জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে গণপরিষদ নির্বাচনকে মুখোমুখি দাঁড় করার যে চক্রান্ত চলছে, এটা বাংলাদেশকে নতুনভাবে পিছিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন।

বুধবার (২৬ মার্চ) সন্ধ্যায় রাজধানীর ইস্কাটনে জাতীয় নাগরিক কমিটি কর্তৃক আয়োজিত গণ ইফতার আয়োজনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। 

আখতার হোসেন বলেন, জাতীয় নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে যারা নির্বাচিত হবেন তাদের সংসদ হিসাবে ভূমিকা পালন করতে পারে, সে প্রস্তাবনা রাখা হয়েছে। আর এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মানুষের দীর্ঘ মেয়াদি মুক্তির সংগ্রামের সুফল রয়েছে।

তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমরা আহ্বান জানাব; বিচার, সংস্কার এবং গণপরিষদের যে বাস্তবতা সেটাকে আমলে নিয়ে সামনের বাংলাদেশের যে রোডম্যাপ, সেটা ঘোষণা করতে হবে।

জাতীয় নাগরিক কমিটির এই সদস্য সচিব বলেন, বাংলাদেশের মানুষ দীর্ঘ সময় ধরে যে রাষ্ট্র কাঠামো দেখতে চেয়েছে, তাকে পেতে হলে আমাদের নতুন সংবিধান পেতে হবে। আর নতুন সংবিধানের জন্য অবশ্যই গণপরিষদের নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই।

আক্তার হোসেন আরো বলেন, একাত্তরের স্বাধীনতা এবং ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানকে যে পরস্পরবিরোধী করার যে নীল চক্রান্ত আমরা দেখতে পাচ্ছি, সেটার তীব্র বিরোধিতা করি। বাংলাদেশের মানুষের স্বাধীনতা সংগ্রামের যত অধ্যায় রয়েছে তার মধ্যে একাত্তর একটি অন্যতম উজ্জ্বল অধ্যায় বলে মনে করি। আর এই উজ্জ্বল অধ্যায় যখন অন্ধকারে নিমজ্জিত করা হয়েছিল তখন গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ২৪-এর সৈনিকেরা তাদের জীবন দিয়ে মানুষকে আরেকবার মুক্ত করেছিল। ২৪-এর গণঅভ্যুত্থান না হলে আমরা একাত্তরের স্বাধীনতাকে চিরতরে হারিয়ে ফেলতাম।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ একাত্তরের শহীদ এবং ২৪-এর শহীদদের স্মরণ রাখবার পক্ষপাতী। আমরা যে সময় গণ আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে গেছি, সে গণ আন্দোলনকে সফল করতে হলে অবশ্যই সম্প্রতি বাংলাদেশের যে গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে, এর বিচার দৃশ্যমান করতে হবে।

ঢাকা/রায়হান/এনএইচ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ২৪ এর

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারীদের সংবর্ধনা দিল জাবি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শহীদ পরিবারদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। এ সময় জুলাই হত্যার বিচার ও শহীদ পরিবারের পুনর্বাসনের আকুতি জানানো হয়।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টায় জহির রায়হান মিলনায়তনে এ সংবর্ধনার আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) ও ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহফুজুর রহমান। 

আরো পড়ুন:

জুলাই শহীদদের স্মরণে জাবি ছাত্রদলের বৃক্ষরোপণ

জাবি ছাত্রদলের ১৫ নেতাকে অব্যাহতি

এতে আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ও ১০ শহীদ পরিবারের সদস্যরা। 

এসব শহীদরা হলেন, আলিফ আহম্মদ সিয়াম, শ্রাবণ গাজী, শাইখ আস-হা-বুল ইয়ামিন, নাফিসা হোসেন মারওয়া, সাফওয়ান আখতার সদ্য, মো. কুরমান শেখ, ছায়াদ মাহমুদ খান, নিশান খান, আস-সাবুর ও সুজন মিয়া।

অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এরপর শহীদদের স্বরণে একটি ডকুমেন্টারি ভিডিও দেখানো হয়। পরে শহীদদের স্বীকৃতি স্বরূপ সংবর্ধনা, সনদ ও স্মারক প্রদান করা হয়।

শহীদ আলিফ আহমেদ সিয়ামের বাবা মো. বুলবুল কবির বলেন, “আমরা আমাদের সন্তানদের হারিয়েছি ১ বছর হতে চললো। কিন্তু হত্যাকারীদের বিচার এখনো নিশ্চিত হয়নি। আপনারা শহীদদের রক্তের উপর দাঁড়িয়ে এ চেয়ারে বসেছেন। ফ্যাসিস্টদের বিচার নিশ্চিত করুন।” 

শহীদ শ্রাবণ গাজীর পিতা মো. মান্নান গাজী বলেন, “আমাদের সন্তানরা তো আর ফিরে আসবে না। কিন্তু হাসাপাতালে যারা আহত আছেন, পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন, তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করুন। তাদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করুন।”

শহীদ নাফিসা হোসেনের মামা মো. হজরত আলী নাফিসার শহীদ হওয়ার বর্ণনা করতে গিয়ে অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন। এ সময় তিনি জুলাই শহীদদের পরিবারের পুর্নগঠন এবং শহীদদের নামে হল, সড়ক বিভিন্ন স্থাপনার নামকরণের প্রস্তাব করেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহফুজুর রহমান বলেন, “জুলাই আন্দোলনের স্বরণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগে মাসব্যাপী আয়োজনের অংশ হিসেবে এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। শহীদ পরিবারগুলোর পক্ষ থেকে যেসব দাবি করা হয়েছে, আমি প্রশাসনের একজন হয়ে তা আগামী সিন্ডিকেট সভায় তুলব।”

তিনি বলেন, “আমি চাই আমাদের এখানে যেহেতু কিন্ডারগার্টেন, স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এখানে শহীদদের পরিবারের সদস্যদের পড়াশোনার সুযোগ প্রদান করা হোক। এ বিষয়ে আমরা সিন্ডিকেটে আলোচনা করব। একইসঙ্গে জুলাই শহীদদের পরিবারের সদস্যদের বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মসংস্থানের উদ্যোগ নেওয়া হবে।”

এর আগে, সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার থেকে অদম্য-২৪ স্মৃতিস্তম্ভ পর্যন্ত মুখে লাল কাপড় বেঁধে মৌন মিছিল করেন শিক্ষকরা।

গত ১৪ জুলাই থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে স্বরণ ও ধারণ করতে মাসব্যাপী নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।

ঢাকা/আহসান/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘বিচার প্রক্রিয়া ও সংস্কারের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হবে’
  • তিতুমীর কলেজে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী
  • ৯ ঘণ্টা ধরে শাহবাগ অবরোধ, জনভোগান্তি চরমে
  • হাসিনাকে ১০ বার ফাঁসিতে ঝোলালেও তার অপরাধ কমবে না: নাহিদ 
  • জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা
  • নরসিংদীতে আজ এনসিপির পদযাত্রা 
  • এনসিপির অনুরোধে সমাবেশের স্থান পরিবর্তন করল ছাত্রদল
  • পাবিপ্রবিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে প্রজেক্ট শো
  • জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারীদের সংবর্ধনা দিল জাবি
  • নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে পথে নেমেছি: নাহিদ ইসলাম