রাখাইনে ‘মানবিক করিডর’ দেওয়ার আহ্বান ফোর্টিফাই রাইটসের
Published: 12th, March 2025 GMT
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে গৃহযুদ্ধের শিকার বেসামরিক নাগরিকদের মানবিক সহায়তা এবং বাণিজ্যিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে বাংলাদেশ ও আরাকান আর্মিকে ‘মানবিক করিডর’ দিতে বলেছে ফোর্টিফাই রাইটস। থাইল্যান্ডভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠনটি গতকাল মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই আহ্বান জানিয়েছে।
তথ্য–প্রমাণ বিশ্লেষণ করে ফোর্টিফাই রাইটস বলছে, মিয়ানমারের সামরিক জান্তা নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে রাখাইনে জীবন রক্ষাকারী মানবিক সহায়তা প্রবেশে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। ফলে সাধারণ জনগণের প্রাণহানি এড়ানো সম্ভব হচ্ছে না। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস আসন্ন বাংলাদেশ সফরে সীমান্তের দুই পাশের মানবিক চাহিদা নিয়ে আলোচনা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
জাতিসংঘের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মিয়ানমারের জান্তা সরকার এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আরাকান আর্মির মধ্যে সংঘাত শুরুর পর মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ৫ লাখ ১৯ হাজারের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েছেন। আর ২০ লাখের বেশি মানুষের জরুরি খাদ্য, ওষুধ ও মানবিক সহায়তার প্রয়োজন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক বৈদেশিক সহায়তা হ্রাসের ঘোষণা মানবিক সংকটকে আরও জটিল করে তুলেছে। ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপ প্রকারান্তরে মিয়ানমারের সামরিক জান্তার স্বার্থকে রক্ষা করছে।
ফোর্টিফাই রাইটসের মানবাধিকার সহযোগী এজাজ মিন খান্ত বলেন, অধিকার রক্ষাকারী দেশগুলোর উচিত মিয়ানমারে যে জনগোষ্ঠী সংকটে আছে তাদের কাছে জীবন রক্ষাকারী সাহায্য সরবরাহ সহজতর করার জন্য সকল সম্ভাবনার সুযোগ যাচাই করে দেখা। বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে একটি ‘মানবিক করিডর’ চালু করা সব সম্প্রদায়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এ পদক্ষেপ না নিলে প্রাণহানি ঘটতে থাকবে।
কীভাবে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা মানবিক সহায়তার ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে, তা নথিভুক্ত করেছে ফোর্টিফাই রাইটস। ওই বিধিনিষেধের ফলে বেসামরিক লোকজন প্রাণ হারাচ্ছেন। সামরিক জান্তা বাণিজ্যের পথও বন্ধ করে দিয়েছে। এতে রাখাইনে খাদ্য ও ওষুধের ঘাটতি প্রকট হয়ে উঠেছে। ট্রাম্প প্রশাসন ২০২৫ সালে মিয়ানমারের প্রত্যাশিত সাহায্য ২৫৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার কমিয়েছে বলে জানা গেছে। যার মধ্যে মানবিক ত্রাণের জন্য নির্ধারিত ১৭০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারও রয়েছে। যা দেশের সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে আটকা পড়া বেসামরিক নাগরিকদের জীবনের ওপর ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ফ র ট ফ ই র ইটস র খ ইন
এছাড়াও পড়ুন:
নতুন বাংলাদেশ গড়তে শ্রম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন করবে সরকার: প্রধান উপদেষ্টা
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, শ্রমিকদের আগের অবস্থায় রেখে নতুন বাংলাদেশ গড়া সম্ভব নয়। এ জন্য তিনি শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবসমূহ বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
আজ বৃহস্পতিবার মহান মে দিবস এবং জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবস-২০২৫ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টা এ কথা বলেন। রাজধানীর বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘আমাদের প্রথম কাজ হলো শ্রম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী আশু করণীয় নিয়ে যাত্রা শুরু করা। এরপর পর্যায়ক্রমে প্রতিটি সুপারিশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে হবে।’
‘শ্রমিক মালিক এক হয়ে গড়ব এ দেশ নতুন করে’ স্লোগানকে সামনে রেখে এবারের মে দিবস পালিত হচ্ছে। বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা পাঁচ শ্রমিকের পরিবারের হাতে শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহায়তার চেক তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান, শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান সুলতান উদ্দিন আহম্মদ প্রমুখ বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) মহাপরিচালক গিলবার্ট এফ হাংবোর একটি ভিডিও বার্তা প্রচার করা হয়।