প্রতিবন্ধী শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা, বোরকা পরে পালানোর সময় আসামি গ্রেপ্তার
Published: 19th, March 2025 GMT
রংপুরের মিঠাপুকুরে বাক্ ও শারীরিক প্রতিবন্ধী শিশুকে (১১) ধর্ষণের অভিযোগে আলম মিয়া (৪০) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে উপজেলার একটি গ্রাম থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এর আগে গতকাল রাতে আলম মিয়াকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মিঠাপুকুর থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী শিশুটির মা।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, প্রতিবন্ধী শিশুটি স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শিশুটি স্থানীয় একটি বাজার থেকে বাড়িতে ফিরছিল। পথিমধ্যে আলম মিয়া শিশুটিকে জোর করে পাশের ভুট্টাখেতে নিয়ে ধর্ষণ করেন। পরে বাড়িতে ফিরে শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাকে মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
থানা-পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর থেকে অভিযুক্ত আলম মিয়া গা ঢাকা দেন। গতকাল রাতে বোরকা পরে একটি মোটরসাইকেলের পেছনে বসে এলাকা থেকে পালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। এ সময় স্থানীয় বাজারের পাশে জনতা তাঁকে আটক করে পুলিশে দেয়।
মিঠাপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে শিশুর মায়ের থানায় করা মামলায় আলম মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁকে আজ বুধবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে রংপুর জেলহাজতে পাঠানো হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই হত্যাকাণ্ডের মামলায় চট্টগ্রামে প্রথম অভিযোগপত্র দাখিল
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে চট্টগ্রাম মহানগরীর চান্দগাঁওয়ে শহিদুল ইসলাম শহিদকে হত্যার মামলায় অভিযোগপত্র আদালতে জমা দিয়েছে পুলিশ। এ মামলায় সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলসহ ২৩১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চান্দগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নুরুল হক গত বুধবার (৩০ জুলাই) আদালতের প্রসিকিউশন শাখায় অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন।
শনিবার (২ আগস্ট) চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফতাব আহমেদ অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার তথ্য সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন।
আরো পড়ুন:
সিলেটে স্কুলছাত্র সুমেল হত্যা: ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৭ জনের যাবজ্জীবন
চবি ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
পুলিশ জানিয়েছে, গত বছরের জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলার সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের করা কোনো মামলায় চট্টগ্রামে প্রথম অভিযোগপত্র দাখিল করা হলো।
২০২৪ সালের ৩ আগস্ট সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম মহানগরীর বহদ্দারহাটে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ (বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ) ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এ সময় একাধিক পিস্তল, শটগানসহ ভারী অস্ত্র দিয়ে আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছিলেন আওয়ামী লীগের কর্মীরা।
এর আগে নিউ মার্কেট মোড়ে সমাবেশ করে ছাত্র-জনতা মিছিল নিয়ে যাওয়ার পথে ষোলশহর মেয়র গলিতে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের বাসভবনে হামলা চালায়। এর পর বহদ্দারহাট মোড়-সংলগ্ন সাবেক সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর বাসভবনে হামলা হয়। ওই সময় গুলিবিদ্ধ হন অটোরিকশাচালক শহিদ। তাকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর শহিদের ভাই শফিকুল ইসলাম চান্দগাঁও থানায় মামলা করেন।
আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি আইনের ৩০২ ধারায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। উল্লেখযোগ্য অপর আসামিরা হলেন— চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) সাবেক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী ও আ জ ম নাছির উদ্দীন, সাবেক সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী, এম এ লতিফ, আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দীন নদভী, মহিউদ্দিন বাচ্চু, আবদুচ ছালাম, দিদারুল আলম দিদার, এস এম আল মামুন ও নোমান আল মাহমুদ, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, চসিকের সাবেক কাউন্সিলর এসরারুল হক, নুর মোস্তফা টিনু, সলিমুল্লাহ বাচ্চু, জিয়াউল হক সুমন ও নুরুল আজিম রনিসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
আগামী ২৫ আগস্ট বাদীর উপস্থিতিতে অভিযোগপত্রের ওপর শুনানি হবে বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে। অভিযোগপত্রে ১২৮ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৮ জন সাধারণ মানুষ, ৯৯ জন পুলিশ ও ১ জন চিকিৎসক।
ঢাকা/রেজাউল/রফিক