সন্জীদা খাতুন চলে গেলেন, সেটি কোনো একক দেশের খবর না
Published: 26th, March 2025 GMT
অন্য দেশ, অন্যের দেশ, কিছু বলা আমার ঠিক না হয়তো! কিন্তু আজ (লিখতে লিখতে এত সময় চলে গেল যে আজ এখন গতকাল হয়ে গেছে) ঢাকায় বকেয়াবেতন চাইতে গিয়ে পুলিশের লাঠি খাওয়ার যে দৃশ্য দেখি, তা কোনো একক দেশের কথা বলে না। এই সময়ের কথা বলে, বর্ডার-অতিক্রান্ত এক ভূগোলের কথা বলে, একটা সিস্টেমের কথা বলে। তারপর দেখি খবর, সন্জীদা খাতুন চলে গেলেন। সেও আসলে কোনো একক দেশের খবর না। এই খবরকে আমি আমার মনে মনে জানা-চেনা-কাঙ্খিত বঙ্গদেশের খবর বলে বুঝি। আমার কান তখন এই গানই শুনতে চায়, যে গান আমিও গাই, এই ভাবে পারি না যদিও।
আমি সন্জীদা খাতুনকে আমাদের এখানে, ছোটোদের পাঠশালা শামিলে একাধিকবার দেখেছি, তাঁর রবীন্দ্রসঙ্গীতের প্রশিক্ষণে যোগ দিয়েছি, অযথা প্রশ্ন করেছি, খানিক ঔদ্ধত্যের সুরে এবং তিনি ধৈর্য্য ধরে উত্তর দিয়েছেন। আমি একমত হইনি। সেই ভিন্নমতে কথা থেমে যায়নি। তার কিছুদিন পর পিঠে ব্যাগ নিয়ে এধার ওধার ফিল্ড রেকর্ডিংয়ে গেছি যখন বাংলাদেশে, ঢাকায় আমাকে এবং আমার সহকর্মীকে হোটেলে ঘর দিতে চায়নি নানাবিধ কাগজপত্র এবং declaration ছাড়া, সন্জীদা আপা তখন সস্নেহে আমাদের থাকার ব্যবস্থা করে দেন ছায়ানটের একটা গেস্ট রুমে। (আমাদের আগে দেবেশ রায় ছিলেন সেই ঘরে, যে দেবেশ রায়ের লেখার কেন্দ্রজুড়ে প্রান্ত মানুষের দখল; বাংলার এক অন্য ইতিহাস বলেন তিনি। এই কথা বলে রাখাটাও জরুরি মনে করছি, যেহেতু মানুষ নানান ভাবে কিছু বলা, কিছু বেশি করে বলা আর অনেক কিছু না-বলা দিয়ে ইতিহাস রচনা করে থাকে। তাই কিছু কথার রেকর্ড রেখে যাওয়াটাও জরুরি মনে হয়)। যাই হোক, আমাকে ছায়ানটে আমাদের কাজ নিয়ে বলতে বলেছিলেন সন্জীদা খাতুন।
আমি ১৫-১৬ বছর বা তারও আগের কথা বলছি, ডিটেল কিছু ভুল হয়ে যেতে পারে। এইটুকু অবশ্যই মনে আছে যে, সেদিন নানান কথার ভিতরে আমি রামপ্রসাদী গান, 'আসার আশা ভবে আসা, আসা মাত্র হলো' থেকে গৌতম চট্টোপাধ্যায়ের 'আশায় আশায় বসে আছি, ওরে আমার মন/কখন তোমার আসবে টেলিফোন'- এর জটিল ও সহজ যাত্রাপথের কথা বলেছিলাম, সঙ্গে গান বাজিয়ে শুনিয়েছিলাম। আমার ঢাকার বন্ধুরা অবাক হয়ে বলেছিলেন, 'তুমি ছায়ানটে মহীন বাজায়ে দিলা?! ওরা তো মৌলবাদী, আর এক রকমের মৌলবাদী।' মজা করেই বলেছিলেন জানি, কিন্তু এই বলার ভিতরে একটা ধরে নেওয়াও ছিল। মৌলবাদী? কী জানি? আমি তো তেমন বুঝিনি। I had seen glimpses of a rare open mind--যে মন বহু মনকে ধারণ করতে পারে। এই গেল একটা