পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশে ট্রেন হামলার ঘটনায় দেশটির সেনাবাহিনীর বিশেষ অভিযানে ৩৪৬ জন যাত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ অভিযানে ৩৩ জন সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে এবং অন্তত ২৮ জন সেনাসদস্য প্রাণ হারিয়েছেন।

বুধবার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, দুদিনের দীর্ঘ অভিযানের পর সব যাত্রীকে নিরাপদে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। অভিযানে সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনী, ফ্রন্টিয়ার কর্পস এবং এসএসজি কমান্ডোরা অংশ নেন। সূত্র: এএফপি, ডন।

গত মঙ্গলবার (১১ মার্চ) দুপুরে কোয়েটা থেকে পেশোয়ারের উদ্দেশে যাত্রা করা জাফর এক্সপ্রেস ট্রেনে হামলা চালায় বেলুচিস্তানের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী বেলুচ লিবারেশন আর্মি (BLA)। সন্ত্রাসীরা একটি রেলপথ উড়িয়ে দিয়ে ট্রেনটি থামিয়ে দেয় এবং যাত্রীদের জিম্মি করে। 

সেনাবাহিনীর আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী জানান, দুর্গম এলাকা ও মানবঢাল ব্যবহারের কারণে অভিযান চালানো কঠিন ছিল। তবে সেনাবাহিনীর নির্ভুল হামলায় একে একে সন্ত্রাসীদের নির্মূল করা হয়।

তিনি বলেন, "অভিযানের সময় সন্ত্রাসীরা স্যাটেলাইট ফোনের মাধ্যমে আফগানিস্তানে তাদের সমর্থকদের সঙ্গে যোগাযোগ করছিল। সেনাবাহিনীর স্নাইপাররা আত্মঘাতী হামলাকারীদের হত্যা করে একের পর এক বগিতে প্রবেশ করে যাত্রীদের উদ্ধার করেন।"

অভিযানে ২৭ জন সেনাসদস্য ট্রেনে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় নিহত হন এবং অভিযানের সময় আরও একজন সেনা প্রাণ হারান। অপরদিকে, ৩৩ জন সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে সেনাবাহিনী। 

এই অভিযানের মাধ্যমে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে বড় ধরনের সাফল্য অর্জন করেছে বলে দাবি করেছে আইএসপিআর।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

রাঙামাটির পাহাড়ে ইউপিডিএফের আস্তানায় সেনা অভিযান

রাঙামাটির দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) আস্তানায় অভিযান চালিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সকালে চালানো এই অভিযানে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।

আইএসপিআর জানায়, সেনাবাহিনী ঘটনাস্থল থেকে একে-৪৭ রাইফেলসহ বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে। অভিযান এখনো চলছে। 

১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রামের দীর্ঘদিনের সংঘাত নিরসনে তৎকালীন সরকার ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) মধ্যে শান্তিচুক্তি সই হয়। চুক্তিতে বহু ধারার উল্লেখ ছিল—এর কিছু বাস্তবায়ন করা হয়, আর বাকিগুলোর বাস্তবায়নের জন্য সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়। তবে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশের অভিযোগ, চুক্তির অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ ধারা এখনও বাস্তবায়িত হয়নি।

এই চুক্তির বিরোধিতা করেই ১৯৯৮ সালের জুনে আত্মপ্রকাশ করে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)। সংগঠনটি মূলত চুক্তিবিরোধী অবস্থান নিয়ে পাহাড়ি তরুণদের মধ্যে শক্ত অবস্থান গড়ে তোলে।

এরপর থেকেই পার্বত্য অঞ্চলে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ইউপিডিএফ ও জেএসএসের মধ্যে বিরোধ চরমে ওঠে। দুই সংগঠনের সংঘর্ষে বিভিন্ন সময়ে বহু কর্মী নিহত হন, আর সশস্ত্র সহিংসতায় পাহাড়জুড়ে বিরাজ করে আতঙ্ক।

২০১০ সালে জেএসএসের মূল ধারা (সন্তু লারমা নেতৃত্বাধীন) থেকে একটি অংশ বেরিয়ে এসে জেএসএস (এম এন লারমা) নামে নতুন একটি সংগঠন গঠন করে।

পরে ২০১৭ সালে ইউপিডিএফের অভ্যন্তরীণ বিভাজনের পর প্রসীত খিসার নেতৃত্বাধীন মূল সংগঠন থেকে আলাদা হয়ে আরেকটি অংশ ইউপিডিএফ-গণতান্ত্রিক নামে আত্মপ্রকাশ করে। 

ঢাকা/হাসান/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সারা দেশে সাত দিনে যৌথ বাহিনীর অভিযানে আটক ২৮৮
  • রাঙামাটিতে ইউপিডিএফের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর অভিযান, অস্ত্র-গুলি উদ্ধার: আইএসপিআর
  • রাঙ্গামাটিতে ইউপিডিএফের আস্তানায় সেনাবাহিনীর অভিযান, একে৪৭সহ অস্ত্র–গোলাবারুদ উদ্ধার: আইএসপিআর
  • রাঙামাটির পাহাড়ে ইউপিডিএফের আস্তানায় সেনা অভিযান