বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজধানীর বাড্ডায় রফিকুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি নিহতের মামলায় রিমান্ড শুনানি চলাকালে আদালতে কেঁদেছেন সাবেক নৌমন্ত্রী শাহজাহান খান। আদালতকে জানিয়েছেন তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের কারণ।

সোমবার (১৭ মার্চ) সকালে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম এ আজহারুল ইসলামের আদালতে তার রিমান্ড শুনানি হয়।

সকাল ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে শাজাহান খানকে কাঠগড়ায় তোলা হয়। তখন তিনি আইনজীবীর সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ করেন। এ সময় তাকে হাস্যোজ্জ্বল দেখা যায়।

সকাল ১০টা ৮ মিনিটের দিকে আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়। শাজাহান খানের পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিটের পরিদর্শক শফিউল আলম।

রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। আসামিপক্ষে মিজানুর রহমান (বাদশা) রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন।

রিমান্ড শুনানিকালে ১০টা ২৭ মিনিটের দিকে শাজাহান খান বলেন, “মাননীয় আদালত আমাকে একটু সময় দিন কথা বলার। আমি কথা বলতে চাই।” 

আদালতের অনুমতি নিয়ে কথা বলতে শুরু করেন শাজাহান খান। তিনি বলেন, “পিপি সাহেব বলেছেন, আন্দোলনে পুলিশ গুলি করেছে। সে অর্ডার তো দিতে পারে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। গুলি চালানোর অর্ডার তো আমি দিতে পারি না। আমি জড়িত না। কেন আমার বিরুদ্ধে এ মামলা হলো? শুধু আমার বিরুদ্ধে না, আমার বড় ছেলে আসিবুর রহমানকে আসামি করা হয়েছে। সে এখন জেলে।”

কান্নাজড়িত কণ্ঠে শাজাহান খান বলেন, “পাঁচ মাস ধরে আমার ছেলের সঙ্গে দেখা নেই। আমার ছেলে কী করেছে? আমি ঢাকায় থাকলেও ছেলে থাকত মাদারীপুরে। আপনি এখনই চেক করতে পারেন। আর সিরাজুল ইসলাম কে?”

তখন বিচারক বলেন, “আপনার বিষয়ে আইনজীবী কথা বলেছেন।” তবু, শাজাহান খান দুই হাত জোর করে কথা বলার জন্য সময় চান। বলেন, “একটু সময় দিন। উনারা (আইনজীবী) ভালোভাবে বিষয়টা বলতে পারেননি। সিরাজুল চেয়ারম্যান ছয়টা হত্যা মামলার আসামি। আমি তার পক্ষে ছিলাম না। তাই ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এ মামলা দিয়েছে।”

পরে আদালত শাজাহান খানের চার দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন। এ সময় কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে টিস্যু দিয়ে দুই চোখ মুছতে থাকেন শাজাহান খান।

শুনানি শেষে ১০টা ৪০ মিনিটে হেলমেট, বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ও হাতকড়া পরিয়ে আদালত থেকে বের করা হয় শাজাহান খানকে। দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা তাকে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে নিষেধ করেন। তখন তিনি বলেন, “কথা বলা নিষেধ? কথা তো বলতে হবে। গণতান্ত্রিক দেশ।”

এরপর শাজাহান খান বলেন, “এ দেশের মায়েরা, বোনেরা এখন রাস্তায় নামছেন উপদেষ্টার পদত্যাগের জন্য।“ পুলিশ সদস্যরা তাকে দ্রুত হাজতখানায় নিয়ে যান।

গত বছরের ১৯ জুলাই বাড্ডা থানাধীন উত্তর বাড্ডা বিসমিল্লাহ হোটেলের পাশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেন রফিকুল ইসলাম। সেখানে গুলিতে আহত হন তিনি। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান রফিকুল ইসলাম। এ ঘটনায় গত ২৭ সেপ্টেম্বর নিহতের মামা পরিচয়ে লুৎফুর রহমান বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। 

