‘‘সাকিব যদি চায় অনেক কিছুই করতে পারবে’’
Published: 20th, March 2025 GMT
খবরটা পাওয়া গেল বাংলাদেশ সময় গভীর রাতে। হুট করেই খবরটা এলো। বোলিং অ্যাকশনের ত্রুটি শুধরে পরীক্ষায় পাস করেছেন সাকিব আল হাসান। সেই সঙ্গে আবারো আলোচনার বাংলাদেশ ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় তারকা। সাকিবকে নিয়ে আলোচনার শুরুটা অবশ্য বিগত দিনগুলো থেকেই।
জুলাই অভ্যুত্থান সাকিবের স্বাভাবিক গতিপথ বদলে দিয়েছে। ক্রিকেট মাঠ থেকে রাজনীতিতে পা রাখা থেকে শুরু করে দেশান্তরী হওয়া, এসবের শুরুটা ২০২৪ সালের জুলাইয়ে। এরপর একটা সিরিজ বাদে দেশের জার্সিতে আর মাঠে দেখা যায়নি দেশের ক্রিকেটের ‘পোস্টার বয়কে।’
সাকিব যখন দেশে আসার জন্য এবং জার্সি গায়ে মাঠে নামার জন্য ব্যাকুল, ঠিক তখনই মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে এলো বোলিংয়ে অ্যাকশনে ত্রুটি। একবার পরীক্ষা দিয়েও পাস করতে না পারায় জোটে নিষেধাজ্ঞা। যার ফলে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দলেও থাকতে পারেননি দেশসেরা অলরাউন্ডার। শুধু ব্যাটার হিসেবে তাকে দলে নিতে চাননি নির্বাচকরা।
আক্ষেপ নিয়েই বোলিং অ্যাকশন শোধরানোর মিশনে নামেন সাকিব। যুক্তরাষ্ট্রে বসেই অ্যাকশন শুধরে আবারো পরীক্ষায় নামেন। এবার কোনো সমস্যা ছাড়াই পাস করে গেলেন।
এখন থেকে আবার আগের মতো ব্যাটিং-বোলিং দুই বিভাগেই আলো ছড়ানোর সুযোগ থাকছে সাকিবের সামনে। কিন্তু সেটা কী আদৌ সহজ হবে? সাকিবের ভবিষ্যৎ নিয়ে রাইজিংবিডিকে একটা ধারণা দিলেন স্পিন কোচ সোহেল ইসলাম।
ক্রিকেটে অনেকটা সময় পার করে এসেছেন সাকিব। অর্জনের খাতা কম ভারী নয়। সোহেলের মতে, আগামীতে সাকিবের নিজেকে প্রমাণের কিছু নেই। সিদ্ধান্ত বোর্ড ও নির্বাচকদের কোর্টে ঠেলে দিলেন এই কোচ।
সোহেল বলেন, ‘‘সাকিবের ব্যাপারটা হচ্ছে যে, এতোদিন পর এসে ভবিষ্যত আসলে দেখার কিছু নাই। যদি বোলিং ঠিক হয়ে যায়, তারপরে ব্যাটিংটাও ধরেন.
