‘না বুঝে অনেক কিছুই করে ফেলে শিশু-কিশোররা। এ জন্য অনুষ্ঠানে ঘটে যাওয়া ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত হলেও এ নিয়ে মনের মধ্যে রাগ পুষে রাখিনি। বরং প্রতিযোগীদের এই পরামর্শ দিয়েছি যে, কোনো কিছু করার আগে সেটি উচিত না অনুচিত– অভিভাবকদের কাছ থেকে তা জেনে নেওয়া জরুরি। তা না হলে আগামীতে অনেকে স্বেচ্ছাচারী হয়ে উঠতে পারে। একজন বিচারক হিসেবে এই বিষয়টি প্রতিযোগীদের স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দেওয়া দায়িত্ব বলেই মনে করেছি।’
‘হিপহপ ইন্ডিয়া’-তে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা নিয়ে এটাই ছিল বলিউড অভিনেত্রী ও কোরিওগ্রাফার মালাইকা আরোরার বক্তব্য।
এই রিয়েলিটি শো-এর দ্বিতীয় সিজনে তিনি বিচারকের দায়িত্ব পালন করছেন। সে দায়িত্ব পালন করতে গিয়েই এবার নতুন এক অভিজ্ঞতা হয়েছে তাঁর। হঠাৎ করেই প্রতিযোগীর অচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠতে দেখা গেছে বিচারকের আসনে থাকা মালাইকাকে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম থেকে জানা গেছে, ঘটনাটি কয়েকদিন আগের। সেদিন নাচের রিয়েলিটি ‘হিপহপ ইন্ডিয়া’-তে রেমো ডি’সুজার সঙ্গে বিচারকের আসনে ছিলেন মালাইকা অরোরা। মঞ্চে তখন পারফর্ম করতে এসেছে ১৬ বছরের এক কিশোর প্রতিযোগী। মালাইকাকে দেখে হঠাৎই যেন সে মাত্রাতিরিক্ত উৎসাহী। নাচতে নাচতে অভিনেত্রীর উদ্দেশে চুম্বন ছুড়ে সে! চোখের ইশারা করে। ব্যস, সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবাদে ফেটে পড়েন অভিনেত্রী। রাগের চোটে ক্যামেরার সামনে বকাবকি করতে থাকেন। সেই ভিডিও এখন ভাইরাল। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিশোরের আচরণ নিয়েও চলছে সমালোচনা।
তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কে কী মত প্রকাশ করছে, তা নিয়ে ভাবছেন না মালাইকা; বরং বিষয়টি নিয়ে নতুন করে জলঘোলা না করার অনুরোধ জানিয়েছেন।
মালাইকার কথায়, ‘নাচকে জীবন্ত করে তুলতে আমরাও মাঝে মাঝে অভিনয় করি। উড়ন্ত চুম্বন ছুড়ে দিই দর্শকের দিকে। চোখের ইশারাও করি। কিন্তু সেদিন প্রতিযোগী ছেলেটি যা করেছে, তা অনেকটা বাড়াবাড়ি হয়ে গেছে বলেই মনে করি। মাত্র ১৬ বছরের এক কিশোরকে কি এই আচরণ মানায়? একদম মানায় না।’
এই অভিনেত্রী আরও জানিয়েছেন, প্রথম থেকেই প্রতিযোগী ছেলেটির হাবভাব অন্য রকম ছিল। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ছেলেটি চোখে চোখ রেখে নেচেছে। এক মুহূর্তের জন্যও তাঁর দিক থেকে দৃষ্টি সরায়নি। এর সঙ্গে ছিল নিন্দনীয় অঙ্গভঙ্গি। যা তাঁকে ভীষণ অস্বস্তিতে ফেলেছিল বলেও স্বীকার করেছেন মালাইকা। তবে পুরো বিষয়টির সঠিক সমাধানে প্রতিযোগীদের এক করে সৎ পরামর্শ দিতেও দেরি করেননি।
এমনকি সেই কিশোর প্রতিযোগীকে উদ্দেশ করে এও বলেছেন, ‘ওর নাচ নিখুঁত। পারফরম্যান্সে কোনো ফাঁকি নেই। সুযোগ পেলে সে আগামী দিনে অনেক বড় নৃত্যশিল্পী হয়ে উঠতে পারবে।’
  