দিক। আবার, নালন্দায় ছোট ছোট বাচ্চারা যেসব কবিতা বলতো সকালবেলায়, দেশ নিয়ে, স্বাধীনতা নিয়ে, যুদ্ধ নিয়ে, একাত্তরের শত্রুদের নিয়ে- ঘুম ভেঙে তা শুনে আমি ভাবতাম, এ কেমন indoctrination? আবার এও ভাবতাম, আমি কী জানি যুদ্ধের কথা, যুদ্ধ থেকে উঠে আসা দেশের কথা, দেশের মানুষের কথা? অনেক পরে শহীদুল জহিরের জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতায় মোমেনার মায়ের সেই 'থুক দিই থুক দিই' বদদোয়া পড়ে আমার এই চিন্তাই দৃঢ়তা পেয়েছে যে, আমি আসলে সবটা বুঝতে পারবো না। কারণ আমি আসলেই অন্যের কথা বলছি। আমি বাইরের লোক। সব কিছু political correctness দিয়ে বিচার করা যায় না। Political reality and political correctness are not always compatible.
যে ব্যক্তিমানুষ এবং সংগঠন ইতিহাসের বহু পর্ব পার করে এসেছে, তার গল্প কোনোভাবেই সহজ সরল হতে পারে না। সে নিরন্তর turmoil-এর ভিতরে থাকে। বিশেষ করে যে মূক থেকে মুখরতার দিকে যাত্রা করেছে, যার ইতিহাস পরাধীনতা, ভাষাহীনতা (silenced/banned period) থেকে গোপন যাপন (underground, subversive life) পার করে স্বাধীন দেশের অন্যতম প্রতিষ্ঠানিক ভাষায় (language of power) রূপান্তরিত হয়েছে, যে জীবন দিয়ে এইসব extreme pointকে ছুঁয়ে এসেছে, সে জানে তার সংকট ঠিক কোথায়। আমি 'তার সংকট'-এ 'তার' শব্দের ওপর জোর দিচ্ছি। রাজনৈতিক বাস্তবতায় এক একজনের সংকট এক রকমের হয়। যেখানে প্রতিষ্ঠান ব্যাপারটাই নড়বড়ে, state যেখানে fragile, সেখানে প্রতিষ্ঠা সব সময়ই সাময়িক। আমার মনে হয়, যে একবার ভাষা হারিয়েছিল, সে এও জানে যে, কোনো সময় সে আবার সাইলেন্সড্ হতে পারে। তখন নিয়মের কড়াকড়ি তার জন্য এক অস্তিত্বের লড়াই হয়ে যায় হয়তো । তখন সে হয়তো কিছুটা অনড়, rigid হয়ে যায়। Discipline, indoctrination become important.
শুনেছি ছায়ানটের হিজাব নিয়ে নিজস্ব পলিসি ছিল/আছে। এর সত্য মিথ্যা আমি জানি না। কিছু কিছু ভিডিওতে আমি দেখেছি মেয়েরা হিজাব পরে গাইছে। তবে ছায়ানটের বেশির ভাগ মেয়েই মাথা ঢাকে না। এখন, এটা কোনো নিয়মের জন্য নাকি এটা তাদের choice, আমি জানি না। অনেক আগে ঢাকার এক বন্ধুর কাছে শুনেছিলাম, তার বড় ভাই আর ভাবী গান শিখতে যেতেন ছায়ানটে, কাজ থেকে বাড়ি ফিরে শাড়ি পরে পাজামা পরে যেতে হতো, কারণ তেমনই নিয়ম ছিল (আজও আছে কি না জানি না, হয়তো নেই)। কেন এই কড়াকড়ি? শিখবে তো গানই! আমি হয়তো বুঝতে পারি না। Maybe I can afford not to understand. Not everyone has that choice.
