ফিলিস্তিনের মানুষের মুক্তির লড়াই আমাদেরও: সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী
Published: 20th, March 2025 GMT
ফিলিস্তিন সংহতি কমিটি বাংলাদেশের আহ্বায়ক ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, ‘ফিলিস্তিনের মানুষের মুক্তির লড়াই আমাদেরও। এ লড়াই পুঁজিবাদ ও সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে। পুঁজিবাদ ও সাম্রাজ্যবাদ থামানো না গেলে এ ধরনের আগ্রাসন এবং হামলা অব্যাহত থাকবে।’
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে এ কথাগুলো বলেন অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যা বন্ধে এ বিক্ষোভে আয়োজন করা হয়। ফিলিস্তিন সংহতি কমিটি বাংলাদেশের আয়োজনে সমাবেশ শেষে একটি মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘আমরা ফিলিস্তিনের পক্ষে আছি, পক্ষে থাকব। এ পক্ষে থাকার অর্থ হচ্ছে, যারা এ হত্যাকাণ্ড ঘটাচ্ছে বা যে ব্যবস্থা এ হত্যাকাণ্ড ঘটাচ্ছে তার বিরুদ্ধে আমাদের এ সংগ্রাম। আমরা এ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত এই অধ্যাপক বলেন, ‘আগে ইসরায়েল ফিলিস্তিনে হামলা করলে মধ্যপ্রাচ্য থেকে প্রতিবাদ হতো, এখন হয় না। এর কারণ, মধ্যপ্রাচ্যও এখন পুঁজিবাদের অংশ হয়ে গেছে। কাজেই আমাদের এ লড়াই পুঁজিবাদী ও সাম্রাজ্যবাদী ব্যবস্থার বিরুদ্ধে। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের সমর্থন আছে, এটা স্পষ্ট। ডোনাল্ড ট্রাম্পের কারণে আজ এই নৃশংস ঘটনা ঘটছে।’
সমাবেশে অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, আরব দেশগুলোর নিষ্ক্রিয়তার কারণে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের সহযোগিতা নিয়ে ফিলিস্তিনে গণহত্যা চালানোর সুযোগ পাচ্ছে ইসরায়েল। আজকে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের এক হাত যদি হয় ইসরায়েল, তাহলে তার আরেক হাত সৌদি আরব। জাতিসংঘ একটি অকার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। তার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের সাম্রাজ্যবাদী বিশ্বব্যবস্থা কর্তৃত্ব করছিল এবং এখনো করছে।
আনু মুহাম্মদের বক্তব্যে উঠে আসে বাংলাদেশে ভারতের আধিপত্যের বিষয়টিও। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে ভারতের আধিপত্যের কারণে জমিতে, ভূমিতে, আমাদের রাজনীতিতে বিভিন্ন জটিলতায় পড়েছি। অনেকে মনে করেন, জনগণের অধিকার হরণে যে হস্তক্ষেপ করেছে ভারত, তা থেকে যুক্তরাষ্ট্র আমাদের মুক্ত করবে। ভারতের আধিপত্য থেকে আমাদের মুক্ত করার কোনো দায় যুক্তরাষ্ট্রের নেই, তার দায় ভারতের সঙ্গে সংহতি রেখে নিজের স্বার্থ এবং আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করা।’
সমাবেশে অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বক্তব্য দেন। ঢাকা, ২০ মার্চ.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স র জ ল ইসল ম চ ধ র ব যবস থ ইসর য় ল আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