কুমিল্লায় বালুর ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষে সংঘর্ষ, টেঁটাবিদ্ধসহ আহত ৩১
Published: 12th, March 2025 GMT
ছবি: সংগৃহীত
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সীতাকুণ্ডে মধ্যরাতে স্বেচ্ছাসেবক দল ও যুবদলের ৪ নেতাকে বহিষ্কার
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দল ও যুবদলের চার নেতাকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। দলটির সাবেক যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরীর মনোনয়ন না পাওয়াকে কেন্দ্র করে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ ও টায়ারে অগ্নিসংযোগ করার ঘটনার পর এ সিদ্ধান্ত এল।
রাতে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়। প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি বিএনপির মিডিয়া সেলের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে পোস্ট দেওয়া হয়।
বহিষ্কৃত নেতারা হলেন সীতাকুণ্ড উপজেলা সেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আলাউদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক হেলাল উদ্দিন বাবর, সীতাকুণ্ড পৌরসভার আহ্বায়ক মো. মামুন, যুবদলের সোনাইছড়ীর সাধারণ সম্পাদক মমিন উদ্দিন।
বিএনপির মিডিয়া সেলের ফেসবুক পেজের পোস্টে দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, গতকাল সোমবার সন্ধ্যার পরে দলীয় মনোনয়নকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সীতাকুণ্ডে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কদমরসুল, ভাটিয়ারী বাজার, জলিল গেট এলাকায় সহিংসতা, হানাহানি ও রাস্তা অবরোধসহ নানাবিধ জনস্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হওয়ায় ওই চার নেতাকে প্রাথমিক সদস্যসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য গতকাল সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ২৩৭ আসনে দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনে দলীয় প্রার্থী হিসেবে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের নাম ঘোষণা করা হয়। বাদ পড়েন কেন্দ্রীয় বিএনপির সাবেক যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরী। সন্ধ্যা সাতটার দিকে এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ভাটিয়ারী, সলিমপুরসহ বিভিন্ন স্থানে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন বিএনপির নেতা–কর্মীরা। রাত নয়টার দিকে ভাটিয়ারী রেলস্টেশন এলাকায় রেললাইনের ওপর কাঠের স্লিপার তুলে আগুন ধরিয়ে দেন। ফলে রেল চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এই সময় তাঁরা নানা রকম স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন।
রাত ১১টার দিকে আসলাম চৌধুরীর পক্ষে বিক্ষুব্ধ নেতা–কর্মীদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়ার পর বিক্ষুব্ধ নেতা–কর্মীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ও রেলপথ থেকে ছেড়ে দেন।
ফলে দীর্ঘ চার ঘণ্টা আটকে থাকা যানবাহন ও ট্রেন চলাচল শুরু হয়।
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি মো. মোরসালীন গতকাল রাত সোয়া ১১টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, আসলাম চৌধুরী মনোনয়ন না পাওয়ার খবরে নেতা–কর্মীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে যে যাঁর মতো করে মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে অবরোধ করেন। ফলে যানজট সৃষ্টি হয়। যার কারণে আসলাম চৌধুরীর নিজেরও চট্টগ্রাম থেকে তাঁর নিজ বাড়িতে ফিরতে দেরি হয়। আসলাম চৌধুরী বাসায় ফিরে বিক্ষুব্ধ নেতা–কর্মীদের কাছে সড়ক থেকে সরে যাওয়ার জন্য বার্তা দেন। ফলে তিনি (মোরসালীন) নিজেই নেতা–কর্মীদের সরে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন ইউনিটে খবর দেন।
এরপর রাত ১১টার দিকে নেতা–কর্মীরা মহাসড়ক ছেড়ে দেন। আজ মঙ্গলবার বেলা তিনটায় জলিল টেক্সটাইল গেট এলাকায় বাদশা ফেয়ারল্যান্ড নামে একটি কমিউনিটি সেন্টারে দলীয় একটি সভা হবে। সে সভায় সিদ্ধান্ত দলের হাইকমান্ডের কাছে পাঠানো হবে।
এদিকে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর গতকাল রাতে কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের অনুসারী নেতা–কর্মীরা বাঁশবাড়িয়া, বাড়বকুণ্ডসহ বিভিন্ন স্থানে আনন্দ মিছিল করেছেন।
আজকের সভাটি দলীয় সভা নয় বলে জানিয়েছেন উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব কাজী মোহাম্মদ মহিউদ্দিন। তিনি চট্টগ্রাম-৪ আসনের বিএনপি'র মনোনয়ন পাওয়া কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের বড় ভাই।
গতকাল রাত সাড়ে ১১টার দিকে কাজী মোহাম্মদ মহিউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, আগামীকাল দলীয় কোনো সভা ডাকা হয়নি। মনোনয়ন বিষয়ে পর্যালোচনা সভায় আরও ২-৩ দিন পর ডাকা হবে। তিনি বলেন, আসলাম চৌধুরী ও দলকে পৃথক করা যাবে না। কিন্তু কেন তিনি মনোনয়ন পাননি, তা কেবল দলের হাইকমান্ড এবং আসলাম চৌধুরী জানেন। দলের হাইকমান্ড যা সিদ্ধান্ত দিয়েছে, তা মেনে আগামী নির্বাচনের সবাই মিলে দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ী করার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।