যেমন ঊর্মিদিরা [ঊমি রহমান] বলতেন, ওঁরা একাত্তর দেখে এসেছেন তাই সালোয়ার কামিজের ব্যাপারে ওঁদের একটা resistance কাজ করে। এখন, একথা আমি তো ঠিক বুঝতে পারবো না। আমি তো কত সময়ই সালোয়ার পরি, আমার বন্ধুরা পরে। ঊর্মিদির resistance আমি কতটা অনুভব করি? আসলে, সংকটের ভিতর দিয়ে না গিয়ে বাইরে থেকে prescription দিয়ে দেওয়াটা সহজ।বছর খানেক আগে, আমাদের শেষ কথোপকথনে ঊর্মিদি বলেছিলেন, ঢাকায় গিয়ে দেখি, শাড়ি পরা মানুষ কত কম রাস্তায়। আক্ষেপের সুর ছিল ওঁর গলায়। একই মানুষ Nayanika Mookherjee'র সাম্প্রতিক গবেষণা নিয়ে আলোচনা সভায় চুপ করে ছিলেন এবং শেষে বলেছিলেন, একাত্তর নিয়ে আমি কিছু বলতে পারি না। কষ্ট হয়। এই যে জুলাই-এর পর মানুষ বলছে যে এমনটা যে দেখেছে সে কী করে ভুলে যাবে? কী করে ক্ষমা করবে? বিষয়গুলো ঠিক একই রকম আসলে। হয়তো সে জন্যই inclusivity'র prescriptionটা বাইরে থেকে দেওয়া যত সহজ, মানুষ ততটা সহজে সব কিছু মেনে নিতে পারে না। তারা আগের সময়ে ফিরতে চায় না, তাই নিয়ম করে আর নিয়মভঙ্গকারীর প্রতি কঠোর হয়।
এত কিছু ভাবা হয়ে ওঠে না আমাদের। তার চেয়ে ধরে নেওয়াটা সহজ। আমাদের ধরে-নেওয়াগুলো সচরাচর সামাজিক তথা রাজনৈতিক হয় । Sometimes it might be pure ignorance and unintentional, কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই ধরে নেওয়া আসলে prejudiceকে প্রকাশ করে, বা তার চেয়ে অনেক বেশি কিছু, অনেক ভয়ঙ্কর কিছু । Something far more sinister, utterly evil. যেমন, ধরে নেওয়া হলো যে একটি মুসলমান ছেলে যখন একটা টিফিন বাক্স খুলছে, তখন তার মধ্যে নিশ্চয় গরুর মাংস আছে। মহান মোদি পোশাক দেখে মানুষকে চেনার নির্দেশ দিয়েছেন । অতএব, ধর ধর, মার মার। অন্য কোথাও কারো কপালের টিপ থেকে ধরে নেওয়া হয় যে সে কতটা অত্যাচারী শাসকের সমর্থক, কতটা ধর্মকক্ষচ্যুত এবং পরদেশমুখী । এমতাবস্থায় কেউ আবার টিপ পরেন লড়াইয়ের চিহ্ন হিসেবে। আমার এক non-Sikh বন্ধু দিল্লীতে শিখ নিধনের পর মাথায় পাগড়ি বাঁধতেন দীর্ঘদিন। সে ছিল এক ধরে নেওয়ার সামনে তাঁর বুক-টানটান দাঁড়ানো। যেমন আবু সাঈদ দাঁড়িয়েছিলেন। সনজীদা খাতুন শুনেছি ঘুমের ভিতরে দেখে নিতেন কপালের টিপ জায়গা মতন আছে কি না।
একবার কেতকী কুশারি ডাইসন বলেছিলেন, মনে আছে, যে a monolingual world is a sad world. এই মর্মেই কিছু বলেছিলেন, আমি হুবহু উদ্ধৃতি দিচ্ছি না। সব কিছুই যে এখন ইংরেজিতে পড়তে হয়, সেই প্রসঙ্গে কথাটা বলেছিলেন। কিন্তু language বলতে এখানে আসলে মুখের ভাষা যেমন, তেমনি চলনের, বলনের, যাপনের, আরাধ্যের রূপ, রূপহীনতা, প্রার্থনার ভাষা, সবই বোঝায়। অথচ আমরা ভাবি সব এক রকম হয়ে যাওয়াতেই বুঝি শান্তি, সব এক রকম করে ফেলাটাই নিরাপদ। A Country of the Blind বলে H. G. Wells-এর গল্পে যে লোকটা পথ হারিয়ে অন্ধদের দেশে গিয়ে পৌঁছেছিল, সেখানে তার প্রেম হয়েছিল একটি মেয়ের সঙ্গে। সে দেশে সবাই রাতে কাজ করতো আর দিনে ঘুমোত। লোকটি তার প্রেমিকাকে রং-এর গল্প শোনাতো, যে রং মেয়েটি কখনও দেখেনি। তারপর সমাজ বললো, সবই ঠিক আছে, কেবল ওর চোখ দুটোতেই সমস্যা, সেগুলোকে বন্ধ করে দিতে হবে। তখন, সেই চোখ বন্ধ করে দেবার আগের রাতে, লোকটি আবার পথ ধরলো। এ দেশ তার জন্য নয়।
