জামিনে বেরিয়েই স্বপদে বহালের জন্য তদবির ডালিম চেয়ারম্যানের
Published: 14th, March 2025 GMT
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মামলায় জামিনে বেরিয়ে এসেই স্বপদে বহাল থাকার জন্য তদবির চালিয়ে আসছেন কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামিলীগের সাধারণ সম্পাদক ও চেয়্যারম্যান ফাইজুল ইসলাম ডালিম।
এর আগে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি আড়াইহাজার থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। কিন্তু তার কিডনীজনিত সমস্যা থাকার কারণে ২২ দিন পর জামিন পান তিনি।
জানা যায়, গত ১১ মার্চ কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নের সকল মেম্বারের সাইনিং নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রশাসক নিয়োগ করেছেন। প্রশাসক নিয়োগের একদিন পরেই জামিন পান ডালিম। কিন্তু তিনি চেয়ারম্যান পদে স্বপদে বহাল হওয়ার জন্য ভিবিন্ন মেম্বারদের হুমকি প্রদান এবং বিএনপির উপর মহলে নানান তদবীর চালিয়ে আসছেন।
তার আগে, গত ৫ই আগস্টের পর শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে যখন আওয়ামী লীগের নেতারা পলাতক রয়েছেন তখন স্থানীয় বিএনপি কয়েকজন নেতার আশ্রয়ে তিনি নিজ এলাকায় অবস্থান করেন। যা নিয়ে ক্ষোভ কাজ করে স্থানীয়দের মধ্যে।
একে ফজলুল হক ডালিম বর্তমানে কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে ২০২১ সালের ২৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে চেয়ারম্যান হোন। তার প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী আরেক আওয়ামী লীগ নেতা সাইফুল ইসলাম স্বপন।
এদিকে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করার আগে ফাইজুল ইসলাম ডালিম আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি নজরুল ইসলাম বাবুর অনুসারী ছিলেন। পরে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এমপি বাবু তাকে সমর্থন না দিলে সে তখন শামীম ওসমানের অনুসারী হোন।
তবে পরে দিয়ে বাবুর সঙ্গে যোগসাজশ হয় তার। এর ফলে সারাদেশে যখন আওয়ামী লীগের অবস্থা শোচনীয় তখন দাপটের সঙ্গে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন একে ফাইজুল হক ডালিম। তবে এ নিয়ে পরে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশ হলে ডিবির হাতে গ্রেপ্তার হোন তিনি।
ডালিম চেয়ারম্যান একসময় নৌকার বিপক্ষে নির্বাচন করলেও নির্বাচনে শামীম ওসমানের কথায় প্রশাসন তখন তার পক্ষে কাজ করে।
চেয়ারম্যান হওয়ার পরে তিনি এলাকাতে আওয়ামীলীগের রাজত্ব কায়েম করেন। তাই তিনি আবারও বহাল তবিয়তে থাকার চেষ্টা করছেন এ নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ল ইসল ম আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।