইকে অনুপ্রাণিত করেছেন; একই সাথে তার অত্যন্ত নমনীয় ব্যবহার, যা সবাইকে তাঁর শুভাকাঙ্ক্ষীই করে ফেলত! শান্তিতে থাকো ভাই, তুমি সব সময় আমাদের গল্পের অংশ হয়ে থাকবে।”
ঢাকা/শান্ত