সনজীদা খাতুনের 'এখনো গেল না আঁধার' গানটি ২০০১-এ কলকাতায় গেয়েছিলেন, তার আগে ঢাকার রমনা বটমূলে ২০০১-এর ১৪ই এপ্রিল ছায়ানটের পয়লা বৈশাখ উদযাপনের সময় মঞ্চের ঠিক সামনেই পর পর দুটি শক্তিশালী গ্রেনেড বিস্ফোরণ ঘটে। ১৯৯২-এ অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ধবংস হয়েছিল, তার দশ বছর পর ২০০২-এ গুজরাতে গোধরার ট্রেনে আগুন এবং গোধরা-পরবর্তী মুসলমান নিধনযজ্ঞ ঘটবে। এই গান এমনই একটি সময়ে গাওয়া হয়েছিল। কিছুদিন আগে বন্ধু অলকানন্দা গুহ এই ফেসবুকেই একটি পোস্টে লিখেছিলেন এই রেকর্ডিং-এর ইতিহাস: '[রমনার বিস্ফোরণের] কিছুদিন পর কলকাতার উপকণ্ঠে উত্তরপাড়ায় আয়োজিত রবীন্দ্রপ্রেমী মানুষের এক বিপুল সমাবেশে আমন্ত্রিত হয়ে আসেন ছায়ানটের কর্ণধার রবীন্দ্রসঙ্গীতশিল্পী সনজীদা খাতুন। দেড়ঘন্টার সেই বিদ্যুৎস্পর্শী একক সঙ্গীতানুষ্ঠান শুরু করেছিলেন তিনি এই গানটি দিয়ে। "এখনো গেল না আঁধার"।
অবশ্যই শুরুতে ঐ বিস্ফোরণ-কাণ্ডের উল্লেখ করে, ঘটনাটির ঐতিহাসিক রাজনৈতিক তাৎপর্যের সংক্ষিপ্ত আলোচনা করে।
এই রেকর্ডিংটি অমিতেশ সরকারের তত্ত্বাবধানে ঠিক পরের দিন উত্তরপাড়ারই এক স্টুডিওয় গৃহীত হয়, আরো নটি গানের সঙ্গে। [...] আজকের দিনে, [...] স্মরণ করা যাক্ সংকটে-সম্পদে যুদ্ধে-শান্তিতে পথ হারানো মানব আত্মার এই আর্তনাদ, এই আহ্বান।'
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ম ত চ রন র জন ত ক বল ছ ল ন ছ য় নট আম দ র র কর ড ক রকম
এছাড়াও পড়ুন:
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ইসরায়েলের হামলা
রবিবার বিকেল থেকে ইরানজুড়ে নতুন করে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। সামরিক স্থাপনার পাশাপাশি ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেও লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।
রবিবার রাতে ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইদ খাতিবজাদেহ ইসরায়েলি হামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে তিনি জানান, রবিবার রাজধানী তেহরানে ইসরায়েলি হামলায় ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। খবর তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলুর।
এক্স-পোস্টে সাইদ বলেছেন, “ইসরায়েলের অপরাধী শাসকগোষ্ঠী রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক গবেষণা ইনস্টিটিউটের ঠিক বিপরীতে অবস্থিত ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি ভবনে ইচ্ছাকৃত এবং নির্মম হামলা চালিয়েছে।”
আরো পড়ুন:
ইসরায়েলের নতুন হামলায় ইরানের আইআরজিসির গোয়েন্দা প্রধান নিহত
ইসরায়েলে ৫০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল ইরান, তেল আবিব ও হাইফাতে সরাসরি আঘাত
