১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ দেখেনি বর্তমান প্রজন্ম। কিন্তু আমাদের সত্তার পরিচয়ের অনন্য ৯ মাস নানাভাবে ধারণ করে তরুণেরা। আমাদের সংগ্রামের সেই গৌরবোজ্জ্বল দিনগুলো বুক ফুলিয়ে বয়ে বেড়ানো তরুণরা ক্যাম্পাসে গড়ে ওঠা ভাস্কর্যে নিজেদের সাহস আর দেশাত্মবোধের চেতনা খুঁজে পায়। যে চেতনায় ভর করে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার বেলায় তারা দেখায় বুকভরা সাহস আর অদম্য তেজ। তরুণদের সাহস জোগানো এমনই কয়েকটি ভাস্কর্য নিয়ে এই আয়োজন.
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘অপরাজেয় বাংলা’ ভাস্কর্যে মুক্তিযুদ্ধে ছাত্র সমাজসহ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের অংশগ্রহণের দৃশ্য নান্দনিকভাবে ফুটে উঠেছে। ভাস্কর্যটিকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের একটি প্রতীকী রূপও বলা চলে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের সামনে গর্বের সঙ্গে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো এই ভাস্কর্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরও প্রতীক হিসেবে গণ্য হয়ে উঠছে। বন্দুক কাঁধে দাঁড়িয়ে থাকা তিন নারী-পুরুষের ভাস্কর্যটি সর্বস্তরের মানুষের স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে। ১৯৭৩ সালে ডাকসুর উদ্যোগে এই ভাস্কর্য তৈরি শুরু হয় এবং এর কাজ শেষ হয় ১৯৭৯ সালে। ছয় ফুট বেদির ওপর নির্মিত এর উচ্চতা ১২ ফুট, প্রস্থ আট ফুট ও ব্যাস ছয় ফুট। ১৯৭৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর সকাল ৯টায় এ ভাস্কর্যের উদ্বোধন করা হয়। ভাস্কর্যের তিনটি প্রতীকের একটির ডান হাতে দৃঢ় প্রত্যয়ে রাইফেলের বেল্ট ধরা বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি। এর মডেল ছিলেন আর্ট কলেজের ছাত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা বদরুল আলম বেনু। থ্রি নট থ্রি রাইফেল হাতে সাবলীল ভঙ্গিতে দাঁড়ানো অপর প্রতীকের মডেল ছিলেন সৈয়দ হামিদ মকসুদ ফজলে। নারী প্রতীকের মডেল ছিলেন হাসিনা আহমেদ। ভাস্কর্যটির বেদিতে দাঁড়ানো তিন মুক্তিযোদ্ধার প্রতিচ্ছবি সব অন্যায় ও বৈষম্য দূর করে দেশে সাম্য প্রতিষ্ঠার প্রাণের গান গাইছে। এতে সব শ্রেণির যোদ্ধার প্রতিচ্ছবি তুলে ধরা হয়েছে। ভাস্কর সৈয়দ আবদুল্লাহ খালিদ এই ভাস্কর্যে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের স্মরণে নিবেদিত এবং শুধু তিনজন মুক্তিযোদ্ধাকে চিত্রায়িত করেননি, সামগ্রিক সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের বাস্তব প্রতিচ্ছবি ফুটিয়ে তুলেছেন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বিমান বাহিনী ও যুক্তরাষ্ট্রের এয়ারফোর্সের যৌথ অনুশীলন সমাপ্ত
বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ও যুক্তরাষ্ট্রের প্যাসিফিক এয়ার ফোর্সের অংশগ্রহণে ৭ দিনব্যাপী ‘অপারেশন প্যাসিফিক এঞ্জেল ২৫-৩' শীর্ষক যৌথ অনুশীলন মহড়া শেষ হয়েছে।
সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের নির্দেশনা ও বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ঘাঁটি জহুরুল হকে গত ১৪ সেপ্টেম্বর শুরু হয়। শেষ হয় গত ১৮ সেপ্টেম্বর।
আরো পড়ুন:
ক্রেডিট কার্ডে বাংলাদেশিদের খরচ বেড়েছে যুক্তরাজ্যে
ট্রাম্পকে ইউক্রেনের পাশে থাকার আহ্বান রাজা চার্লসের
সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সহকারী বিমান বাহিনী প্রধান (পরিচালন) এয়ার ভাইস জাভেদ তানভীর খান, ওএসপি, বিএসপি, এনডিসি, এএফডব্লিউসি, এসিএসসি, পিএসসি।
দুই দেশের অংশগ্রহণকারীদের সাথে ফটোসেশনে অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্র দুতাবাসের প্রতিনিধি, যুক্তরাষ্ট্র প্যাসিফিক এয়ার ফোর্সের জ্যেষ্ঠ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা, মহড়ায় অংশগ্রহণকারী বিমান বাহিনীর কর্মকর্তা এবং তিন বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্যাসিফিক এয়ার ফোর্স বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রতি বছরই নানাবিধ প্রশিক্ষণমূলক অনুশীলন পরিচালনা করে আসছে। বিভিন্ন প্রতিকূল অবস্থা ও আপদকালীন সংকট নিরসনে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর হেলিকপটার ও পরিবহন বিমানসমূহ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ‘অপারেশন প্যাসিফিক এঞ্জেল ২৫-৩' এ মূলত আপদকালীন এবং প্রতিকূল অবস্থায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর হেলিকপটার ও পরিবহন বিমানগুলোর সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন অনুশীলন পরিচালনা করা হয়।
‘অপারেশন প্যাসিফিক এঞ্জেল ২৫-৩' এ বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি সি-১৩০জে পরিবহন বিমান, একটি এম আই-১৭ হেলিকপ্টার এবং প্যাসিফিক এয়ার ফোর্সের দুইটি সি-১৩০জে পরিবহন বিমান, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ১৫০ জন সদস্য এবং ইউএস প্যাসিফিক এয়ারফোর্স এর ৯২ জন সদস্য অংশগ্রহণ করে। এছাড়াও, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সদস্যরা মহড়ায় অংশগ্রহণ করেন।
এই যৌথ অনুশীলনের মাধ্যমে দুই দেশের বিমান বাহিনী শুধু পেশাগত দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ই করবে না, বরং আন্তঃকার্যক্ষমতা বৃদ্ধি, কৌশলগত সহযোগিতা জোরদার, এবং আস্থা ও বিশ্বাসের বন্ধনকে আরো সুদৃঢ় করবে। পাশাপাশি বিমান বাহিনীর চিকিৎসা, প্রকৌশল ও লজিস্টিক বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে স্থানীয় জনগণকে সেবা প্রদান দুই দেশের পারস্পরিক সম্পর্ককে আরো মানবিক ও স্থিতিশীল ভিত্তি প্রদান করবে।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি