মেসির সঙ্গে নয়, আমার সঙ্গে লড়ো—লোগান পলকে আর্জেন্টাইন তারকার বডিগার্ড
Published: 19th, March 2025 GMT
ঘটনার জল গড়িয়েছে অনেক দূর। এখন কি তবে রিংয়ের লড়াইয়েই সমাধান?
লোগান পল অন্তত এটাই চান। বক্সিংয়ের রিংয়ে লিওনেল মেসি তাঁর সঙ্গে লড়াই করলে আদালত থেকে মামলা তুলে নেবেন—গত মাসে টিকটকে পোস্ট করা ভিডিওতে এমন কথা বলেন যুক্তরাষ্ট্রের এই পেশাদার রেসলার, বক্সার, ইউটিউবার ও ইনফ্লুয়েন্সার।
এবার লোগানের সেই কথার উত্তর দিলেন মেসির বডিগার্ড ইয়াসিন চুকো। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, মেসির বডিগার্ড বলছেন, ‘এই লোকটি কে, লিও তা জানে না। সে যদি সত্যিই লড়াই করতে চায়, তবে আমার সঙ্গে লড়তে পারে।’ কমব্যাট স্পোর্টসের এক্স হ্যান্ডল ‘হ্যাপি পাঞ্চ’-এ ভিডিওটি পোস্ট করা হয়।
এবার ঘটনাটা শুরু থেকে বলা যাক। ব্যবসায়িক অংশীদার কেএসআইয়ের সঙ্গে ২০২২ সালে ‘প্রাইম’ নামে একটি পানীয় বাজারজাত শুরু করেন লোগান। এরপর মেসিও ‘মাস+ৎ’ নামে একটি পানীয়র ব্র্যান্ড গত বছর জুন থেকে বাজারজাত শুরু করেন।
কিন্তু পানীয় দুটির প্যাকেজিং ও ডিজাইন প্রায় একই রকম হওয়ায় আলোচনার সূত্রপাত ঘটে। লোকে অভিযোগ করেন, পানীয় দুটি কিনতে গিয়ে তাঁরা বিভ্রান্তিতে পড়ছেন। এরপর গত অক্টোবরে নিউইয়র্কে এ নিয়ে প্রাইমের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দেন মেসির আইনজীবীরা। প্রাইমকে ‘অ্যান্টিকম্পিটিটিভ’–এর দোষে অভিযুক্ত করা হয়ে মেসির ব্র্যান্ডের পক্ষ থেকে। এ ছাড়া দাবি করা হয়, প্রতিদ্বন্দ্বী পণ্যের বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পত্তি সংরক্ষণের আইন তাঁদের দ্বারা লঙ্ঘিত হয়নি। উল্টো প্রাইমকে নোংরা বিপণন–পরিকল্পনার দায়ে অভিযুক্ত করেন মেসির কৌঁসুলিরা। এক মাস পর লোগানের আইনজীবীরা মেসির ব্র্যান্ডের বিরুদ্ধে অনুকরণের অভিযোগ তুলে পাল্টা মামলা করেন। মামলাটি এখনো আদালতে চলমান।
গত মাসে টিকটকে পোস্ট করা ভিডিওতে লোগান বলেন, ‘ভাই, তুমি আমাদেরটা অনুকরণ করেছ। সবাই দেখেছে তুমি কী করেছ, সবাই খেয়ালও করেছে, তবু মামলা হলো আমাদের বিরুদ্ধে। এটা ন্যায়বিচার নয়। তাই আমি পাল্টা মামলা করেছি। সেরাকে হারাতে না পারলে তোমাকে সেরা হতে হবে। কিন্তু এটা অবৈধ। এটা ট্রেডমার্কের লঙ্ঘন। আমরা তার কাছে জবাবদিহি চাই আর এটা হয়রানি? এসব কৌতুক বাদ দিয়ে বলছি, আমি এই মামলা তুলে নেওয়ার কথা ভাবব, যদি ২০২৫ সালে লোগান পল বনাম মেসির লড়াই হয়। রিংয়ে তোমার সঙ্গে দেখা হবে, ভাই।’