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের উদ্দেশ্যে ‘ভুয়া-ভুয়া’ স্লোগান পছন্দ হয়নি স্যামির
চট্টগ্রামের সাগরিকায় উপস্থিত থাকা দর্শকরা গতকাল ওয়েস্ট ইন্ডিজকে সাপোর্ট করেছে এমন কথা শুনলে অবাক হবেন নিশ্চিয়ই? অবাক হওয়ার কিছু নেই। সত্যিই এমন কিছুই হয়েছে বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে।
 ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থ বাংলাদেশ দল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন দর্শকরা আপাতদৃষ্টিতে এমনটাই মনে হয়েছে। লাল-সবুজের পতাকা গ্যালারিতে উড়তে দেখা যায়নি তেমনটা নয়। কিন্তু ম্যাচ যত গড়িয়েছে সেই পতাকা উড়ানোও তত কমেছে। টিকিটের মূল্য একেবারে হাতের নাগালে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন। তবুও ভরেনি গ্যালারি। 
লিটন, জাকের, তাসকিন, শরিফুল, সাইফদের পারফরম্যান্স এমন গড়পড়তা যে সমর্থকরা প্রতিপক্ষের ব্যাটিং-বোলিং দেখেই বেশি আনন্দিত হচ্ছেন। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের যে নিবেদন, যে চাহিদা তা রোস্টন চেজ, আকিম আগাস্তের ব্যাটে পাওয়া গেলে সমর্থকদের দোষ কোথায়? তাদের চার-ছক্কায় গ্যালারিতে তালির ঝড় উঠে। উল্লাস, উদ্দীপনায় মাততে দেখা যায়।
 আর স্বাগতিক দলের জন্য উড়ে আসে দুয়ো ধ্বনি। ‘ভুয়া-ভুয়া’ স্লোগান চললো পুরো ম্যাচ জুড়েই। বিশেষ করে সীমানায় থাকা ক্রিকেটাররা দর্শকদের রোষানলে পড়লেন বেশি। শুধু তা-ই নয়, স্টেডিয়ামের যাওয়া-আসার পথেও সেই সমর্থকরাই ‘ভুয়া-ভুয়া’ স্লোগানে এলোমেলা করে দেন ক্রিকেটারদের। 
বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের উদ্দেশ্যে এসব স্লোগান একেবারেই পছন্দ হয়নি ওয়েস্ট ইন্ডিজের কোচ ড্যারেন স্যামির। ক্যারিয়ারে নানা সময় বাংলাদেশে আসায় কিছুটা বাংলা শব্দ তারও জানা। তবে ভুয়া অর্থটা জেনেছেন এবারই। তাইতো তার হৃদয়ে কিছুটা দহনও হচ্ছে বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য, “তারা (দর্শকরা) ক্রিকেটারদের সঙ্গে যেভাবে আচরণ করেছে, সেটা আমার ভালো লাগেনি। আমি শুনেছি তারা ‘ভুয়া, ভুয়া’ বলছে। এর অর্থও আমি জেনেছি। কিন্তু আমি মনে করি না, হোম টিমের দর্শক হিসেবে এমন করা উচিত। কারণ আপনারা তখন সমর্থক। প্রত্যেক ক্রিকেটারই মাঠে আসে তাদের সেরাটা দেওয়ার জন্য। তাই আপনাদের উচিত, তাদের সমর্থন করা।”
ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দুইবার বিশ্বকাপ জেতানো স্যামি কঠিন সময়ে ক্রিকেটারদের পাশে থাকার কথা বললেন, ‘‘তবুও তারা (দর্শকরা) ভালো। তারা নিজেদের দলকে পারফর্ম করতে দেখতে চায়। তবে যত বেশি সমর্থন ও উৎসাহ দেবেন, তারা তত দূর যেতে পারবে। ক্রিকেটারদের অযথা চাপে ফেলবেন না। ফ্যানদের বলব, তাদের (ক্রিকেটারদের) সঙ্গে সুন্দর আচরণ করুন।”
চট্টগ্রাম/ইয়াসিন