পিরোজপুরে নির্মাণাধীন মডেল মসজিদে চাঁদা চেয়ে না পেয়ে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় জাতীয় নাগরিক কমিটির প্রতিনিধি মুসাব্বির মাহমুদ সানি ও তার সহযোগী মিলন শিকদারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

শনিবার (২২ মার্চ) বিকেলে পিরোজপুরের কাপুড়িয়া পট্টি এলাকার ব্র্যাক ব্যাংকের চতুর্থ তলা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পিরোজপুর সদর থানার ওসি আব্দুস সোবহান গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গ্রেপ্তার মুসাব্বির মাহমুদ সানি পিরোজপুর সদর উপজেলার উত্তর মাছিমপুর গ্রামের মো.

কিছলুর ছেলে। মিলন শিকদার একই উপজেলার উত্তর নামাজপুর গ্রামের লিটন শিকদারের ছেলে। মুসাব্বির মাহমুদ সানি পিরোজপুর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও জাতীয় নাগরিক কমিটির প্রতিনিধি।

আরো পড়ুন:

শিশুকে যৌন নিপীড়ন, যুবক গ্রেপ্তার

কলেজছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলার আসামি গ্রেপ্তার

ওসি আব্দুস সোবহান বলেন, গত শুক্রবার (২১ মার্চ) রাতে পিরোজপুরে নির্মাণাধীন মডেল মসজিদে হামলা, ভাঙচুর ও টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ দায়ের হওয়া একটি মামলায় মুসাব্বির মাহমুদ সানি ও তার সহযোগী মিলন শিকদারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মুসাব্বির মাহমুদ সানির বিরুদ্ধে আরো কয়েকটি অভিযোগ রয়েছে। তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।

গত শুক্রবার (২১ মার্চ) দুপুরে পিরোজপুর সদর উপজেলার নির্মাণাধীন মডেল মসজিদে মুসাব্বির মাহমুদ সানিসহ ২৫ থেকে ৩০ জনের একটি দল হামলা, ভাঙচুর ও টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটান। এ ঘটনায় শুক্রবার (২১ মার্চ) রাতে হামলার স্বীকার প্রজেক্ট ম্যানেজার মো. শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে পিরোজপুর সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।  

থানায় দায়ের হওয়া লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, কিছুদিন ধরে অভিযুক্ত মুসাব্বির মাহমুদ সানিসহ নাম না জানা কয়েকজন এসে উপজেলা মডেল মসজিদের কাজ বন্ধ করে দিতে চায়। কাজ চালানোর জন্য ২০ লাখ টাকা দাবি করেন তারা। অভিযোগকারী চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে শুক্রবার দুপুরে অভিযুক্ত মুসাব্বির মাহমুদ সানিসহ ২০ থেকে ২৫ জন এসে অতর্কিত হামলা চালায় এবং অভিযোগকারী শহিদুল ইসলামের থাকার জায়গা ভাঙচুর করে ৫ লাখ টাকাসহ বিভিন্ন মালামাল লুটপাট করে নেয়। এসময় এলাকাবাসী এগিয়ে আসলে অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়।

থানায় লিখিত অভিযোগকারী নির্মাণাধীন মডেল মসজিদের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইজি-এমকেবি-এমআরবি (জেভি) এর প্রজেক্ট ম্যানেজার মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, “ওই দিন দুপুরে মুসাব্বির মাহমুদ সানিসহ অজ্ঞাতনামা ২০ থেকে ২৫ জন পিরোজপুরের নির্মাণাধীন সদর উপজেলা মডেল মসজিদে এসে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দিলে তারা আমার থাকার রুমে হামলা চালায়। তারা ক্যাশ বক্স ভেঙে নগদ ৫ লাখ টাকা, সিসিটিভি ফুটেজ গোপন করতে কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক, ১২টি হ্যালোজেন লাইট নিয়ে যায়। এসময় শ্রমিকদের থাকার ঘরও ভাঙচুরসহ শ্রমিকদের মারধর করা হয়।”

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি মেহেদী হাসান বলেন, “হঠাৎ তারা এসে হামলা চালায়। তাদের হাতে হামার, চাইনিজ কুড়াল ও রড ছিল। তারা সেগুলো দিয়ে জিনিসপত্র ভাঙা শুরু করে। আমাকে মারধর শুরু করে। আমাদের সিসি ক্যামেরা ভাঙচুর করে এবং শ্রমিকের বেতনের জন্য রাখা ৫ লাখ টাকা নিয়ে যায়।”

ঢাকা/তাওহিদুল/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ ক রব র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

