নওগাঁ মেডিকেল কলেজ বন্ধ করা হলে চাল সরবরাহ বন্ধসহ কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে নওগাঁ মেডিকেল কলেজ রক্ষা আন্দোলন কমিটি। শনিবার শহরের মুক্তির মোড়ে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা এ হুঁশিয়ারি দেন। জেলার সর্বস্তরের জনগণ ও মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। 

এর আগে শুক্রবার শিক্ষার্থীদের আহ্বানে মেডিকেল কলেজের চলমান ইস্যু নিয়ে মতবিনিময় সভা হয়েছে। এতে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন, চিকিৎসক ও ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় জেলা বিএমএর সভাপতি চিকিৎসক ইস্কেন্দার হোসেনকে আহ্বায়ক করে নওগাঁ মেডিকেল কলেজ রক্ষা আন্দোলন কমিটি গঠন হয়। 

ইস্কেন্দার হোসেনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সমবায়বিষয়ক সম্পাদক নজমুল হক, পৌর কমিটির সভাপতি মিজানুর রহমান, জেলা ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক রাকিব হোসেন, প্রেস ক্লাবের সভাপতি এস এম রায়হান আলম, সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আজাদ হোসেন, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি মনিরুল হক, শিক্ষার্থী হাসিবুল হাসান রাকিব, নুসাইবা বিনতে হক প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, নওগাঁ মেডিকেল কলেজ মানহীন হতে পারে না। এ কলেজের ফলাফল অন্য কলেজের চেয়ে ভালো। শুধু ভবন না থাকা একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মান যাচাইয়ের মাপকাঠি হতে পারে না। মানহীন হলে এর দায়ভার সরকারের। মানোন্নয়ন না করে মানহীন আখ্যা দিয়ে বন্ধ করতে যাচ্ছে, এটি হঠকারী ছাড়া কিছুই না।

এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে মেডিকেল শিক্ষা ও চিকিৎসা খাতে ঘাটতি তৈরি হবে উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা ও সংকুচিত হয়ে পড়বে। এ ধরনের সিদ্ধান্ত থেকে সংশ্লিষ্টদের সরে আসার দাবি জানান তারা। অন্যথায় বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন। 

নওগাঁ মেডিকেল কলেজ রক্ষা আন্দোলন কমিটির আহ্বায়ক ইস্কেন্দার হোসেন বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার মানহীন তকমা লাগিয়ে নওগাঁসহ ছয়টি সরকারি মেডিকেল কলেজ বন্ধ করে দিতে চাচ্ছে বলে তারা জানতে পেরেছেন। এ কলেজ মানহীন হতে পারে না। এখানে প্রতি চারজন শিক্ষার্থীর জন্য একজন করে শিক্ষক আছেন, সবাই দক্ষতাসম্পন্ন। রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ২৬টি মেডিকেল কলেজের পরীক্ষায় নওগাঁ প্রথম বা দ্বিতীয় স্থানে থাকা। 

ভালো ফলাফল সত্ত্বেও এ মেডিকেল কলেজ বন্ধের সিদ্ধান্ত সরকারের হঠকারিতা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ কলেজ বন্ধ করা হলে নওগাঁ থেকে চাল, আম সবরাহ বন্ধ এবং অনশনসহ কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। বিএনপির সহ-সমবায়বিষয়ক সম্পাদক নজমুল হক বলেন, মেডিকেল কলেজ বন্ধের সিদ্ধান্ত নওগাঁবাসী মেনে নেবে না। প্রতিষ্ঠান বন্ধ কোনো সমাধান হতে পারে না। 

এ বিষয়ে নওগাঁ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা.

মুক্তার হোসেন বলেন, নতুন ছয়টি মেডিকেল কলেজের মধ্যে মানের দিক থেকে নওগাঁ এগিয়ে আছে। সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমে তারা জেনেছেন, নতুন মেডিকেল কলেজগুলোর মান যে পর্যায়ে উন্নত হওয়ার কথা ছিল, তা হয়নি। এ কারণে সরকার শিক্ষার্থীদের অন্য কলেজে নিয়ে এসব কলেজ বন্ধের কথা ভাবছে। এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসেনি।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: নওগ ম ড ক ল কল জ র বন ধ ক বন ধ র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ঈদের পর ঢিলেঢালা বাজার, পণ্যের দামও কমেছে

কোরবানি ঈদের চার দিন পরেও নিত্যপণ্যের বাজারে বেশ ঢিলেঢালা ভাব দেখা গেছে। বাজারে ক্রেতার উপস্থিতি যেমন কম, অন্যদিকে অনেক দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া ঈদের আগমুহূর্তে মুরগি, শসাসহ কিছু পণ্যের যে দাম বেড়েছিল, সেটিও কমেছে। 

গত শনিবার ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ অনুষ্ঠিত হয়। এবারের ঈদে টানা ১০ দিনের ছুটি রয়েছে, যা শেষ হবে ১৪ জুন শনিবার। লম্বা এই ছুটিতে যাঁরা রাজধানীর বাইরে গেছেন, তাঁদের অনেকে এখনো ঢাকায় ফেরেননি। সবজি, মাছ ইত্যাদি ছাড়া অন্যান্য ভোগ্যপণ্যের সরবরাহ–শৃঙ্খলও সেভাবে সচল হয়নি।