দেশের জার্সিতে সাকিব সবশেষ খেলেছিলেন ২০২৪ সালের অক্টোবরে। ভারতের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচে সবশেষ দেখা গিয়েছিল তাকে। আবারো দেশের জার্সিতে মাঠে নামলে পুরনো রিদম ফিরে পাবেন কী না, প্রশ্ন থেকেই যায়। তবে এগুলো কোনো সমস্যা হিসেবে দেখছেন না সোহেল।
সোহেল আরো বলেন, ‘‘সাকিবের অ্যাবিলিটি নিয়ে কারো কোনো প্রশ্ন নাই। ট্যালেন্টের ব্যাপারেও একই কথা। এতোদিন খেলার পরে রিদমে আসা... আমার কাছে মনে হয় না এগুলো কোনো সমস্যা। এটা ওর ইচ্ছার উপর ডিপেন্ড করে। যতটুকু আমি কাছ থেকে দেখছি, ও যদি চায় ও আসলে অনেক কিছুই করতে পারে।’’
‘‘ফিটনেসটা একটা ব্যাপার, ইস্যু। এটা যদি সেই স্ট্যান্ডার্ডের (খেলার মতো) ফিটনেস মনে হয় তাহলে স্কিল নিয়ে ডাউট করার কোনো সুযোগ নাই।’’ - আরো যোগ করেন সোহেল।
ঢাকা/রিয়াদ/আমিনুল
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
জাতিসংঘ স্থায়ী মিশনে জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে বিশেষ অনুষ্ঠান
জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন ও নিউ ইয়র্কস্থ বাংলাদেশের কনস্যুলেট জেনারেল কর্তৃক যৌথভাবে আয়োজিত এই বিশেষ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) এই বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, যুবসমাজ শুধু আমাদের ভবিষ্যৎই নয়, বাংলাদেশে তারা আমাদের ‘বর্তমান’। এক বছর আগে, তাদের হাত ধরেই সমতা, স্বচ্ছতা এবং ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গঠনের দাবি সার্বজনীন জন-আকাঙ্ক্ষায় রূপ নেয়।
আরো পড়ুন:
জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের অফিস খোলার সিদ্ধান্ত সরকারের বড় অসতর্কতা: মঞ্জু
গাজাকে নিশ্চিহ্ন করার কোনো ন্যায্যতা থাকতে পারে না: গুতেরেস
তৌহিদ হোসেন আরো বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে শুরু হওয়া এই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান লক্ষ্য- সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য ব্যাপক প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার।
তিনি তার বক্তব্যে বিগত এক বছরে বর্তমান সরকারের গৃহীত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপগুলোর কথা তুলে ধরেন।
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতাকে বৈশ্বিক বাস্তবতার সঙ্গে অত্যন্ত সঙ্গতিপূর্ণ মন্তব্য করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্যে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন বলেন, তারুণ্যের প্রতি আস্থা রাখলে তারা জাতি গঠনের কেন্দ্রে দাঁড়াতে পারে। তিনি বলেন, যারা এক সময় মিছিলের অগ্রভাগে ছিল, আজ তারা নীতিনির্ধারণে অংশ নিচ্ছে, আর আগামী দিনের দিকনির্দেশনা ঠিক করতে সামনে থেকেই নেতৃত্ব দিচ্ছে। বাংলাদেশে তারুণ্যের নেতৃত্ব জাতিসংঘের যুববিষয়ক নীতি ও কার্যক্রমের সঙ্গে দৃঢ়ভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে তিনি উল্লেখ করেন।
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার সফল গণআন্দোলনের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে জাতীয় পর্যায়ের অনুষ্ঠানমালার আলোকে জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের মিলনায়তনে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে জুলাই গণঅভ্যুত্থান সম্পর্কিত তথ্যচিত্র এবং পোস্টার, দেয়াললিখন ও আলোকচিত্র প্রভৃতির প্রদর্শনীর মাধ্যমে বাংলাদেশের রাজনৈতিক নবযাত্রায় যুব সমাজের অনন্য অবদানকে উদযাপন করা হয়। বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, জাতিসংঘের কর্মকর্তাবৃন্দসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণে এই বিশেষ আয়োজনে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি এবং জাতিসংঘের ইয়ুথ অফিসের প্রতিনিধি ড. সুধা বালাকৃষ্ণণ বক্তব্য রাখেন।
ড. বালাকৃষ্ণণ তার বক্তব্যে বলেন, জাতিসংঘ সমাজ পরিবর্তনে যুবসমাজের সত্যিকারের অংশগ্রহণকে সর্বদাই উৎসাহিত করে থাকে। বাংলাদেশে রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় পরিবর্তনের অগ্রভাগে থাকা যুবশক্তি তাই অন্যান্য সমাজের জন্যও অনুপ্রেরণার উৎস হতে পারে।
উল্লেখ্য, ফিলিস্তিন সমস্যার দুই-জাতি-ভিত্তিক সমাধানের লক্ষ্যে জাতিসংঘের একটি উচ্চ-পর্যায়ের সভায় অংশগ্রহণের জন্য পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বর্তমানে নিউ ইয়র্কে অবস্থান করছেন।
ঢাকা/হাসান/ফিরোজ