নারায়ণগঞ্জের চিহ্নিত প্রতারক শফিউল্লাহ মল্লিকের বিরুদ্ধে এক বছরের কারাদণ্ড ও ৫৫ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছে আদালত। বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আলমগীর খান চঞ্চলের দায়ের করা চেক ডিজঅনার মামলায় নারায়ণগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট 'ক' অঞ্চলের বিচারক এই রায় প্রদান করেন।

রায় প্রদানকালে প্রতারক শফিউল্লাহ মল্লিক পলাতক ছিলেন। তাকে গ্রেফতার করে রায় কার্যকরের নির্দেশ প্রদান করেন বিচারক।

মামলা সূত্রে জানা যায়, আবাবিল নিট কম্পোজিট ফ্যাক্টরির ম্যানেজিং ডিরেক্টর শফিউল্লাহ মল্লিকের সাথে ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিল কালার ভ্যালি অটো প্রিন্ট ইন্ডাস্ট্রির ডিরেক্টর আলমগীর খান চঞ্চলের।

ব্যবসায়িক লেনদেনের এক পর্যায়ে আলমগীর খান চঞ্চল শফিউল্লাহ মল্লিকের কাছ থেকে অনেক টাকা পাওনা হয়ে যায়। পাওনা টাকা পরিশোধ করতে না পারায় সফিউল্লাহ মল্লিক ২০২০ সনের ২৩ জুলাই তারিখে আলমগীর খান চঞ্চলের নামে পূবালী ব্যাংকের নারায়ণগঞ্জ শাখার একটি চেক প্রদান করেন।

চেকে টাকার পরিমাণ ছিল ৫৫ লক্ষ টাকা। চেক নাম্বার ছিল ঈঅ৫০-গ-০৬৬৭৫০৭ এবং অ্যাকাউন্ট নাম্বার ০০৩৭৯০১০৩৭১০৪ শফিউল্লাহ মল্লিকের কাছ থেকে ৫৫ লক্ষ টাকার চেক পেয়ে তা ব্যাংকে উপস্থাপন করলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় চেকটি ডিজঅনার করা হয়।

এরপর ২০২০ সালের ২৭ জুলাই তারিখে আলমগীর খান চঞ্চল একজন আইনজীবীর মাধ্যমে ৩০ দিন সময় দিয়ে একটি লিগ্যাল নোটিশ প্রেরণ করেন। নিজেদের একাউন্টে টাকা নাই জেনেও চেক প্রদান করায় এবং লিগ্যাল নোটিশ পাওয়ার পরেও পাওনা পরিশোধ না করায় শফিউল্লাহ মল্লিকসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেন আলমগীর খান চঞ্চল। মামলা নাম্বার দায়রা ৫৫০/২১ সিআর ৭৪৫/২০।

দীর্ঘ পাঁচ বছর মামলার শুনানি শেষে বিজ্ঞ আদালত মামলার প্রধান আসামি শফিউল্লাহ মল্লিককে এক বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫৫ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডের রায় প্রদান করেন এবং বাকি আসামীদের খালাস প্রদান করেন প্রধান আসামি পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন এবং আসামিকে গ্রেফতার করে বিচারের রায় কার্যকর করার জন্য নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানা কে নির্দেশ প্রদান করেন বিচারক।

স্থানীয় সূত্রে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জের মাসদাইর বাজার এলাকার বসবাসরত প্রতারক শফিউল্লাহ মল্লিকের বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্ত নেই।

তার জন্মদাতা পিতা এবং সহোদর ভাইদের সম্পত্তি আত্মসাৎ এর গুরুতর অভিযোগ পাওয়া যায় শফিউল্লাহ মল্লিকের বিরুদ্ধে। তার পিতা শফিউদ্দিন মল্লিক বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় শফিউল্লাহ মল্লিকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিলেন এবং সে মামলায় শফিউল্লাহ মল্লিক গ্রেপ্তার হয়ে দীর্ঘদিন কারাবাস করেন।

এছাড়াও বিভিন্ন সময় মানুষের টাকা পয়সা এবং জায়গা সম্পত্তি আত্মসাতে অভিযোগে পাওয়া যায় শফিউল্লাহ মল্লিকের বিরুদ্ধে। এলাকায় তিনি মামলাবাজ হিসেবেও পরিচিত। তিনি সম্পত্তি আত্মসাৎ এর জন্য তার নিজ ভাইদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন অনেকগুলো।

