৪০ রেস্তোরাঁ ও খাবারের ব্র্যান্ড নিয়ে শুরু হচ্ছে ‘মুনলাইট ফেস্টিভ্যাল সিজন ১’
Published: 17th, March 2025 GMT
চাঁদের আলোয় মখমলি হাওয়া আর সুস্বাদু খাবারের মেলবন্ধন হতে যাচ্ছে ১৮ ও ১৯ মার্চ। রাজধানীর গুলশানের আলোকি কনভেনশন সেন্টারে প্রথমবারের মতো শুরু হচ্ছে ‘মুনলাইট ফেস্টিভ্যাল সিজন ১’ নামের বিশেষ আয়োজন। এ আয়োজন করেছে অ্যানেক্স কমিউনিকেশনস।
বিশেষ এই আয়োজনে খাবার আর বিনোদনের নানা ব্যবস্থা থাকছে। ভোজনরসিকেরা উপভোগ করতে পারবেন প্রচলিত সব খাবারের পাশাপাশি সিজলিং বারবিকিউ, ধোঁয়া ওঠা গরম কাবাব আর গ্রিল, ভিন্ন স্বাদের বাহারি সব স্ট্রিট ফুড, রঙিন সব মিষ্টি, গরম ও ঠান্ডা পানীয়। এখানে ইফতার ও সাহ্রির বিশেষ আয়োজনও থাকছে। এখানে একই ছাদের নিচে ৪০টিরও বেশি দেশি-বিদেশি সব রেস্তোরাঁ ও ফুড ব্র্যান্ডকে একসঙ্গে আনা হয়েছে।
এ আয়োজন শুধু খাবারের উৎসব নয়। এখানে বিনা মূল্যে আকর্ষণীয় সব বিনোদনের ব্যবস্থাও রেখেছে অ্যানেক্স কমিউনিকেশনস। প্রাঙ্গণজুড়ে থাকবে হাজারো স্বাদের সমারোহ আর দারুণ সব আয়োজন। মুনলাইট ফেস্টিভ্যালে খাবারের পাশাপাশি থাকবে মেহেদি কর্নার, ক্লে স্টেশনের মতো আয়োজন।
জনপ্রিয় স্ট্যান্ডআপ কমেডিয়ান মেহেদি তরু ও তাহসিন এম খানের পারফরম্যান্স ও ফায়ার স্পিনিং শো থাকছে। এ ছাড়া জনপ্রিয় সব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনফ্লুয়েন্সারও যোগ দেবেন। মুনলাইট ফেস্টিভ্যাল সিজন ১–এর আয়োজন সরাসরি সম্প্রচারে যুক্ত থাকবেন জনপ্রিয় ফ্যাশন মডেল বুশরা কবির। আরও উপস্থিত থাকবেন জনপ্রিয় সব ফুড ভ্লগার ফাবিহা নওশীন, ইফরীত তাহিয়াসহ অনেকেই। শিশুদের জন্যও থাকবে খেলাধুলার ব্যবস্থা।
উৎসবে স্পনসর হিসেবে থাকছে ফুডেলা, আল–আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, আশিয়ান সিটি এবং বেভারেজ স্পনসর হিসেবে থাকছে পার্টেক্স স্টার গ্রুপের মাম।
উৎসব শুরু হবে বিকেল ৪টা থেকে। চলবে ভোর ৪টা পর্যন্ত।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জনপ র য়
এছাড়াও পড়ুন:
খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৬০ দিন পর শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীরা, উৎসবের আমেজ
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) দীর্ঘ ১৬০ দিন পর একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে টানা বৃষ্টি উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে এসেছেন। সকাল থেকেই ক্যাম্পাসে বইছে উৎসবের আমেজ।
সকালে কুয়েট ক্যাম্পাসে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস। ছাতা মাথায় দল বেঁধে ছুটছেন ক্লাসরুমের দিকে। কখনো এক ছাতার নিচে দু-তিনজন। কারও সঙ্গে অভিভাবকও এসেছেন। সকাল নয়টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি শিক্ষাবর্ষের প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থী ক্লাসে যোগ দেন। নতুন উপাচার্য অধ্যাপক মাকসুদ হেলালী বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে শ্রেণি কর্মসূচি পর্যবেক্ষণ করেন।
ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (ইসিই) বিভাগের ২২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী দীপ্ত বলেন, ‘আমাদের প্রায় এক সেমিস্টার নষ্ট হয়ে গেছে। এই সময়টা খুব অস্বস্তিতে কেটেছে। ক্ষতি যা হওয়ার হয়েছে, তবে এখন আবার ক্লাস শুরু হওয়াটা ইতিবাচক দিক। আমরা আশাবাদী।’ একই ব্যাচের শিক্ষার্থী আম্মান বলেন, ‘অনেক দিন জীবনটা থেমে ছিল। আজকের দিনটা বিশেষ মনে হচ্ছে। ঠিক যেন স্কুলজীবনের প্রথম দিনের মতো। সব হতাশা কাটিয়ে আমরা অনেকটা নতুন করে শুরু করছি।’
হুমায়ুন কবির নামের এক অভিভাবক বলেন, ‘আমার ছেলে বিল্ডিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে পড়ে। পাঁচ মাস ধরে ক্লাস বন্ধ থাকায় ও মানসিকভাবে খুব চাপের মধ্যে ছিল। একসময় অসুস্থও হয়ে পড়ে। কুয়েটে এমন পরিস্থিতি আগে দেখিনি। কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করলে হয়তো আগেই খুলে যেত। তারপরও এখন অন্তত খুলেছে, এটা বড় স্বস্তি।’
কুয়েটের ছাত্র পরিচালক আবদুল্লাহ ইলিয়াস আক্তার বলেন, আজ থেকে কুয়েটে ক্লাস শুরু হয়েছে। তবে এখনো সব শিক্ষার্থী আসেননি। যাঁদের কেবল ক্লাস রয়েছে, তাঁরা অংশ নিচ্ছেন। যাঁদের পরীক্ষা ছিল, তাঁরা প্রস্তুতির জন্য কিছুটা সময় চেয়েছে। প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন হবে ১৪ আগস্ট, ক্লাস শুরু ১৭ আগস্ট।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে শতাধিক ব্যক্তি আহত হন। ওই রাতেই তৎকালীন উপাচার্য ও কয়েকজন শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ ওঠে। এরপর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২৬ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয় উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদ ও সহ-উপাচার্য অধ্যাপক শরিফুল আলমকে অব্যাহতি দেয়। ১ মে চুয়েটের অধ্যাপক হজরত আলীকে অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনার বিচার দাবিতে ৪ মে থেকে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা দেয় শিক্ষক সমিতি। এরপর কোনো শিক্ষকই ক্লাসে ফেরেননি। শিক্ষক সমিতির বিরোধিতার মুখে হজরত আলী দায়িত্ব পালন করতে না পেরে ২২ মে পদত্যাগ করেন।
এরপর ১০ জুন নতুন উপাচার্য নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয় সরকার। সেই ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার কুয়েটের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান বুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মাকসুদ হেলালী। পরদিন শুক্রবার তিনি খুলনায় এসে দায়িত্ব নেন। দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেন। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভায় আন্দোলন কর্মসূচি তিন সপ্তাহের জন্য স্থগিত করে ক্লাসে ফেরার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে গতকাল সোমবার ক্লাস শুরুর নোটিশ জারি করা হয়।