বিএনপির আন্দোলনের ফল অন্তর্বর্তী সরকার: খন্দকার মোশাররফ হোসেন
Published: 18th, March 2025 GMT
১৬ বছর ধরে বিএনপি যে আন্দোলন গড়ে তুলেছিল, জুলাই-আগস্টে গণ-অভ্যুত্থান এবং অন্তর্বর্তী সরকার গঠন তারই ফলাফল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
আজ মঙ্গলবার বিএনপির প্রয়াত মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের ১৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক দোয়া ও স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন। খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন স্মৃতি ফাউন্ডেশন এই সম্রণসভার আয়োজন করে।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, সংস্কারের নামে কোনো টালবাহানা নয়, দ্রুত সময়ের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন দিয়ে জন–আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে এটাই মানুষের প্রত্যাশা। এই সরকার ক্ষমতায় এসে ঘোষণা দিয়েছিল মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করবে। মানুষ অধিকার বলতে ভোটের অধিকারকে বোঝে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, আওয়ামী শাসনামলে যাঁরা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছিলেন, অন্তর্বর্তী সরকারেও তারাই গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেন, যেই কর্মকর্তা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ফাঁসিয়েছিলেন, তিনি এখন দাপটের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করছেন।
মানুষ এখন নির্বাচন ছাড়া অন্য কোনো সংস্কার চায় না বলে দাবি করেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য জয়নুল আবদিন ফারুক। তিনি অন্তর্বর্তী সরকারকে স্পষ্ট একটি নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আপনাদের কাছে এর বেশি কিছুই চায় না মানুষ।’
জয়নুল আবদিন ফারুক আরও বলেন, গত ১৬ বছর তারেক রহমানের নেতৃত্বে যে আন্দোলন গড়ে উঠেছে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন তারই ফল; কিন্তু সংস্কারের নামে যা হচ্ছে, সেটি বিএনপিকে নিয়ে স্পষ্ট ষড়যন্ত্র।
স্মরণ সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতিসংঘের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ (অব.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
চামড়াশিল্প ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে
কোরবানির পশুর চামড়া নিয়ে পতিত ফ্যাসিস্ট আমলের পুরোনো চক্র ও সিন্ডিকেট সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার রক্ষা আন্দোলন। এই সিন্ডিকেট ও চামড়াশিল্প ধ্বংসের দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সংগঠনটি আয়োজিত ‘চামড়া শিল্পের নৈরাজ্য ও সিন্ডিকেট রুখো’ শীর্ষক মানববন্ধনে এসব কথা বলা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের আহ্বায়ক মির্জা শরিফুল আলম। সভায় বক্তব্য দেন সংগঠনটির চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আতা উল্লাহ খান, কলামিস্ট মীর আবদুল আলীম, রাজনীতিবিদ নুরুজ্জামান হীরা, মানবাধিকারকর্মী আব্দুল্লাহ আল-মামুন প্রমুখ।
কয়েক বছর ধরে কাঁচাচামড়ার দাম কমছে। দাম না পেয়ে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা চামড়া নদী বা খালে ফেলে দিয়েছেন কিংবা মাটিতে পুঁতে ফেলেছেন– এমন ঘটনাও ঘটছে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। চলতি বছর ৮৫ থেকে ৯০ লাখ পশুর চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ট্যানারি মালিকদের। এর ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ সংগ্রহ হয় কোরবানির সময়।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার রক্ষা আন্দোলনের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আতা উল্লাহ খান বলেন, এবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম ৬০ থেকে ৬৫ টাকা নির্ধারণ করে দিলেও বিক্রি হয়েছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। কিছু ক্ষেত্রে বর্গফুটের হিসাবে চামড়ার দাম আরও কম পড়েছে। কোরবানিদাতাদের থেকে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা ৪০০ থেকে ৬৫০ টাকায় গরুর চামড়া কিনেছেন। সেসব চামড়া আড়তদার ও ট্যানারি মালিকদের কাছে বিক্রি করেছেন ৫০০ থেকে ৮০০ টাকায়। মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে চামড়া সংগ্রহ করলেও ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না। সিন্ডিকেটের কারণে চামড়ার দাম পড়ে গেছে তলানিতে।
তিনি আরও বলেন, প্রতিবছরের মতো এবারও বেশির ভাগ ছাগলের চামড়া নষ্ট হয়েছে। বিদেশি চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রে পা দিয়ে অসাধু ট্যানারি মালিকদের ফ্যাসিস্ট সিন্ডিকেট কৌশলে চামড়ার দাম কমিয়ে লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের চামড়া শিল্প। দেশে ও বিশ্ববাজারে চামড়াজাত পণ্যের দাম আকাশচুম্বী। অথচ কোরবানির চামড়া শিল্প নিয়ে গভীর চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র চলছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে বিদেশি বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বাড়াতে হবে।
মানববন্ধনে বক্তারা আরও বলেন, বিদেশি চক্রান্তে দেশের সোনালি আঁশখ্যাত পাট শিল্পকে সুকৌশলে ধ্বংস করা হয়েছে। এবার আরেক সম্ভাবনাময় চামড়া শিল্পকে শেষ করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। এ ষড়যন্ত্রে পা দিয়ে অসাধু ট্যানারি মালিকদের সিন্ডিকেট কৌশলে চামড়ার দাম কমিয়ে লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের চামড়া শিল্প। গত বছরের মতো এবারও কম দামে সব ধরনের চামড়া বিক্রি করতে হয়েছে। এতে করে গরিব-অসহায় মানুষ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। সিন্ডিকেটকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান বক্তারা।