সংসদ ও গণপরিষদ নির্বাচনকে মুখোমুখি করে নতুন চক্রান্ত চলছে: আখতার
Published: 26th, March 2025 GMT
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে গণপরিষদ নির্বাচনকে মুখোমুখি দাঁড় করার যে চক্রান্ত চলছে, এটা বাংলাদেশকে নতুনভাবে পিছিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন।
বুধবার (২৬ মার্চ) সন্ধ্যায় রাজধানীর ইস্কাটনে জাতীয় নাগরিক কমিটি কর্তৃক আয়োজিত গণ ইফতার আয়োজনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আখতার হোসেন বলেন, জাতীয় নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে যারা নির্বাচিত হবেন তাদের সংসদ হিসাবে ভূমিকা পালন করতে পারে, সে প্রস্তাবনা রাখা হয়েছে। আর এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মানুষের দীর্ঘ মেয়াদি মুক্তির সংগ্রামের সুফল রয়েছে।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমরা আহ্বান জানাব; বিচার, সংস্কার এবং গণপরিষদের যে বাস্তবতা সেটাকে আমলে নিয়ে সামনের বাংলাদেশের যে রোডম্যাপ, সেটা ঘোষণা করতে হবে।
জাতীয় নাগরিক কমিটির এই সদস্য সচিব বলেন, বাংলাদেশের মানুষ দীর্ঘ সময় ধরে যে রাষ্ট্র কাঠামো দেখতে চেয়েছে, তাকে পেতে হলে আমাদের নতুন সংবিধান পেতে হবে। আর নতুন সংবিধানের জন্য অবশ্যই গণপরিষদের নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই।
আক্তার হোসেন আরো বলেন, একাত্তরের স্বাধীনতা এবং ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানকে যে পরস্পরবিরোধী করার যে নীল চক্রান্ত আমরা দেখতে পাচ্ছি, সেটার তীব্র বিরোধিতা করি। বাংলাদেশের মানুষের স্বাধীনতা সংগ্রামের যত অধ্যায় রয়েছে তার মধ্যে একাত্তর একটি অন্যতম উজ্জ্বল অধ্যায় বলে মনে করি। আর এই উজ্জ্বল অধ্যায় যখন অন্ধকারে নিমজ্জিত করা হয়েছিল তখন গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ২৪-এর সৈনিকেরা তাদের জীবন দিয়ে মানুষকে আরেকবার মুক্ত করেছিল। ২৪-এর গণঅভ্যুত্থান না হলে আমরা একাত্তরের স্বাধীনতাকে চিরতরে হারিয়ে ফেলতাম।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ একাত্তরের শহীদ এবং ২৪-এর শহীদদের স্মরণ রাখবার পক্ষপাতী। আমরা যে সময় গণ আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে গেছি, সে গণ আন্দোলনকে সফল করতে হলে অবশ্যই সম্প্রতি বাংলাদেশের যে গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে, এর বিচার দৃশ্যমান করতে হবে।
ঢাকা/রায়হান/এনএইচ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে
বাংলাদেশে বৈদেশিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ (এফডিআই) গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী এক বছরে ১৯ দশমিক ১৩ শতাংশ বেড়েছে। এর মধ্যে দিয়ে দেশে বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশের প্রতি আন্তর্জাতিক আস্থার প্রতিফলন দেখা গেছে।
বিশ্বব্যাংকের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, সম্প্রতি যেসব দেশে গণঅভ্যুত্থান ঘটেছে, সেসব দেশে পরবর্তী এক বছরে এফডিআই উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। এর মধ্যে শ্রীলঙ্কায় ২০২২ সালের পর এফডিআই কমেছে ১৯.৪৯ শতাংশ, চিলিতে ২০১৯ সালের পর কমেছে ১৫.৬৮ শতাংশ, সুদানে ২০২১ সালের পর ২৭.৬০ শতাংশ, ইউক্রেনে ২০১৪ সালের পর ৮১.২১ শতাংশ, মিশরে ২০১১ সালের পর ১০৭.৫৫ শতাংশ এবং ইন্দোনেশিয়ায় ১৯৯৮ সালের পর ১৫১.৪৯ শতাংশ কমেছে। এই ধারাবাহিক হ্রাসের মধ্যে বাংলাদেশে এফডিআইর ১৯.১৩ শতাংশ বৃদ্ধির চিত্র বিশেষভাবে নজরকাড়া।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেছেন, “বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় গুণ হলো—শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও অর্থনীতিকে পুনরায় চালু করার অদ্ভুত ক্ষমতা। এই পরিসংখ্যান তার দারুন একটা প্রতিফলন। সাধারণত, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বিদেশি বিনিয়োগ কমে যায়, কিন্তু আমরা উল্টা দেখছি। সঠিক নীতি নির্ধারণ, বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআরসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার আন্তরিকতা এবং প্রাইভেট সেক্টরের অদম্য স্পৃহা কারণে এটি সম্ভব হয়েছে। আমরা সব সময় বিনিয়োগকারীদের সাহায্য করার চেষ্টা করেছি। সব সমস্যার সমাধান হয়নি, তবে সদিচ্ছার কোনো ত্রুটি ছিল না। শিগগিই সারা বছরের একটি আমলনামা (রিপোর্ট কার্ড) প্রকাশ করা হবে।”
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ৪৮৮ দশমিক ৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, ২০২২ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৬৭০ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলারে। ২০২৩ সালে বিনিয়োগের পরিমাণ হয় ৯২৪ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার, তবে ২০২৪ সালে কিছুটা কমে দাঁড়ায় ৬৭৬ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলারে। ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে বিদেশি বিনিয়োগ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯২ দশমিক ৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে।
অর্থনীতিবিদদের মতে, বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এই ধারা বজায় থাকা অত্যন্ত ইতিবাচক। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, দীর্ঘমেয়াদি নীতি সহায়তা ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ ভবিষ্যতে আরো বড় পরিসরে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে পারবে বলে মনে করছেন তারা।
ঢাকা/নাজমুল/রফিক