বছর ঘুরে আবারও আসছে রোজার ঈদ। দর্শককে উৎসবের আমেজে রাঙাতে টিভি চ্যানেল ও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মগুলো নানা ধরনের আয়োজন করছে। সেখানে তারকারা নিজের সেরা অভিনয় তুলে ধরার মধ্য দিয়ে দর্শকের প্রত্যাশা পূরণে নিরলস কাজ করে গেছেন। এ ঈদে তরুণ অভিনেত্রীদের কাজের দিকে নজর থাকবে দর্শকের।
সাবিলা নূর
মাসরিকুল আলমের রচনা ও পরিচালনায় ‘ভুল সবই ভুল’ নাটকে জিয়াউল ফারুক অপূর্বর বিপরীতে, রাগিব রায়হান পিয়ালের ‘মাকড়সা’ নাটকে শ্যামল মাওলার বিপরীতে অভিনয় করেছেন তারকা অভিনেত্রী সাবিলা নূর। ঈদের নাটকে অভিনয় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ব্যক্তিগত ব্যস্ততার কারণে এবার কম নাটকে অভিনয় করেছি। এ আয়োজনে কত বেশি নাটকে কাজ করেছি, সেটি আমার কাছে মুখ্য নয়, কয়টি ভালো নাটক প্রচার হলো, সেটিই বড় বিষয়। চেষ্টা করেছি নতুন চরিত্র নিয়ে দর্শকের সামনে হাজির হতে। গৎবাঁধা চরিত্র নয়, নতুন কিছু চরিত্রে আমাকে দর্শক দেখতে পাবেন।’
তানজিম সাইয়ারা তটিনী
রুবেল হাসান পরিচাললিত ‘আবির ছোঁয়া’ টেলিছবিতে ইয়াশ রোহানের বিপরীতে, ইমরোজ শাওনের পরিচালনায় ‘ব্রেকিং নিউজ’ নাটকে তৌসিফ মাহবুবের বিপরীতে, রাফাত মজুমদার রিংকুর পরিচালনায় ‘দাঁড়ালে দুয়ারে’ নাটকে ইয়াশ রোহানের বিপরীতে, মহিদুল মহিমের পরিচালনায় ‘হৃদয়ের এক কোনে’ নাটকে ফারহান আহমেদ জোভানের বিপরীতে, রাফাত মজুমদার রিংকুর পরিচালনায় ‘কী মায়ায় জড়ালে’ নাটকে ইয়াশ রোহানের বিপরীতে, মহিদুল মহিমের ‘ফিরে দেখা’ নাটকে ফারহান আহমেদ জোভানের বিপরীতে, হাসিব হোসাইন রাখির রচনা ও পরিচালনায় ‘মনদিওয়ানা’ টেলিছবিতে তৌসিফ মাহবুবের বিপরীতে, রুবেল হাসানের পরিচালনায় ‘বউয়ের বিয়ে’ টেলিছবিতে ইয়াশ রোহানের বিপরীতে, সৈয়দ শাকিলের পরিচালানয় ‘শহরের যত রঙ’ নাটকে খায়রুল বাসারের বিপরীতে, মুহম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ পরিচালিত ‘তোমাদের গল্প’ টেলিছবিতে ফারহান আহমেদ জোভানের বিপরীতে, রাকেশ বসুর পরিচালনায় ‘লাস্ট নাইট’ নাটকে জিয়াউল ফারুক অপূর্বর বিপরীতে অভিনয় করেছেন তটিনী। কাজগুলো নিয়ে আশাবাদী এই অভিনেত্রী।
নাজনীন নীহা
জাকারিয়া সৌখিন পরিচালিত ‘মেঘ বালিকা’ টেলিছবিতে জিয়াউল ফারুক অপূর্বর বিপরীতে, শিহাব শাহীনের পরিচালনায় ‘অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ’ টেলিছবিতে তৌসিফ মাহবুবের বিপরীতে দেখা যাবে নাজনীন নীহাকে। এই অভিনেত্রী বলেন, দর্শকের কথা মাথায় রেখেই ঈদের নাটক-টেলিছবিতে অভিনয় করছি। ভালো গল্পের বেশ কিছু কাজ করেছি। আশা করছি দর্শক প্রশংসা পাবে কাজগুলো।
কেয়া পায়েল