এই প্রতারক শফিউল্লাহ মল্লিক বর্তমানে পলাতক আছেন তাকে গ্রেপ্তার করে উপযুক্ত শাস্তি প্রদানের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ন র য়ণগঞ জ দ য় র কর

এছাড়াও পড়ুন:

যে কারণে নারায়ণগঞ্জ-৪ খালি রাখলো বিএনপি

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সোমবার (৩ নভেম্বর) বিএনপি নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনের মধ্যে ৪টি আসনসহ ২৩৭টি আসনে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করেছে। 
 নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন সহ ৬৩টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেনি, এর একটা বড় অংশ মিত্র দল ও জোটগুলোর শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের জন্য ছেড়ে দেওয়া হতে পারে বলে দলটির একাধিক সূত্রে জানা গেছে।

বিএনপির নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের একজন নেতা জানিয়েছেন, মিত্র দলগুলোর বাইরেও জাতীয় নাগরিক পার্টি বা এনসিপি এবং ইসলামপন্থী কিছু দলের সঙ্গে তাদের আসন ভাগাভাগির প্রশ্নে আলোচনা চলছে। এসব দলের জন্য আসন ছেড়ে দিতে হতে পারে বিএনপিকে।
এছাড়াও অনেক আসনে বিএনপির স্থানীয় পর্যায়ে বেশ কয়েকজন করে প্রার্থী হতে ইচ্ছুক এবং এসব এলাকায় দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলও মীমাংসা করা যাচ্ছে না। এসব কারণেও ওই আসনগুলো খালি রাখা হয়েছে বলে বিএনপির একাধিক নেতা জানিয়েছেন।

তবে দলটি মিত্র বা অন্য দলগুলোর জন্য শেষ পর্যন্ত কতটা আসনের ছাড় দেবে, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি বলে জানা গেছে।

বিএনপির মিত্র একটি জোটের একাধিক নেতা বলেন, তাদের কারও কারও আসনে ছাড় দেওয়ার ব্যাপারে বিএনপি ইঙ্গিত দিয়েছিল। কিন্তু তা চূড়ান্ত হয়নি। এখন আসন সমঝোতার আলোচনা হবে বলে তারা আশা করছেন।
এদিকে আরেকটি সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের নির্বাচনে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সঙ্গে বিএনপির জোট ছিল। ফলে ওই নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনটি জোটের জন্য ছেড়ে দেয় বিএনপি। ফলে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মনির হোসেন কাশেমী এই আসনে নির্বাচন করে। ২০২৬ সালের নির্বাচন ঘিরে জোটের পরিধি বাড়ার সম্ভবনা রয়েছে। এরমধ্যে এনসিপি ও বিএনপির মধ্যে আলোচনা চলমান। ধারনা করো হচ্ছে জোটের জন্য বিএনপি নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনটি শূন্য রেখেছে। ফলে আলোচনায় রয়েছে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মনির হোসেন কাসেমী এবং এনসিপির এনসিপির শৃঙ্খলা কমিটির প্রধান আবদুল্লাহ আল আমিন। শেষ পর্যন্ত বিএনপির সঙ্গে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও এনসিপি জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন করার ইচ্ছাপোষন করলে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে মনোনয়ন পেয়ে যেতে পারেন মনির হোসেন কাসেমী অথবা আবদুল্লাহ আল আলামিন। এমনটাই মনে করছেন বিএনপির একাধিক সূত্র।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আল-কায়েদাপন্থী সংগঠন যেভাবে মালি দখলের দ্বারপ্রান্তে
  • যে কারণে নারায়ণগঞ্জ-৪ খালি রাখলো বিএনপি
  • চট্টগ্রামের ১০টি আসনে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা, ৬টিতে বাকি, মহাসড়ক অবরোধ
  • ‘মায়ের ডাক’–এর সানজিদাকে ঢাকায় প্রার্থী করছে বিএনপি
  • ২৩৭ আসনে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা, ঢাকার প্রার্থী যারা 
  • ঢাকা-৮ আসনে নির্বাচন করবেন মির্জা আব্বাস
  • পরিকল্পিতভাবে প্রচারণা চলছে যে বিএনপি সংস্কারের বিরোধী: মির্জা ফখরুল
  • কাঁচাপাট রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না করলে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি বিজেএ চেয়ারম্যানের
  • বাবাকে না পেয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে সড়কে যায় শিশু, মুহূর্তে ট্রাকচাপায় নিহত
  • রাউজানে যুবদল কর্মীকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় তাঁর সহযোগী গ্রেপ্তার