বিশ্ব ক্রিকেটে বড়সড় চমক নিয়ে আসছে সৌদি আরব। আইপিএলের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকার একটি বৈশ্বিক টি-টোয়েন্টি লিগ চালুর পরিকল্পনা করছে দেশটি। অস্ট্রেলিয়ার ‘দ্য এজ’ পত্রিকার প্রতিবেদন অনুযায়ী, টেনিসের গ্র্যান্ড স্ল্যাম মডেলে এই লিগ আয়োজিত হবে, যেখানে আটটি দল চারটি ভেন্যুতে অংশ নেবে।

লিগটি সৌদির ‘এসআরজে স্পোর্টস ইনভেস্টমেন্টস’-এর পৃষ্ঠপোষকতায় গড়ে উঠছে। এই প্রতিষ্ঠানটি দেশটির এক ট্রিলিয়ন ডলারের তহবিলের অংশ। লক্ষ্য—বিশ্ব ক্রিকেটে নতুন দিগন্ত তৈরি ও বিকল্প রাজস্ব উৎস সৃষ্টি। বিশেষ করে, ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের বাইরেও ক্রিকেটের অর্থনৈতিক ভিত্তি দৃঢ় করাই তাদের প্রধান উদ্দেশ্য।

এই লিগের পেছনে রয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক ক্রিকেটার ও প্লেয়ার ম্যানেজার নিল ম্যাক্সওয়েল। তিনি এটিকে আইপিএল, বিগ ব্যাশ ও অন্যান্য টি-টোয়েন্টি লিগের সমকক্ষ করার লক্ষ্যে কাজ করছেন।

সৌদি আরব ইতোমধ্যে ফুটবল, গলফ, ফর্মুলা ওয়ান ও বক্সিংয়ে বিপুল বিনিয়োগ করেছে। ক্রিকেটেও আগ্রহ বাড়িয়েছে তারা। ২০২৫ সালের আইপিএলের নিলাম জেদ্দায় আয়োজন করে ক্রিকেট বিশ্বে আলোচনায় এসেছে সৌদি। এছাড়া ক্রিকেট উন্নয়নে ইতোমধ্যে ৫০০ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ দিয়েছে দেশটি এবং নতুন লিগে প্রায় ৮০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে। তবে লিগটি শুরু করতে হলে আইসিসি, ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া এবং বিশেষ করে বিসিসিআইয়ের অনুমোদন প্রয়োজন হবে, যা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে। 

এই ‘গ্র্যান্ডস্লাম টি-টোয়েন্টি লিগ’ যদি বাস্তবায়ন হয়, তাহলে তা বিশ্ব ক্রিকেটে বিপ্লব ঘটাতে পারে এবং ছোট ক্রিকেট খেলুড়ে দেশগুলোর জন্যও নতুন সুযোগের দুয়ার খুলে দিতে পারে। সৌদির এই উদ্যোগ তাদের ‘ভিশন ২০৩০’-এর কৌশলগত অংশ, যার লক্ষ্য ক্রীড়া বিনিয়োগের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক পরিবর্তন সাধন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স দ আরব

এছাড়াও পড়ুন:

বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস

রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।

‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।

এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।

বর্ষার ফুলের উৎসব

বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!

রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।

এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