রাফাত মজুমদার রিংকুর পরিচালনায় ‘ইতির ঈদি’ নাটকে ফারহান আহমেদ জোভানের বিপরীতে, মিফতা আনানের ‘মেড ফর ইচ আদার’ নাটকে তৌসিফ মাহবুবের বিপরীতে, মীর আরমান হোসেনের ‘জালিয়াত’ নাটকে ফারহান আহমেদ জোভানের বিপরীতে, সুমন ধরের পরিচালনায় ‘বজরা’ নাটকে তৌসিফ মাহবুবের বিপরীতে, তৌফিকুল ইমনের রচনা ও পরিচালনায় ‘বাজি’ নাটকে মুশফিক আর ফারহানের বিপরীতে, ‘যাকে তুমি ভালোবাসো’ নাটকে মুশফিক আর ফারহানের বিপরীতে, প্রবীর রায় চৌধুরীর ‘বান্টির বিয়ে’ টেলিছবিতে ফারহান আহমেদ জোভানের বিপরীতে, মিশুক মিঠুর পরিচালনায় ‘ইমারজেন্সি’ নাটকে খায়রুল বাসারের বিপরীতে, মুরসালীন শুভর ‘আপনি না তুমি’ নাটকে খায়রুল বাসারের বিপরীতে, মেহেদী হাসান হৃদয়ের ‘উভয় সংকট’ নাটকে মুশফিক আর ফারহানের বিপরীতে রয়েছেন কেয়া পায়েল।
তিনি বলেন, ‘দর্শক ঈদে নানা ধরনের গল্পের নাটক দেখতে চান। তাদের কথা মাথায় রেখেই ভিন্নধর্মী কিছু গল্পে অভিনয় করেছি। চরিত্রে বেশ নতুনত্ব রয়েছে; যা দর্শকের ভালো লাগবে।’
সামিরা খান মাহি
তারেক রেজা সরকারের পরিচালনায় ‘আপন মানুষ’ নাটকে আরশ খানের বিপরীতে, আবু হায়াত মাহমুদের পরিচালনায় ‘রহিম রূপবান’ নাটকে আবু হুরায়রা তানভীরের বিপরীতে, সকাল আহমেদের পরিচালনায় আরশ খানের বিপরীতে ‘ভেতরে আসতে দাও’, সাইফুল আজিজের পরিচালনায় ‘তবুও পাশাপাশি’ নাটকে ইয়াশ রোহানের বিপরীতে, চয়নিকা চৌধুরীর ‘কাজল ভোমরা’ টেলিছবিতে জোনায়েদ বোগদাদীর বিপরীতে, সেতু আরিফের রচনা ও পরিচালনায় ‘তোমার সঙ্গে থাকতে চাই’ নাটকে আরশ খানের বিপরীতে, রাফাত মজুমদার রিংকুর পরিচালনায় ‘হতাহতের ঘটনা’ টেলিছবিতে খায়রুল বাসারের বিপরীতে, এল আর সোহেলের পরিচালনায় ‘ইন্দ্রজাল’ নাটকে খায়রুল বাসারের বিপরীতে, অলোক হাসানের পরিচালনায় ‘অভ্যাস’ নাটকে পার্থ শেখের বিপরীতে থাকছেন সামিরা খান মাহি।
আইশা খান
সকাল আহমেদের পরিচালনায় ‘ভালোবাসার নাম মিসিসিপি’ নাটকে ফারহান আহমেদ জোভানের বিপরীতে, মুরসালিন শুভর পরিচালনায় ‘আমি যা দেখি’ নাটকে ফারহান আহমেদ জোভানের বিপরীতে, ইশতিয়াক আহমেদের পরিচালনায় ‘মায়াফুল’ নাটকে ইয়াশ রোহানের বিপরীতে, তৌফিকুল ইসলামের পরিচালনায় ‘নিয়ামত’ নাটকে মুশফিক আর ফারহানের বিপরীতে রয়েছেন আইশা খান।
নিলয়-হিমি জুটির নাটক-টেলিছবি
এ সময়ের ব্যস্ত জুটি নিলয় আলমগীর ও জান্নাতুল সুমাইয়া হিমি। এবারও ঈদে সর্বাধিক নাটকে জুটি হয়েছেন তারা। এস আর মজুমদারে নাটক ‘ব্রেকআপ’, আদিবাসী মিজানের পরিচালনায় নাটক ‘ডাকু’, মুসাফির রনির পরিচালনায় নাটক ‘নসিব’, মাহমুদ হাসান রানার পরিচালনায় ‘প্রাণের মানুষ’, এস আর মজুমদারের পরিচালনায় নাটক ‘মুসাফিরখানা’, মুসাফির রনির পরিচালনায় ‘রেডিমেড ঝামেলা’ নাটক ও মাহিন খান পরিচালিত টেলিছবি ‘একান্নবর্তী’সহ আরও অনেক নাটক-টেলিছবিতে অভিনয় করেছেন এই জুটি। দু’জনের নাটকের সংখ্যা ২০ ছাড়াতে পারে। এমনটিই জানিয়েছেন নিলয়। এবার হিমি ছাড়াও অন্য অভিনেত্রীর সঙ্গে বেশ কিছু কাজ করেছেন নিলয়। শামীম জামানের পরিচালনায় তাসনুভা তিশার বিপরীতে ‘ডাবল রোল’ নাটকে তাঁকে দেখা যাবে দ্বৈত চরিত্রে।
