মৌলভীবাজারের জুড়ীতে দরজা ভেঙে বাড়িতে ঢুকে কাতারপ্রবাসীসহ একই পরিবারের তিন সদস্যকে কুপিয়ে জখম করেছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় নগদ অর্থ, স্বর্ণালংকারসহ প্রায় ১৬ লাখ টাকার মালামাল লুটের অভিযোগ উঠেছে।

গতকাল মঙ্গলবার গভীর রাতে উপজেলার গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নের হালগরা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত ব্যক্তিদের সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তাঁরা হলেন আবদুল মোতালিব (৩৬), তাঁর স্ত্রী রোকসানা বেগম (৩০) ও ভাই আবদুল আজিজ (২৬)। তাঁদের মধ্যে মোতালিব কাতারপ্রবাসী। সম্প্রতি তিনি দেশে এসেছেন।

পরিবারের সদস্যরা জানান, গতকাল দিবাগত রাত তিনটার দিকে ছয় সদস্যের একদল দুর্বৃত্ত তাঁদের বসতঘরের পেছনের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢোকে। এর মধ্যে একজনের মুখোশ পরা ছিল। তাদের হাতে ছিল বিভিন্ন ধরনের দেশি অস্ত্র। সাহ্‌রির জন্য ওই সময় পরিবারের কয়েকজন সদস্য জেগে ছিলেন। একপর্যায়ে দুর্বৃত্তরা ‘মামলার সাধ মিটাইমু’ বলে ধারালো অস্ত্র দিয়ে প্রথমে মোতালিবকে কোপ দেয়। স্বামীকে রক্ষা করতে গেলে তারা রোকসানাকেও কুপিয়ে জখম করে। এ সময় ‘আর মামলা করলে জানে শেষ করি দিমু’ বলেও তারা হুমকি দেয়। এরপর পাশের কক্ষে গিয়ে আবদুল আজিজকেও কুপিয়ে আহত করে তারা। পরে তারা বিভিন্ন কক্ষের আলমারি ও ড্রয়ার ভেঙে প্রায় এক লাখ টাকা, ১০ ভরির মতো স্বর্ণালংকার, ৫টি দামি মুঠোফোন ও ঈদ উপলক্ষে কেনা নতুন জামাকাপড় লুট করে নিয়ে যায়। এ সময় পরিবারের সদস্যদের চিৎকার ও কান্নাকাটি শুনে আশপাশের লোকজন ছুটে যান। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ।

আজ সকাল সাতটার দিকে ঘটনাস্থলে মোতালিবের মা হাসনা বেগম জানান, তাঁদের বাড়ির সামনের রাস্তা নিয়ে প্রতিবেশী যুক্তরাজ্যপ্রবাসী রফিক মিয়ার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। এ নিয়ে মামলা-মোকাদ্দমা হয়েছে। সম্প্রতি সরকারি জরিপকারকের (সার্ভেয়ার) মাধ্যমে মাপজোখ করে তাঁরা রাস্তার মালিকানা বুঝে পান। দুর্বৃত্তরা ঘটনার সময় মামলার কথা উল্লেখ করায় তাঁরা ধারণা করছেন, এ ঘটনার পেছনে প্রতিপক্ষের যোগসাজশ থাকতে পারে।

আজ সকালে অভিযুক্ত রফিক মিয়ার বাড়িতে গিয়ে সেটি ফাঁকা দেখা যায়। তিনিসহ পরিবারের অন্য সদস্যরাও যুক্তরাজ্যে থাকেন। তবে আছকির মিয়া নামের এক ব্যক্তি বাড়িটি দেখাশোনা করেন। তাঁকে খোঁজ করে বাড়িতে পাওয়া যায়নি।

ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানান জুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোরশেদুল আলম ভূঁইয়া। তিনি বলেন, চিকিৎসা নিয়ে ফিরে আহত ব্যক্তিরা লিখিত অভিযোগ দেবেন বলে জানিয়েছেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর ব র র সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলায় ৩ পুলিশ নিহত

যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যে বন্দুক হামলায় তিন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন আরো দুই পুলিশ। 

পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় দুপুর ২টার কিছু পর এক পারিবারিক বিরোধের তদন্তে গিয়ে হামলার মুখে পড়ে পুলিশ। খবর বিবিসির। 

আরো পড়ুন:

শেরপুরে পুলিশের উপর হামলা: থানায় মামলা, গ্রেপ্তার ৪

ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদ ও থানায় হামলা, ভাঙচুর-আগুন

পেনসিলভানিয়া স্টেট পুলিশের কমিশনার কর্নেল ক্রিস্টোফার প্যারিস জানান,  অভিযুক্ত বন্দুকধারী পুলিশের গুলিতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছে।

গুলির ঘটনার পর ইয়র্ক কাউন্টির নর্থ কোডোরাস টাউনশিপের স্প্রিং গ্রোভ এলাকার একটি স্কুল জেলা সাময়িকভাবে ‘শেল্টার ইন প্লেস’ ঘোষণা করে। তবে পরে জানানো হয়, স্কুল কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জনসাধারণের জন্য বর্তমানে কোনো সক্রিয় হুমকি নেই। এ ঘটনা ঘটে ফিলাডেলফিয়া থেকে প্রায় ১০০ মাইল (১৬০ কিমি) পূর্বে অবস্থিত ইয়র্ক কাউন্টির এক গ্রামীণ এলাকায়। 

তারা বলছে, আগের দিন শুরু হওয়া একটি তদন্তের অংশ হিসেবে কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছিলেন। তবে তদন্ত চলমান থাকায় বিস্তারিত কিছু প্রকাশ করা হয়নি।

পেনসিলভানিয়ার গভর্নর জোশ শাপিরো বিকেলে ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি বলেন, “আমরা তিনজন মহামূল্যবান প্রাণ হারালাম, যারা এই দেশকে সেবা দিয়েছেন। এই ধরনের সহিংসতা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। সমাজ হিসেবে আমাদের আরো ভালো করতে হবে।”

নিহত তিন কর্মকর্তার সম্মানে গভর্নর শাপিরো রাজ্যের সব সরকারি ভবন ও স্থাপনায় পতাকা অর্ধনমিত রাখার নির্দেশ দেন।

ঢাকা/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