বিক্রেতারা জানান, ক্রেতা কম থাকায় গত কয়েক দিনেই খুবই ঢিলেঢালাভাবে বিক্রি হয়েছে। তবে আজ শুক্রবার থেকে বেচাকেনা ভালোভাবে শুরু হবে বলে আশা করছেন তাঁরা। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, টাউন হল বাজার ও কারওয়ান বাজার ঘুরে এবং বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

কোরবানির ঈদের আগে হঠাৎ বাজারে শসা, কাঁচা মরিচ, গাজর, টমেটো ও লেবুর দাম বেড়ে গিয়েছিল। মূলত ওই সময় এসব পণ্যের চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়েছিল। তবে ঈদের পরে সেই দাম কমেছে। গতকাল বাজারে প্রতি কেজি শসা ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ঈদের আগে শসার কেজি ছিল ১০০ থেকে ১২০ টাকা। কোথাও এর চেয়ে বেশি দামেও শসা বিক্রি হয়েছিল। বাজারে গতকাল প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে ৫০-৬০ টাকায়, যা ঈদের আগে ১২০ থেকে ১৬০ টাকা ছিল। সালাদ পণ্যের মধ্যে টমেটোর দাম এখনো বেশি রয়েছে। গতকাল পর্যন্ত প্রতি কেজি টমেটো বিক্রি হয়েছে ১০০-১২০ টাকায়, যা ঈদের আগেও একই ছিল।

বাজারে অন্যান্য সবজির দামও স্থিতিশীল রয়েছে। অধিকাংশ সবজিই ৪০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। যেমন লাউ, পেঁপে, পটোল, চিচিঙ্গা, ঝিঙে, ধুন্দুল প্রভৃতি সবজি ৪০-৫০ টাকায় এবং বরবটি, ঢ্যাঁড়স, কাঁকরোল, করলা, বেগুন প্রভৃতি সবজি ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া প্রতি কেজি আলু ২০-২২ টাকা ও পেঁয়াজ ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

কোরবানি ঈদের পরপর বাজারে গরু, খাসি ও মুরগির মাংসের চাহিদা তুলনামূলক কম। এ কারণে মাংসের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের উপস্থিতিও কম দেখা গেছে। ঈদের আগে মুরগির দাম বেড়েছিল, সেটি কমেছে। তবে গরু ও খাসির দাম আগের মতোই রয়েছে। গতকাল প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৭০-১৮০ টাকা ও সোনালি মুরগি ২৫০-৩০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হয়েছে। ঈদের আগে এই দাম কেজিতে ২০-৩০ টাকা বেশি ছিল। আর ফার্মের মুরগির ডিমের দাম আগের মতোই ডজন ১৩০ টাকা রয়েছে। মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে গরুর মাংস বিক্রেতা মো. রানা বলেন, বর্তমানে সাধারণ গ্রাহক খুব কম। তবে ঈদ–পরবর্তী বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য মাংস বিক্রি হচ্ছে।

মাছের বাজারেও কমসংখ্যক ক্রেতা দেখা গেছে। অধিকাংশ মাছের দাম কিছুটা কমেছে। গতকাল প্রতি কেজি চাষের রুই ৩২০-৩৮০
টাকা, তেলাপিয়া ২২০-২৪০ টাকা, পাঙাশ ২০০-২৩০ টাকা, কই ২৩০-২৫০ টাকা, চিংড়ি ৭০০-৮৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আকারভেদে ইলিশের দামও কেজিতে ১০০-৩০০ টাকার মতো কমেছে।

অন্যান্য মুদিপণ্যের মধ্যে চাল, ডাল, তেল প্রভৃতি আগের দামেই বিক্রি হতে দেখা গেছে। বর্তমানে বাজারে ডায়মন্ড, মঞ্জুর, সাগরসহ অধিকাংশ মিনিকেট চাল প্রতি কেজি ৭২-৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম রাখা হচ্ছে ১৮৯ টাকা। 

রাজধানীর মোহাম্মদপুর টাউন হল বাজারে কথা হয় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা সাব্বির আলমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ঈদের ছুটি শেষে গতকাল সকালেই ঢাকায় ফিরেছি। বাসায় মাছ, মাংস আছে; শুধু সবজি কিনতে বাজারে এসেছি।’ 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নেপাল থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু
  • সুপারম্যানের কাছে আছে পৃথিবীর শক্তি সংকটের সমাধান
  • ইরান হরমুজ প্রণালি বন্ধ করলে কী কী ঘটতে পারে?
  • ইরান–ইসরায়েলের পাল্টাপাল্টি হামলা রূপ নিতে পারে দীর্ঘমেয়াদি সংঘাতে
  • ইরানে হামলার আগে গোপনে ইসরায়েলে হেলফায়ার ক্ষেপণাস্ত্র পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র
  • ভারত থেকে আইফোন রপ্তানি কেন বাড়ছে
  • সুনামগঞ্জে তাজা গ্রেনেড উদ্ধারের পর নিষ্ক্রিয় করল সেনাবাহিনী
  • কমেছে সবজির দাম
  • বাজারে সবজির সরবরাহ বেড়েছে, নিম্নমুখী চালের দাম
  • ঈদের পর ঢিলেঢালা বাজার, পণ্যের দামও কমেছে