আরও পড়ুনম্যারাথনে মানুষের সঙ্গে দৌড়াবে রোবটও৪ ঘণ্টা আগেহ্যাপি পাঞ্চে পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা যায়, মেসির বডিগার্ড ইয়াসিন একটি জিমের রিংয়ে ওয়ার্কআউট শেষে বসে আছেন। এ সময় তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়, ‘লোগান পল মেসির সঙ্গে (রিংয়ে) লড়াই করতে চায়, এ বিষয়ে আপনার ভাবনা কী?’ প্রশ্নটি শুনে ইয়াসিন পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘কে?’ এরপর বলা হয়, ‘ইউটিউবার লোগান পল।’ ইয়াসিন এরপর বলেন, ‘দেখুন, এই লোকটিকে চেনে না লিও। সে যদি সত্যিই লড়াই করতে চায়, তাহলে কোনো ফুটবলারের মুখোমুখি না হয়ে আমার বিরুদ্ধে লড়তে পারে।’ পাশ থেকে একজন ইয়াসিনকে বলেন, ‘তুমি তো ওকে ধ্বংস করে ফেলবে।’
মেসি ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ক্লাব ইন্টার মায়ামিতে যোগ দেওয়ার পর ইয়াসিনকে বডিগার্ড হিসেবে নিয়োগ দেন। এরপরই ইয়াসিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যান। ৩৫ বছর বয়সী ইয়াসিন আমেরিকান। আমেরিকান বাবা ও ফরাসি মায়ের ঘরে জন্ম নেওয়া ইয়াসিনের উচ্চতা ৫ ফুট ১০ ইঞ্চি।
আর্জেন্টাইন সংবাদমাধ্যম লা নাসিওন এর আগে জানিয়েছিল, সাবেক মিক্সড মার্শাল আর্টিস্ট ইয়াসিন যুক্তরাষ্ট্র সামরিক বাহিনীর সাবেক নেভি সিল—আফগানিস্তান ও ইরাকে কাজ করেছেন। যদিও ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম মেইল অনলাইন জানিয়েছে, নেভি সিলে বর্তমান সদস্যদের কেউ তাঁর নাম শোনেননি এবং নেভি সিল ডেটাবেজেও ইয়াসিনের নাম নেই। সে যা হোক, তায়কোয়ান্দো ও বক্সিংয়ে বিশেষভাবে দক্ষ ইয়াসিন।
আরও পড়ুনমৃত ম্যারাডোনার কক্ষে ‘চিকিৎসার সরঞ্জাম ছিল না’৩ ঘণ্টা আগেমাঠ ও মাঠের বাইরে মেসি ও তাঁর পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ইয়াসিনের ৫০ জনের একটি দল আছে। দিন-রাত মিলিয়ে ইয়াসিনকে ২৪ ঘণ্টাই মেসি ও তাঁর পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হয়। মেসি যেখানেই যান, সেখানেই আঠার মতো লেগে থাকেন ইয়াসিন। ম্যাচের আগে-পরে তো আছেই, এমনকি শপিং মলেও মেসির সঙ্গে দেখা গেছে তাঁকে। মাঠে কোনো দর্শক দৌড়ে মেসির কাছ পর্যন্ত যেতে চাইলে তাঁকে আগে ইয়াসিনকে টপকানোর পরীক্ষা দিতে হয়।
ইয়াসিন এর আগে হলিউড তারকা লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও, সেলেনা গোমেজ ও ওয়েন উইলসনের নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে কাজ করেছেন। এ ছাড়া ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্য প্রিন্স হ্যারি ও মেগান মার্কেলের লস অ্যাঞ্জেলেসে আসা উপলক্ষে অতিরিক্ত নিরাপত্তারক্ষী হিসেবেও কাজ করেছেন।