সিদ্ধিরগঞ্জে প্রবাসী স্বামীর বাড়িতে স্ত্রীর তালা

সিদ্ধিরগঞ্জে জোর পূর্বক সম্পত্তি লিখে নিতে সন্ত্রাসী দিয়ে নিজাম উদ্দিন নামে এক প্রবাসীর ৬ তলা বাড়িতে তালাবদ্ধ করে রাখার অভিযোগ উঠেছে তার স্ত্রী উম্মে হাবিবা বিন্দুর বিরুদ্ধে। গত বুধবার (১১ জুন) সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল তাঁতখানা এলাকার প্রবাসী নিজাম উদ্দিনের বাড়িতে এ ঘটনাটি ঘটে।

এ ঘটনায় বন্দর থানার গকুলদাসেরবাগ এলাকার আ: বাতেনের মেয়ে ও প্রবাসী নিজাম উদ্দিনের ভাগ্নী মাহমুদা (৪০) বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ বাজার এলাকার বাসিন্ধা তার মামী উম্মে হাবিবা বিন্দু (২৬), মামীর বাবা বাবুল (৫০) ও মামীর মা সখি (৪৫) সহ আরো অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জনকে আসামী করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছে।

অভিযোগে মাহমুদা উল্লেখ করেন, গত ৯বছর পূর্বে আমার মামার সাথে উম্মে হাবিবা বিন্দুর বিবাহ হয়। আমার মামার পরিবারে ২টি পুত্র সন্তান আছে। আমার মামা একজন প্রবাসী। তিনি দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসী হওয়ার সুবাদে বিবাদীরা আমার মামার টাকা বিভিন্ন ভাবে অপচয় করিত। গত ৫বছর পূর্বে বিবাদী বাবুল আমার মামার কাছ থেকে জমি ক্রয় ও ব্যবসায়ীক কারণে হাওলাত বাবদ ৩৫ লাখ টাকা নিয়ে যায়।

গত ৩ বছর পূর্বে আমার মামা দেশে এসে তার স্ত্রী বিন্দুর কাছে উক্ত টাকা দাবি করলে তিনি ক্ষীপ্ত হয়ে আমার মামাকে অকথ্য ভাষায় গাল মন্দ করিতে থাকে। এসময় আমার মামা উক্ত বিষয়টি তার শ্বশুর বাবুলকে জানাইলে তারা উক্ত টাকা দিব-দিচ্ছি বলে টালবাহানা করতে থাকে।

এরই উপর ভিত্তি করে গত ২ মাস পূর্বে পুনরায় আমার মামা তার শ্বশুরের কাছে টাকা দাবি করলে তিনি উক্ত টাকা দিবে না মর্মে জানায়। এমনকি আমার মামাকে জানায় আমার মামা যদি সিদ্ধিরগঞ্জের তাঁতখানা এলাকার গোদনাইল মৌজাস্থিত ৬তলা বিশিষ্ট বাড়িটি তার স্ত্রীর নামে লিখিয়া না দেয় তাহলে তাকে বড় ধরণের ক্ষতি সাধন করবে।


অভিযোগে মাহমুদা আরো উল্লেখ করেন, গত বুধবার আমার মামার শ্বশুর ও শ্বাশুড়ী সহ আরো ১০/১২ জন সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে গোদনাইল তাঁতখানা এলাকার আমার মামার বাড়ীতে প্রবেশ করে আমার মামার অজ্ঞাতসারে ভাংচুর চালায়।

এসময় উক্ত বাড়ীতে আমার খালা সালেহা (৫০) অবস্থানকালে তারা তাকে বাড়ী থেকে বের করে দেয়। একপর্যায়ে তারা উক্ত বাড়ী তালা বদ্ধ করে চলে যায়। এসময় তারা আমার খালাকে জানায় আমার মামা যদি উক্ত বাড়ী তার স্ত্রীর নামে লিখিয়া না দেয় তাহলে তারা আমার মামাকে জানে মারিয়া ফেলবে বলে হুমকি দিয়ে চলে যায়। 

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযোগের তদন্তকারী সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) হাসান আলী জানান, দুই পক্ষই থানায় অভিযোগ করেছে। তবে বাড়িতে তালা দেয়ার বিষয়ে নিজামের স্ত্রী বিন্দু ও তার শ্বশুর বাবুলকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম। তারা অস্বীকার করেছে। যেহেতু বিষয়টি পারিবারিক তাই উভয় পক্ষকে নিয়ে বসে সমাধানের চেষ্টা করা হবে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সিদ্ধিরগঞ্জে প্রবাসী স্বামীর বাড়িতে স্ত্রীর তালা