শাজাহান খানের আইনজীবীরা আদালতকে জানিয়েছেন, মামলার বাদীকে চিনেন না রফিকুল ইসলামের মা ও স্ত্রী। তাকে দেখেনও নাই। তাদের বাড়ি শাজাহান খানের সংসদীয় আসন এলাকায়। লুৎফুর রহমানের শ্বশুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম। সিরাজুল ইসলাম মার্ডার কেসে পড়েন। শাজাহান খানের কাছে যান মামলা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য। তখন শাজাহান খান জানান, আইনের বাইরে কিছু বলা যাবে না। এ কারণে মামলায় তাকে এবং তার ছেলেকে ফাঁসানো হয়েছে।

ঢাকা/মামুন/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র রহম ন আইনজ ব

এছাড়াও পড়ুন:

বাগেরহাটে ৪ আসন বহালের দাবিতে হাইকোর্টে রিট 

বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন বহাল রাখতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং একটি আসন কমিয়ে তিনটি আসন করার নির্বাচন কমিশনের গেজেট কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্টদের আগামী ১০ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আরো পড়ুন:

মানিকগঞ্জে কৃষিজমির মাটি কাটার বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের

ডাকসু নির্বাচন স্থগিত চেয়ে করা ছাত্রলীগ নেতার রিট বাতিল 

বাগেরহাট প্রেস ক্লাব ও অন্যান্যদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার শেখ মুহাম্মদ জাকির হোসেন রিট পিটিশন দাখিল করেন। এছাড়া চিতলমারী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বাগেরহাট ১ আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী মুজিবর রহমান শামীমের পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ আক্তার রসুল একই বিষয়ে পৃথক রিট পিটিশন করেন।

সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও বাগেরহাট জেলা বিএনপির নেতা ব্যারিস্টার শেখ মুহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, “আমরা রিট পিটিশন করেছি। আদালত আমাদের কথা শুনেছেন এবং ১০ দিনের রুল জারি করেছেন। আশা করি, আদালতে ন্যায়বিচার পাব এবং বাগেরহাটের চারটি আসন বহাল থাকবে।”

গত ৩০ জুলাই নির্বাচন কমিশন বাগেরহাটের চারটি আসনের মধ্যে একটি আসন কমিয়ে তিনটি করার প্রস্তাব দেয়। এরপর থেকে বাগেরহাটের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠন আন্দোলন শুরু করে। চারটি আসন বহালের দাবিতে নির্বাচন কমিশনের শুনানিতেও অংশ নেয় তারা।

তবে ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন শুধু সীমানা পরিবর্তন করে তিনটি আসন রেখে চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করে।

চূড়ান্ত গেজেট অনুযায়ী বাগেরহাট-১ (সদর-চিতলমারী-মোল্লাহাট), বাগেরহাট-২ (ফকিরহাট-রামপাল-মোংলা) ও বাগেরহাট-৩ (কচুয়া-মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) নির্ধারণ করা হয়। অথচ দীর্ঘদিন ধরে বাগেরহাট-১ (চিতলমারী-মোল্লাহাট-ফকিরহাট), বাগেরহাট-২ (সদর-কচুয়া), বাগেরহাট-৩ (রামপাল-মোংলা) এবং বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।

ঢাকা/শহিদুল/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ক্ষতিপূরণের বিরুদ্ধে আপিল করতে ২৫ শতাংশ অর্থ জমা দেওয়ার বিধান প্রশ্নে রুল
  • আইনজীবী সোমার মৃত্যুতে আইনজীবী সমিতির শোক সভা ও দোয়া
  • এনায়েত করিম ও গোলাম মোস্তফা পাঁচ দিন রিমান্ডে
  • যে ১০ কারণে স্বামী–স্ত্রীর মধ্যে বেশি ঝগড়া হয়
  • ভাঙ্গা থেকে দুটি ইউনিয়ন বাদ দেওয়া প্রশ্নে রুল
  • বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন রাখতে নির্দেশ কেন নয়: হাইকোর্ট
  • বাগেরহাটে ৪ আসন বহালের দাবিতে হাইকোর্টে রিট 
  • পান্থকুঞ্জ পার্ক ও হাতিরঝিল অংশে নির্মাণকাজে স্থিতাবস্থা আপাতত বহাল, চলবে না কার্যক্রম
  • চারটি আসন বহালের দাবিতে বাগেরহাটে নির্বাচন কার্যালয় ঘেরাও, উচ্চ আদালতে দুটি রিট
  • বরিশালে তরুণীকে ধর্ষণের পর হত্যা: ২ জনের মৃত্যুদণ্ড