লোগান পল রেসলার হিসেবে ২০২২ সালে ডব্লুডব্লুইয়ের সঙ্গে চুক্তি করেন। খণ্ডকালীন রেসলার হিসেবে তাঁকে সেখানে দেখা যায়। ২০২১ সালে ফ্লোরিডায় সাবেক বক্সার ফ্লয়েড মেওয়েদারের সঙ্গে প্রদর্শনী লড়াইয়েও অংশ নেন লোগান। পেশাদার বক্সার ও ইনফ্লুয়েন্সার জ্যাক পল তাঁর ভাই।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প স ট কর
এছাড়াও পড়ুন:
আমাদের যত ঘুঘু
মনিরা হাঁসের (বৈকাল টিল) সন্ধানে ২০১৯ সালের ২৪ ডিসেম্বর রাজশাহীর পদ্মা নদীতে ঘুরে বেড়াচ্ছি। বটতলা ঘাট থেকে ছেড়ে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় আধঘণ্টায় সিমলা পার্কের উল্টো পাশের চরের কাছে আসতেই একটি ঘুঘুকে পাড়ে বসে থাকতে দেখলাম। দ্রুত একটি ছবি তুলে ওটির পরিচয় নিশ্চিত হলাম। এই দুল৴ভ পাখিটি প্রথম দেখি ২০১৪ সালের ২৭ মার্চ কুয়াশাভরা সকালে হবিগঞ্জের কালেঙ্গা বন্য প্রাণী অভয়ারণ্যে। এরপর ২০১৮ সালের ২৬ জানুয়ারি সুন্দরবনের করমজলে।
পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর কাছ থেকে ভালো ছবি তোলার আশায় ধীরে ধীরে নৌকা পাখিটির কাছাকাছি নিতে থাকি। তবে নৌকা যতই কাছে যাক না কেন, সেটি কিন্তু অবিচল—একটুও নড়ছে না, চুপচাপ বসে আছে। কৌতূহলবশত নৌকা থেকে পাড়ে নামলাম, পাখিটির একদম কাছে চলে গেলাম। এরপর সেটি ধীরে ধীরে হাঁটা শুরু করল। আমরাও পিছু নিলাম। কিছুক্ষণ পর অনেকটা অনিচ্ছায় উড়াল দিল পাখিটি।
ঘুঘু পাখি কবুতরের মতো একই গোত্র কোলাম্বিডির (কপোত) সদস্য। ঘুঘুর দেহ কবুতরের মতোই তুলনামূলক ভারী, মাথা ছোট, চঞ্চু ও পা খাটো। ওড়ার পেশি শক্তিশালী। তাই দ্রুত ও দীর্ঘক্ষণ উড়তে সক্ষম। লেজ হাতপাখার মতো বিস্তৃত। তবে আকারে কবুতরের চেয়ে ছোট হয়। এরাও স্ত্রী-পুরুষনির্বিশেষ পিত্তথলিতে উৎপন্ন ক্ষীরের মতো অর্ধতরল দুধ খাইয়ে ছানাগুলোকে বড় করে তোলে, যা ‘পায়রা বা ঘুঘুর দুধ’ নামে পরিচিত। এদেশে এই গোত্রের যে ১৮টি প্রজাতির সন্ধান পাওয়া গেছে, তার মধ্যে ১০টি কবুতর ও ৮টি ঘুঘু রয়েছে। প্রায় অর্ধেকের বেশি প্রজাতি সারা বছর প্রজনন করে। আয়ুষ্কাল চার থেকে ছয় বছর। এখানে এ পাখির সংক্ষিপ্ত পরিচয় তুলে ধরা হলো।
রামঘুঘু (ওরিয়েন্টাল টার্টল ডাব): ফিচারের শুরুতে লালচে বাদামি বর্ণের যে ঘুঘুর গল্প বললাম, সেটি এ দেশের দুর্লভ আবাসিক পাখি রাম, কইতর বা গোলাপ ঘুঘু। বাংলাদেশ ছাড়াও দক্ষিণ ও দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার বহু দেশে এর দেখা মেলে। প্রাপ্তবয়স্ক ঘুঘুর দেহের দৈর্ঘ্য ৩৩ থেকে ৩৫ সেন্টিমিটার। ওজন ১৬৫ থেকে ২৭৪ গ্রাম।
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় উড়ন্ত ধবল ঘুঘু