হামলা-ভাঙচুর মামলায় জাতীয় নাগরিক কমিটির প্রতিনিধিসহ গ্রেপ্তার ২
Published: 22nd, March 2025 GMT
পিরোজপুরে নির্মাণাধীন মডেল মসজিদে চাঁদা চেয়ে না পেয়ে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় জাতীয় নাগরিক কমিটির প্রতিনিধি মুসাব্বির মাহমুদ সানি ও তার সহযোগী মিলন শিকদারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার (২২ মার্চ) বিকেলে পিরোজপুরের কাপুড়িয়া পট্টি এলাকার ব্র্যাক ব্যাংকের চতুর্থ তলা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পিরোজপুর সদর থানার ওসি আব্দুস সোবহান গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তার মুসাব্বির মাহমুদ সানি পিরোজপুর সদর উপজেলার উত্তর মাছিমপুর গ্রামের মো.
আরো পড়ুন:
শিশুকে যৌন নিপীড়ন, যুবক গ্রেপ্তার
কলেজছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলার আসামি গ্রেপ্তার
ওসি আব্দুস সোবহান বলেন, গত শুক্রবার (২১ মার্চ) রাতে পিরোজপুরে নির্মাণাধীন মডেল মসজিদে হামলা, ভাঙচুর ও টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ দায়ের হওয়া একটি মামলায় মুসাব্বির মাহমুদ সানি ও তার সহযোগী মিলন শিকদারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মুসাব্বির মাহমুদ সানির বিরুদ্ধে আরো কয়েকটি অভিযোগ রয়েছে। তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
গত শুক্রবার (২১ মার্চ) দুপুরে পিরোজপুর সদর উপজেলার নির্মাণাধীন মডেল মসজিদে মুসাব্বির মাহমুদ সানিসহ ২৫ থেকে ৩০ জনের একটি দল হামলা, ভাঙচুর ও টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটান। এ ঘটনায় শুক্রবার (২১ মার্চ) রাতে হামলার স্বীকার প্রজেক্ট ম্যানেজার মো. শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে পিরোজপুর সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
থানায় দায়ের হওয়া লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, কিছুদিন ধরে অভিযুক্ত মুসাব্বির মাহমুদ সানিসহ নাম না জানা কয়েকজন এসে উপজেলা মডেল মসজিদের কাজ বন্ধ করে দিতে চায়। কাজ চালানোর জন্য ২০ লাখ টাকা দাবি করেন তারা। অভিযোগকারী চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে শুক্রবার দুপুরে অভিযুক্ত মুসাব্বির মাহমুদ সানিসহ ২০ থেকে ২৫ জন এসে অতর্কিত হামলা চালায় এবং অভিযোগকারী শহিদুল ইসলামের থাকার জায়গা ভাঙচুর করে ৫ লাখ টাকাসহ বিভিন্ন মালামাল লুটপাট করে নেয়। এসময় এলাকাবাসী এগিয়ে আসলে অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়।
থানায় লিখিত অভিযোগকারী নির্মাণাধীন মডেল মসজিদের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইজি-এমকেবি-এমআরবি (জেভি) এর প্রজেক্ট ম্যানেজার মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, “ওই দিন দুপুরে মুসাব্বির মাহমুদ সানিসহ অজ্ঞাতনামা ২০ থেকে ২৫ জন পিরোজপুরের নির্মাণাধীন সদর উপজেলা মডেল মসজিদে এসে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দিলে তারা আমার থাকার রুমে হামলা চালায়। তারা ক্যাশ বক্স ভেঙে নগদ ৫ লাখ টাকা, সিসিটিভি ফুটেজ গোপন করতে কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক, ১২টি হ্যালোজেন লাইট নিয়ে যায়। এসময় শ্রমিকদের থাকার ঘরও ভাঙচুরসহ শ্রমিকদের মারধর করা হয়।”
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি মেহেদী হাসান বলেন, “হঠাৎ তারা এসে হামলা চালায়। তাদের হাতে হামার, চাইনিজ কুড়াল ও রড ছিল। তারা সেগুলো দিয়ে জিনিসপত্র ভাঙা শুরু করে। আমাকে মারধর শুরু করে। আমাদের সিসি ক্যামেরা ভাঙচুর করে এবং শ্রমিকের বেতনের জন্য রাখা ৫ লাখ টাকা নিয়ে যায়।”
ঢাকা/তাওহিদুল/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ ক রব র উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস