বিদ্যুৎ বিভ্রাটে বন্ধ হিথ্রো বিমানবন্দর, বাতিল হচ্ছে ১৩০০ ফ্লাইট
Published: 21st, March 2025 GMT
কাছের একটি বৈদ্যুতিক উপকেন্দ্রে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় যুক্তরাজ্যের হিথ্রো বিমানবন্দর বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত এ বিমানবন্দরটি আজ শুক্রবার সারা দিন বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এতে হাজার হাজার যাত্রী আটকা পড়েছেন। যে উপকেন্দ্রটিতে আগুন লেগেছে সেখান থেকেই হিথ্রো বিমানবন্দরে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। বৃহস্পতিবার রাতে এ আগুনের কারণে বিমানবন্দরে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। আগুন লাগার কারণ এখনও জানা যায়নি। খবর-বিবিসি
হিথ্রো বিমানবন্দরে মোট কত ফ্লাইটের উড্ডয়ন ও অবতরণ আজ বন্ধ থাকতে পারে সে সম্পর্কে সরকারি কোনো পরিসংখ্যান পাওয়া যায়নি। তবে ফ্লাইট রাডার২৪ জানিয়েছে, এ সংখ্যা কমপক্ষে ১ হাজার তিনশ’ ৫১টি হতে পারে। হিথ্রো যুক্তরাজ্যের বৃহত্তম বিমানবন্দর যেখানে প্রতিদিন প্রায় ১৩০০টি ফ্লাইটের অবতরণ ও উড্ডয়ন হয়। গত বছর রেকর্ড ৮ কোটি ৩৯ লাখ যাত্রী এ টার্মিনাল দিয়ে ভ্রমণ করেছেন।
এদিকে হিথ্রো বিমানবন্দর বন্ধের কারণে বিশ্বজুড়ে উড়োজাহাজ চলাচলের সময়সূচি ব্যাহত হচ্ছে। এই অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে যাত্রীদের বিমানবন্দরে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। আরও তথ্যের জন্য তাঁদের এয়ারলাইনসের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
লন্ডন ফায়ার ব্রিগেড জানিয়েছে, বৈদ্যুতিক উপকেন্দ্রের আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের প্রায় ৭০ কর্মী কাজ করছেন। বৈদ্যুতিক উপকেন্দ্র এলাকার আকাশে আগুনের লেলিহান শিখা ও কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী আকাশে উড়তে দেখা যায়।
উড়োজাহাজের চলাচল অনুসরণকারী (ফ্লাইট ট্র্যাকিং) ওয়েবসাইট ফ্লাইটরাডার২৪-এর তথ্য অনুসারে, ইতিমধ্যে বেশ কিছু ফ্লাইট অন্যান্য বিমানবন্দরের দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে হিথ্রো বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বলেছে, যাত্রী ও সহকর্মীদের নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য ২১ মার্চ রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত বিমানবন্দর বন্ধ থাকবে। যাত্রীদের এই বিমানবন্দরে না আসার জন্য পরামর্শ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বিমানবন্দরের একজন মুখপাত্র বলেন, অগ্নিনির্বাপক দল ঘটনাস্থলে কাজ করছে। তবে আমরা নিশ্চিত নই, বিদ্যুৎ সরবরাহ কার্যক্রম আবার কখন চালু হবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
হিথ্রোর ট্রাফিক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বর্তমানে ১২০টি উড়োজাহাজ হিথ্রোর উদ্দেশে আকাশে রয়েছে, যেগুলো অন্য বিমানবন্দরে অবতরণ করতে হবে, না হয় যেখান থেকে এসেছিল, সেখানে ফিরে যেতে হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আগ ন উপক ন দ র ফ ল ইট র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলে মার্কিন অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর চেষ্টা সিনেটে ব্যর্থ
গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক নিন্দার মধ্যে, ইসরায়েলের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রি আটকাতে মার্কিন সিনেটে তোলা একটি বিল পাস হতে ব্যর্থ হয়েছে।
ব্যর্থ হলেও, বুধবারের ভোটে দেখা গেছে, মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতরে ইসরায়েলের যুদ্ধের বিরোধিতা জোরদার হয়ে উঠেছে।
আজ বৃহস্পতিবার কাতারভিত্তিক আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর প্রচেষ্টায় এবারের ভোটে উল্লেখযোগ্য সংখ্যাক ডেমোক্র্যাট যোগ দিয়েছেন।
ইসরায়েলের কাছে ২০ হাজার স্বয়ংক্রিয় অ্যাসল্ট রাইফেল বিক্রি বন্ধ করার প্রস্তাবের পক্ষে ২৭ জন ডেমোক্র্যাট ভোট দিয়েছেন, আর ৬৭৫ মিলিয়ন ডলারের বোমার চালান বন্ধ করার পক্ষে ২৪ জন ভোট দিয়েছেন।
অন্যদিকে, ভোটদারকারী সব রিপাবলিকান সিনেটররা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রির দুটি চুক্তি আটকে দিতে প্রস্তাবগুলো সিনেটে আনেন ভার্মন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। তিনি প্রগতিশীল ঘরানার স্বতন্ত্র সিনেটর।
ভোটের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে স্যান্ডার্স বলেন, “ওয়াশিংটন ইসরায়েলের ‘বর্ণবাদী সরকার’কে এমন অস্ত্র সরবরাহ করা চালিয়ে যেতে পারে না, যা নিরীহ মানুষদের হত্যা করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।”
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে একজন ‘জঘন্য মিথ্যাবাদী’ হিসেবে উল্লেখ করে স্যান্ডার্স ‘এক্স’ পোস্টে আরো বলেন, “গাজায় শিশুরা না খেয়ে মারা যাচ্ছে।”
প্রথমবারের মতো স্যান্ডার্সের প্রস্তাবকে সমর্থনকারী আইন প্রণেতাদের মধ্যে, ওয়াশিংটন রাজ্যের সিনেটর প্যাটি মারে বলেছেন, প্রস্তাবগুলো ‘নিখুঁত’ না হলেও, তিনি গাজার নিষ্পাপ শিশুদের অব্যাহত দুর্ভোগকে সমর্থন করতে পারেন না।
মারে এক বিবৃতিতে বলেন, “ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সমর্থক হওয়া সত্ত্বেও আমি প্রস্তাবের পক্ষে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিচ্ছি এই বার্তা দিতে: নেতানিয়াহু সরকার এই কৌশল চালিয়ে যেতে পারবে না।”
তিনি বলেন, “নেতানিয়াহু ক্ষমতায় থাকার জন্য প্রতিটি পদক্ষেপে এই যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করেছেন। আমরা গাজায় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ প্রত্যক্ষ করছি- সীমান্তের ওপারে যখন প্রচুর পরিমাণে সাহায্য ও সরবরাহ পড়ে আছে, তখন শিশু এবং পরিবারগুলোর অনাহার বা রোগে মারা যাওয়া উচিত নয়।”
মার্কিন জনগণের মধ্যে গাজা যুদ্ধের বিরোধিতা ক্রমবর্ধমান হওয়ার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন নিয়ে ব্যাপক আকারে বিভক্তি দেখা দিয়েছে।
মঙ্গলবার প্রকাশিত গ্যালাপের একটি জরিপে দেখা গেছে, ৩২ শতাংশ আমেরিকান বলেছেন, তারা গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান সমর্থন করেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৪২ শতাংশ আমেরিকান ইসরায়েলের অভিযান সমর্থন করেছিলেন।
গ্যালাপের মতে, পরিচয় প্রকাশ করে মাত্র ৮ শতাংশ ডেমোক্র্যাট বলেছেন যে তারা ইসরায়েলের অভিযানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন, যেখানে ৭১ শতাংশ রিপাবলিকান বলেছেন জানিয়েছেন যে, তারা ইসরায়েলি পদক্ষেপকে সমর্থন করেছেন।
ঢাকা/ফিরোজ