চেক ডিজঅনার মামলায় শফিউল্লাহ মল্লিকের কারাদণ্ড
Published: 18th, March 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের চিহ্নিত প্রতারক শফিউল্লাহ মল্লিকের বিরুদ্ধে এক বছরের কারাদণ্ড ও ৫৫ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছে আদালত। বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আলমগীর খান চঞ্চলের দায়ের করা চেক ডিজঅনার মামলায় নারায়ণগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট 'ক' অঞ্চলের বিচারক এই রায় প্রদান করেন।
রায় প্রদানকালে প্রতারক শফিউল্লাহ মল্লিক পলাতক ছিলেন। তাকে গ্রেফতার করে রায় কার্যকরের নির্দেশ প্রদান করেন বিচারক।
মামলা সূত্রে জানা যায়, আবাবিল নিট কম্পোজিট ফ্যাক্টরির ম্যানেজিং ডিরেক্টর শফিউল্লাহ মল্লিকের সাথে ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিল কালার ভ্যালি অটো প্রিন্ট ইন্ডাস্ট্রির ডিরেক্টর আলমগীর খান চঞ্চলের।
ব্যবসায়িক লেনদেনের এক পর্যায়ে আলমগীর খান চঞ্চল শফিউল্লাহ মল্লিকের কাছ থেকে অনেক টাকা পাওনা হয়ে যায়। পাওনা টাকা পরিশোধ করতে না পারায় সফিউল্লাহ মল্লিক ২০২০ সনের ২৩ জুলাই তারিখে আলমগীর খান চঞ্চলের নামে পূবালী ব্যাংকের নারায়ণগঞ্জ শাখার একটি চেক প্রদান করেন।
চেকে টাকার পরিমাণ ছিল ৫৫ লক্ষ টাকা। চেক নাম্বার ছিল ঈঅ৫০-গ-০৬৬৭৫০৭ এবং অ্যাকাউন্ট নাম্বার ০০৩৭৯০১০৩৭১০৪ শফিউল্লাহ মল্লিকের কাছ থেকে ৫৫ লক্ষ টাকার চেক পেয়ে তা ব্যাংকে উপস্থাপন করলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় চেকটি ডিজঅনার করা হয়।
এরপর ২০২০ সালের ২৭ জুলাই তারিখে আলমগীর খান চঞ্চল একজন আইনজীবীর মাধ্যমে ৩০ দিন সময় দিয়ে একটি লিগ্যাল নোটিশ প্রেরণ করেন। নিজেদের একাউন্টে টাকা নাই জেনেও চেক প্রদান করায় এবং লিগ্যাল নোটিশ পাওয়ার পরেও পাওনা পরিশোধ না করায় শফিউল্লাহ মল্লিকসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেন আলমগীর খান চঞ্চল। মামলা নাম্বার দায়রা ৫৫০/২১ সিআর ৭৪৫/২০।
দীর্ঘ পাঁচ বছর মামলার শুনানি শেষে বিজ্ঞ আদালত মামলার প্রধান আসামি শফিউল্লাহ মল্লিককে এক বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫৫ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডের রায় প্রদান করেন এবং বাকি আসামীদের খালাস প্রদান করেন প্রধান আসামি পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন এবং আসামিকে গ্রেফতার করে বিচারের রায় কার্যকর করার জন্য নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানা কে নির্দেশ প্রদান করেন বিচারক।
স্থানীয় সূত্রে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জের মাসদাইর বাজার এলাকার বসবাসরত প্রতারক শফিউল্লাহ মল্লিকের বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্ত নেই।
তার জন্মদাতা পিতা এবং সহোদর ভাইদের সম্পত্তি আত্মসাৎ এর গুরুতর অভিযোগ পাওয়া যায় শফিউল্লাহ মল্লিকের বিরুদ্ধে। তার পিতা শফিউদ্দিন মল্লিক বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় শফিউল্লাহ মল্লিকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিলেন এবং সে মামলায় শফিউল্লাহ মল্লিক গ্রেপ্তার হয়ে দীর্ঘদিন কারাবাস করেন।
এছাড়াও বিভিন্ন সময় মানুষের টাকা পয়সা এবং জায়গা সম্পত্তি আত্মসাতে অভিযোগে পাওয়া যায় শফিউল্লাহ মল্লিকের বিরুদ্ধে। এলাকায় তিনি মামলাবাজ হিসেবেও পরিচিত। তিনি সম্পত্তি আত্মসাৎ এর জন্য তার নিজ ভাইদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন অনেকগুলো।
এই প্রতারক শফিউল্লাহ মল্লিক বর্তমানে পলাতক আছেন তাকে গ্রেপ্তার করে উপযুক্ত শাস্তি প্রদানের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ন র য়ণগঞ জ দ য় র কর
এছাড়াও পড়ুন:
রিকশা ভাড়ার ৫০ টাকা নিয়ে সংঘর্ষ, আহত অর্ধশতাধিক
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় রিকশা ভাড়ার ৫০ টাকা নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নারীসহ অন্তত অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে গুরুতর ৯ জনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) সকালে উপজেলার কানাইপুর শান্তিনগর এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
গুরুতর আহতরা হলেন- বাহার মিয়ার ছেলে রুহুল আমীন (২৪), তার স্ত্রী জাহান্নাতুল বেগম (২১), জাহাঙ্গীর মিয়ার স্ত্রী তাহমিনা বেগম (২০), লালা মিয়ার ছেলে উজ্জল মিয়া (৩২), মন্নাফ মিয়ার ছেলে ইকবাল মিয়া (৪৫), রুশন মিয়ার ছেলে সিতন মিয়া (৩৩), বারিক মিয়ার ছেলে উজ্জল মিয়া (৩০), শাহান উল্লার স্ত্রী সুফিয়া বেগম (৪৫), শাহান উল্লার ছেলে উমর আলীকে (৬০)। তাদের সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আরো পড়ুন:
হবিগঞ্জে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ১৫
ঈশ্বরদীতে চর দখল নিয়ে সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ ৪
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শান্তিনগর এলাকার বাহার মিয়ার ছেলে রুহুল আমীন আজ সকালে একই গ্রামের রুশন মিয়ার ছেলে আলমগীর মিয়ার কাছে বাকি থাকা ৫০ টাকা রিকশা ভাড়া চান। আলমগীর ভাড়া না দিয়ে রুহুল আমীনের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। এক পর্যায়ে দুইজনের পরিবার ও সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। তারা একে অন্যকে লক্ষ্য করে ইট নিক্ষেপ করে।
সংঘর্ষ চলাকালে নারীসহ অর্ধশতাধিক লোক আহত হন। পরে নবীগঞ্জ থানা থেকে পুলিশ সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
নবীগঞ্জ থানার ওসি মো. কামাল হোসেন জানান, অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বর্তমানে ওই এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
ঢাকা/মামুন/মাসুদ