বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি সর্বনিম্ন পর্যায়ে
Published: 16th, March 2025 GMT
বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি আরও কমে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছে। জানুয়ারিতে ঋণ প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ১৫ শতাংশ। এর আগে গত ডিসেম্বরে প্রবৃদ্ধি ছিল ৭ দশমিক ২৮ শতাংশ। সাম্প্রতিক সময়ের এ প্রবৃদ্ধি যে কোনো সময়ের তুলনায় কম। এর আগে করোনা অতিমারির পর ২০২১ সালের মে মাসে একবার বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৫৫ শতাংশে নেমেছিল। এ ছাড়া বেশির ভাগ সময় প্রবৃদ্ধি দুই অঙ্কের ঘরে ছিল।
ব্যাংক খাত সংশ্লিষ্টরা জানান, উচ্চ সুদহারের কারণে ব্যবসার খরচ বেড়ে যাওয়ায় এখন বিনিয়োগ চাহিদা কম। ডলার সংকট কিছুটা কাটলেও এখনও নানা সমস্যা রয়েছে। আবার রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিয়ে রয়েছে প্রশ্ন। এর মধ্যে আমানত প্রবৃদ্ধি কমে সাড়ে ৭ শতাংশের নিচে নামায় ব্যাংকগুলোর হাতে বিনিয়োগযোগ্য তহবিল কম। এ ছাড়া বিদ্যুৎ, গ্যাসের সংকট এখনও কাটেনি। আবার দেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর যাদের হাতে টাকা রয়েছে, তাদের অনেকেই পলাতক। সব মিলিয়ে ঋণ প্রবৃদ্ধি সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত জানুয়ারি পর্যন্ত বেসরকারি খাতের ঋণ স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১৬ লাখ ৮০ হাজার ১১০ কোটি টাকা। আগের বছরের একই মাস শেষে যা ১৫ লাখ ৬৭ হাজার ৯৪৩ কোটি টাকা ছিল। বর্তমানের এ প্রবৃদ্ধি গড় সুদহারের অনেক কম। বর্তমানে ব্যাংক ঋণের গড় সুদহার রয়েছে প্রায় ১২ শতাংশ। গত বছরের একই সময়ে যা ৮ শতাংশের নিচে ছিল।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে ২০০৫-০৬ অর্থবছর থেকে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির তথ্য রয়েছে। দীর্ঘ এ সময়ে শুধু ২০২১ সালের মে মাসে একবার ঋণ প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশের নিচে নেমেছিল। করোনা-পরবর্তী সময়ে ওই মাসে প্রবৃদ্ধি হয় ৭ দশমিক ৫৫ শতাংশ। আর বেসরকারি খাতে সর্বোচ্চ ঋণ প্রবৃদ্ধি ২৫ দশমিক ১৮ শতাংশে উঠেছিল ২০০৭-০৮ অর্থবছরে। পরের অর্থবছর প্রবৃদ্ধি হয় ২৪ দশমিক ২৪ শতাংশ। ওই সময় বিভিন্ন উপায়ে ঋণ নিয়ে অনেকে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করেন। ২০১০ সালে শেয়ারবাজারে ব্যাপক ধসের পর বেসরকারি খাতের ঋণে কিছুটা নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর পরও ২০১৯ সালের নভেম্বরের আগ পর্যন্ত প্রবৃদ্ধি সব সময় দুই অঙ্কের ঘরে ছিল। ওই মাসে প্রবৃদ্ধি কমে ৯ দশমিক ৮৭ শতাংশে নেমেছিল।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সরকারি কর্মসম্পাদন পরিবীক্ষণ পদ্ধতি বাস্তবায়নে কমিটি
সরকারি কর্মসম্পাদন পরিবীক্ষণ পদ্ধতি (গভর্নেন্স পারফরমেন্স মনিটরিং সিস্টেম- জিপিএমএস)’ বাস্তবায়নে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদকে সভাপতি করে তিন সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি’ গঠন করেছে সরকার।
সম্প্রতি এই কমিটি গঠন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
কমিটিতে বাকি দুই সদস্য হলেন, পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ ও খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার।
অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সরকারি কাজের জবাবদিহিতা, দক্ষতা ও জনকল্যাণ নিশ্চিতে প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজের মূল্যায়নের নতুন পদ্ধতি চালু হয়েছে। বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির (এপিএ) পরিবর্তে নতুন সরকারি কর্মসম্পাদন পরিবীক্ষণ পদ্ধতি (জিপিএমএস) চালু করা হয়েছে। এই জিপিএমএস বাস্তবায়নে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি’ গঠন করা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব বা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব, অর্থ সচিব, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার), বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের সচিব, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সচিব কমিটিকে সহায়তা করবেন। তাছাড়া, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দেবে।
এ কমিটি জিপিএমএস বাস্তবায়নের বিষয়ে সার্বিক দিক-নির্দেশনা দেবে। মন্ত্রণালয় বা বিভাগের জিপিএমএসে সেকশন ১-এর আওতায় প্রস্তুত করা পরিকল্পনা অনুমোদন দেবে এবং অর্থবছর শুরুর আগে মন্ত্রণালয় বা বিভাগের জিপিএমএস পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চূড়ান্ত করবে এ কমিটি।
এছাড়া, প্রতি অর্থবছর শেষে মন্ত্রণালয় বা বিভাগের জিপিএমএসের সার্বিক মূল্যায়ন পর্যালোচনা করে সুপারিশ দেবে। জিপিএমএস বিষয়ে সরকারের দেওয়া অন্য যেকোনো দায়িত্ব পালন করবে বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/ইভা