উপ-মন্ত্রী আরো বলেন, “এই হামলায় বেশ কয়েকজন বেসামরিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন, আমার বেশ কয়েকজন সহকর্মীও আহত হয়েছেন, যাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।”
সাইদ বলেন, “এটি আরো একটি স্পষ্ট যুদ্ধাপরাধ, ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি শাসকগোষ্ঠীর চলমান ও নিয়মতান্ত্রিক আগ্রাসন অভিযানের অংশ।”
এর আগে শনিবার ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তরে হামলা চালিয়েছিল ইসরায়েল।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা তেহরানের অস্ত্র উৎপাদন ক্ষমতা ধ্বংস করার লক্ষ্যে ইরানের আইআরজিসি ও সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে রবিবার নতুন করে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, এই হামলায় ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি), গার্ডস কুদস ফোর্স এবং ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর অবকাঠামো লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী আরো জানিয়েছে, ইরানজুড়ে অসংখ্য অস্ত্র উৎপাদন কেন্দ্রে হামলা চালানো হয়েছে।
ইরানি বার্তাসংস্থা তাসনিম নিউজ জানিয়েছে, ইসরায়েলের এই হামলায় আইআরজিসিরি গোয়েন্দা প্রধান মোহাম্মদ কাজেমি এবং তার সহকারী হাসান মোহাকিক নিহত হয়েছেন। এছাড়া মোহসেন বাঘারি নামে আইআরজিসির আরো একজন জেনারেল নিহত হয়েছেন। এর প্রতিশোধ নিতে রবিবার রাতে ইসরায়েলে ৫০টি ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও শতাধিক ড্রোন ছুড়েছে ইরান।
ইসরায়েলের ফায়ার ও রেসকিউ সার্ভিসের বরাত দিয়ে টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, উত্তর ইসরায়েলে দুটি এবং হাইফায় একটি আবাসিক ভবনে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হানার খবর পেয়েছে তারা।
ইসরায়েলি জাতীয় জরুরি সেবা সংস্থা জানিয়েছে, হাইফায় ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে সাতজন আহত হয়েছেন। এছাড়া কিরিয়াত গাটের কাছে দক্ষিণাঞ্চলীয় একটি শহরে একজন আহত হয়েছেন।
এ ঘটনায় ইসরায়েলি সেনাপ্রধান ইয়াল জামির ইরানের ওপর আক্রমণ আরো তীব্র করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। একটি বিবৃতি জারি করে ইসরায়েরি সেনাপ্রধান বলেছেন, “আমরা আমাদের অভিযান তীব্রতর করে যাব এবং এটি করে, আগামী বছরগুলোতে আমাদের নিরাপত্তা জোরদার করব। আমরা জানতাম এর একটি মূল্য দিতে হবে এবং এটিই বোঝায় যে, আমরা কেন এখনই পদক্ষেপ নিয়েছি, তা অনেক দেরি হওয়ার আগেই।”
ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শুক্রবার থেকে ইসরায়েলি হামলায় ২২৪ জন নিহত এবং ৯০০ জন আহত হয়েছেন।
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কমপক্ষে ১৩ জন নিহত এবং ৩৭০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।
ঢাকা/ফিরোজ