ফিলিস্তিন সংহতি কমিটি বাংলাদেশের আহ্বায়ক ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, ‘ফিলিস্তিনের মানুষের মুক্তির লড়াই আমাদেরও। এ লড়াই পুঁজিবাদ ও সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে। পুঁজিবাদ ও সাম্রাজ্যবাদ থামানো না গেলে এ ধরনের আগ্রাসন এবং হামলা অব্যাহত থাকবে।’

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে এ কথাগুলো বলেন অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যা বন্ধে এ বিক্ষোভে আয়োজন করা হয়। ফিলিস্তিন সংহতি কমিটি বাংলাদেশের আয়োজনে সমাবেশ শেষে একটি মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘আমরা ফিলিস্তিনের পক্ষে আছি, পক্ষে থাকব। এ পক্ষে থাকার অর্থ হচ্ছে, যারা এ হত্যাকাণ্ড ঘটাচ্ছে বা যে ব্যবস্থা এ হত্যাকাণ্ড ঘটাচ্ছে তার বিরুদ্ধে আমাদের এ সংগ্রাম। আমরা এ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত এই অধ্যাপক বলেন, ‘আগে ইসরায়েল ফিলিস্তিনে হামলা করলে মধ্যপ্রাচ্য থেকে প্রতিবাদ হতো, এখন হয় না। এর কারণ, মধ্যপ্রাচ্যও এখন পুঁজিবাদের অংশ হয়ে গেছে। কাজেই আমাদের এ লড়াই পুঁজিবাদী ও সাম্রাজ্যবাদী ব্যবস্থার বিরুদ্ধে। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের সমর্থন আছে, এটা স্পষ্ট। ডোনাল্ড ট্রাম্পের কারণে আজ এই নৃশংস ঘটনা ঘটছে।’

সমাবেশে অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, আরব দেশগুলোর নিষ্ক্রিয়তার কারণে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের সহযোগিতা নিয়ে ফিলিস্তিনে গণহত্যা চালানোর সুযোগ পাচ্ছে ইসরায়েল। আজকে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের এক হাত যদি হয় ইসরায়েল, তাহলে তার আরেক হাত সৌদি আরব। জাতিসংঘ একটি অকার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। তার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের সাম্রাজ্যবাদী বিশ্বব্যবস্থা কর্তৃত্ব করছিল এবং এখনো করছে।

আনু মুহাম্মদের বক্তব্যে উঠে আসে বাংলাদেশে ভারতের আধিপত্যের বিষয়টিও। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে ভারতের আধিপত্যের কারণে জমিতে, ভূমিতে, আমাদের রাজনীতিতে বিভিন্ন জটিলতায় পড়েছি। অনেকে মনে করেন, জনগণের অধিকার হরণে যে হস্তক্ষেপ করেছে ভারত, তা থেকে যুক্তরাষ্ট্র আমাদের মুক্ত করবে। ভারতের আধিপত্য থেকে আমাদের মুক্ত করার কোনো দায় যুক্তরাষ্ট্রের নেই, তার দায় ভারতের সঙ্গে সংহতি রেখে নিজের স্বার্থ এবং আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করা।’

সমাবেশে অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বক্তব্য দেন। ঢাকা, ২০ মার্চ.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স র জ ল ইসল ম চ ধ র ব যবস থ ইসর য় ল আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

সুদানে ‘গণহত্যা’ হয়েছে

সুদানের এল-ফাশের শহর ও এর আশপাশের বিভিন্ন স্থানে গণহত্যা চলছে। কৃত্রিম ভূ–উপগ্রহের ছবি বিশ্লেষণ করে ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা এমন দাবি করেছেন। জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেখানকার পরিস্থিতিকে ‘ভয়াবহ’ বলে উল্লেখ করেছেন।

২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে দেশটির আধা সামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সসের (আরএসএফ) লড়াই চলছে। গত রোববার তারা এল-ফাশের দখল করে। এর মাধ্যমে প্রায় দেড় বছরের দীর্ঘ অবরোধের পর পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে সেনাবাহিনীর সর্বশেষ শক্ত ঘাঁটিটিও ছিনিয়ে নেয় তারা।

শহরটি পতনের পর থেকে সেখানে বিচারবহির্ভূত হত্যা, যৌন সহিংসতা, ত্রাণকর্মীদের ওপর হামলা, লুটপাট এবং অপহরণের খবর পাওয়া যাচ্ছে। সেখানকার যোগাযোগব্যবস্থা প্রায় সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন।

এল-ফাশের থেকে পালিয়ে পার্শ্ববর্তী তাওইলা শহরে জীবিত বেঁচে ফেরা কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে এএফপির সাংবাদিক কথা বলেছেন। সেখানে গণহত্যা হয়েছে জানিয়ে তাঁরা বলেন, শহরটিতে মা-বাবার সামনেই শিশুদের গুলি করা হয়েছে। প্রাণ বাঁচাতে পালানোর সময় সাধারণ মানুষকে মারধর করে তাঁদের মূল্যবান সামগ্রী লুট করা হয়েছে।

পাঁচ সন্তানের মা হায়াত শহর থেকে পালিয়ে আসা ব্যক্তিদের একজন। তিনি বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে থাকা তরুণদের আসার পথেই আধা সামরিক বাহিনী থামিয়ে দেয়। আমরা জানি না, তাদের কী হয়েছে।’

ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যানিটারিয়ান রিসার্চ ল্যাব বলেছে, গত শুক্রবার পাওয়া কৃত্রিম উপগ্রহের ছবিতে ‘বড় ধরনের কোনো জমায়েত চোখে পড়েনি।’ এ কারণে মনে করা হচ্ছে, সেখানকার জনগণের বড় একটি অংশ হয় ‘মারা গেছে, বন্দী হয়েছে কিংবা লুকিয়ে আছে।’ সেখানে গণহত্যা অব্যাহত থাকার বিভিন্ন ইঙ্গিত স্পষ্টভাবে দেখা গেছে।

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, আল-ফাশের থেকে এখন পর্যন্ত ৬৫ হাজারের বেশি মানুষ পালিয়েছে। এখনো কয়েক হাজার মানুষ শহরটিতে আটকা পড়েছে। আরএসএফের সর্বশেষ হামলার আগে সেখানে প্রায় আড়াই লাখ মানুষ বসবাস করত।

শনিবার বাহরাইনে এক সম্মেলনে জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োহান ভাডেফুল বলেন, সুদান একটি ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। সেখানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে। আরএসএফ নাগরিকদের সুরক্ষার অঙ্গীকার করেছিল। কিন্তু তাদের এই কর্মকাণ্ডের জন্য জবাবদিহির মুখোমুখি হতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শাহরুখ খান: গণহত্যার সময় বিলিয়নিয়ার হওয়ার অর্থ কী
  • সুদানের এল-ফাশের শহরে ‘চরম বিপদে’ বাসিন্দারা: ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস
  • সুদানে গণহত্যার প্রতিবাদে জাবি ও জবিতে মানববন্ধন
  • জুলাইবিরোধী শক্তির শাস্তি দাবিতে ইবিতে বিক্ষোভ
  • সুদানে আরএসএফের গণহত্যায় আরব আমিরাত ইন্ধন দিচ্ছে কেন
  • সুদানে ‘গণহত্যা’ হয়েছে
  • একাত্তরের গণহত্যার জন্য জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে হবে: আলাল