শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে এক শিক্ষার্থীকে স্থায়ী বহিষ্কার, তিনজনের বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি
Published: 26th, March 2025 GMT
শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে রাজশাহী বেসরকারি বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দিয়েছে প্রশাসন। এর মধ্যে একজনকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও সিন্ডিকেটের সভাপতি খাদেমুল ইসলাম মোল্যা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
শাস্তি পাওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী শিবলী নোমানী ইসলাম, আইন ও মানবাধিকার বিভাগের এম ফারারুজ্জামান বাঁধন, ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের নূর-ই-আলম সিদ্দিকী এবং একই বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী রিজওয়ান তানভীর মীম। এ ছাড়া ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের সোয়াইব হোসেন ও মুরশিদা মেহেরিনকে কঠোরভাবে সতর্ক করা হয়েছে। শিবলী নোমানীকে আজীবন, এম ফারারুজ্জামানকে দুই সেমিস্টার, নূর-ই-আলম সিদ্দিকীকে এক সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ছাড়া রিজওয়ান তানভীর মীমের বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ শেষ হওয়ায় তাঁর সার্টিফিকেট ছয় মাসের জন্য অকার্যকর রাখা হয়েছে। স্থায়ীভাবে বহিষ্কার শিক্ষার্থী শিবলী নোমানী রাজশাহী মহানগর ছাত্রদলের রাজনীতিতে সক্রিয় বলে জানা গেছে।
সিন্ডিকেট সভা সূত্রে জানা গেছে, গত বছর ২৮ নভেম্বর ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের একটি অনুষ্ঠানে এক শিক্ষার্থীকে হুমকি এবং এক চড়থাপ্পড় দেওয়ার অভিযোগ ওঠে শিবলী নোমানীর বিরুদ্ধে। ১ ডিসেম্বর অনুসারীদের নিয়ে দেশি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ওই শিক্ষার্থীকে আবার মারধর করেন শিবলী। এতে ওই শিক্ষার্থীর চোয়ালের হাড় ভেঙে যায় এবং মাথা ও গায়ে বিভিন্ন জায়গায় রক্তাক্ত হয়। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গেলেও তাঁকে সেখানে ভর্তি নিতে বাধা দেওয়া হয় এবং পরবর্তী সময়ে ওই শিক্ষার্থীর বাবাকে জিম্মি করে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। ওই শিক্ষার্থী পরবর্তী সময়ে নগরের চন্দ্রিমা থানায় গেলে তাঁর মামলা নিতেও নানা ধরনের চাপ সৃষ্টি করা হয়। শেষ পর্যন্ত ওই শিক্ষার্থীর আত্মীয়স্বজন এবং স্থানীয় ব্যক্তিদের অনুরোধে চন্দ্রিমা থানায় মামলা হয়। এ ঘটনায় সঙ্গে শাস্তি পাওয়া অন্য শিক্ষার্থীরাও জড়িত ছিলেন।
সিন্ডিকেট সূত্রে আরও জানা গেছে, এ ছাড়া মো.                
      
				
এ প্রসঙ্গে শিবলী নোমানী জানান, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে সোচ্চার ছিলেন, এটা প্রশাসন ভালোভাবে নেয়নি। এ কারণে তাঁকে এমন শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
উপাচার্য খাদেমুল ইসলাম মোল্যা বলেন, এসব ঘটনায় অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি হয়। পরে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এসব শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর নগরের চন্দ্রিমা থানায় একটি অভিযোগও করেছেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ওই শ ক ষ র থ ইসল ম ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে
বাংলাদেশে বৈদেশিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ (এফডিআই) গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী এক বছরে ১৯ দশমিক ১৩ শতাংশ বেড়েছে। এর মধ্যে দিয়ে দেশে বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশের প্রতি আন্তর্জাতিক আস্থার প্রতিফলন দেখা গেছে।
বিশ্বব্যাংকের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, সম্প্রতি যেসব দেশে গণঅভ্যুত্থান ঘটেছে, সেসব দেশে পরবর্তী এক বছরে এফডিআই উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। এর মধ্যে শ্রীলঙ্কায় ২০২২ সালের পর এফডিআই কমেছে ১৯.৪৯ শতাংশ, চিলিতে ২০১৯ সালের পর কমেছে ১৫.৬৮ শতাংশ, সুদানে ২০২১ সালের পর ২৭.৬০ শতাংশ, ইউক্রেনে ২০১৪ সালের পর ৮১.২১ শতাংশ, মিশরে ২০১১ সালের পর ১০৭.৫৫ শতাংশ এবং ইন্দোনেশিয়ায় ১৯৯৮ সালের পর ১৫১.৪৯ শতাংশ কমেছে। এই ধারাবাহিক হ্রাসের মধ্যে বাংলাদেশে এফডিআইর ১৯.১৩ শতাংশ বৃদ্ধির চিত্র বিশেষভাবে নজরকাড়া।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেছেন, “বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় গুণ হলো—শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও অর্থনীতিকে পুনরায় চালু করার অদ্ভুত ক্ষমতা। এই পরিসংখ্যান তার দারুন একটা প্রতিফলন। সাধারণত, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বিদেশি বিনিয়োগ কমে যায়, কিন্তু আমরা উল্টা দেখছি। সঠিক নীতি নির্ধারণ, বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআরসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার আন্তরিকতা এবং প্রাইভেট সেক্টরের অদম্য স্পৃহা কারণে এটি সম্ভব হয়েছে। আমরা সব সময় বিনিয়োগকারীদের সাহায্য করার চেষ্টা করেছি। সব সমস্যার সমাধান হয়নি, তবে সদিচ্ছার কোনো ত্রুটি ছিল না। শিগগিই সারা বছরের একটি আমলনামা (রিপোর্ট কার্ড) প্রকাশ করা হবে।”
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ৪৮৮ দশমিক ৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, ২০২২ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৬৭০ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলারে। ২০২৩ সালে বিনিয়োগের পরিমাণ হয় ৯২৪ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার, তবে ২০২৪ সালে কিছুটা কমে দাঁড়ায় ৬৭৬ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলারে। ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে বিদেশি বিনিয়োগ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯২ দশমিক ৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে।
অর্থনীতিবিদদের মতে, বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এই ধারা বজায় থাকা অত্যন্ত ইতিবাচক। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, দীর্ঘমেয়াদি নীতি সহায়তা ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ ভবিষ্যতে আরো বড় পরিসরে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে পারবে বলে মনে করছেন তারা।
ঢাকা/নাজমুল/রফিক