তারকা শিল্পীদের উপস্থিতি
সারা বছর ছোটপর্দায় উপস্থিতি না থাকলেও কোনো উৎসব আয়োজনে জ্যেষ্ঠ তারকাশিল্পীদের ঈদের কাজে দেখা যায়। প্রতি ঈদে অভিনেতা ও নির্মাতা আফজাল হোসেন নিজের পরিচালনায় ‘ছোটকাকু’ সিরিজ নিয়ে হাজির হন। এই ঈদে তিনি এটি পরিচালনা করছেন না। নাট্যনির্মাতা অনিমেষ আইচের পরিচালনায় অভিনয় করেছেন এই নন্দিত অভিনেতা। এবারের সিরিজের নাম ‘মিশন মুন্সীগঞ্জ’। পাশাপাশি তিনি অভিনয় করেছেন ‘কোনো একদিন’ নাটকে। ফারিয়া হোসেনের রচনায় নাটকটি নির্মাণ করেছেন চয়নিকা চৌধুরী। এতে তাঁর বিপরীতে অভিনয় করেছেন সাদিয়া ইসলাম মৌ। এই জুটি হাজির হবেন দম্পতির চরিত্রে। একই জুটিকে নিয়ে আরিফ খান নির্মাণ করেছেন টেলিছবি ‘ঘোর’।
শাহেদ শরীফ ও তানজিকা আমিনকে নিয়ে অভিনেতা ও নির্মাতা আবুল হায়াত বানিয়েছেন নাটক ‘সামনে সমুদ্র’। সম্প্রতি এর দৃশ্যধারণ শেষ করেছেন। এতে অভিনয়েও তাঁকে পাওয়া যাবে। এ ছাড়া ফেরদৌস হাসানের ‘পানি’ নাটকেও অভিনয় করেছেন আবুল হায়াত।
চ্যানেল আইয়ে এটি প্রচার হবে। অভিনেতা মোশাররফ করিম অভিনয় করেছেন ‘খুচরা পাপী’, ‘স্বামীর সুখ মনে মনে’, ‘বউ হইতে সাবধান’, ‘টোনাটুনির সংসার’, ‘বউ বেশি বোঝে’সহ ডজনখানেক নাটকে। চঞ্চল চৌধুরী অভিনয় করেছেন অনিমেষ আইচের পরিচালনায় ‘মিশন মুন্সীগঞ্জ’ নাটকে। সকাল আহমেদের পরিচালিত সাত পর্বের নাটক ‘মধুমালা’ নাটকে ব্যতিক্রমী চরিত্রে হাজির হবেন তিনি।
ঈদের নাটকে অন্যরা .
..
তানজিন তিশা, মীর সাব্বির, সজল নূর, তানজিকা আমিন, ফারিন খান, সুনেরাহ বিনতে কামাল, মীর রাব্বী, নীলাঞ্জনা নীলা, সৈয়দ জামান শাওন, ইরফান সাজ্জাদ, জিয়াউল হক পলাশ, পাভেল, মারজুক রাসেল, জাহের আলভী, শাশ্বত দত্ত, সাফা কবির, পারসা ইভানা, নাদিয়া আহমেদ, সালহা খানম নাদিয়া, অহনা, মৌসুমী হামিদ, নাজিয়া হক অর্ষা, অহনা, স্পর্শিয়া, তানিয়া বৃষ্টি, রুকাইয়া জাহান চমক, সাদিয়া আয়মানের মতো অভিনয়শিল্পীদের থাকবে সরব উপস্থিতি। এদের মধ্যে কোনো কোনো অভিনয়শিল্পীকে ডজনের বেশি নাটকে দেখা যাবে।
ওটিটিসহ নানা মাধ্যমের কাজে ব্যস্ততা বাড়ায় ঈদে আফরান নিশো, জাহিদ হাসান, রুনা খান, জাকিয়া বারী মম, মেহজাবীন চৌধুরী, তাসনিয়া ফারিণের মতো তারকার উপস্থিতি টিভি পর্দায় কম থাকবে। কেউ কেউ আবার নতুন নাটকে কাজ না করলেও অনেকেরই পুরোনো কিছু কাজ প্রচার হবে বলে জানা গেছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন টক আহম দ র পর চ ল পর চ ল ত উপস থ ত য় ন টক র ন টক জ য় উল ক জ কর র রচন
এছাড়াও পড়ুন:
ভালো ফলনের আশায় গাছকে খাওয়ান তাঁরা
চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পাহাড়ি প্রদেশ গুইঝৌতে প্রাচীনকাল থেকে ‘গেলাও’ জনগোষ্ঠীর বসবাস। ভিয়েতনামেও এই জনগোষ্ঠীর মানুষ বাস করেন। চীনে তাঁদের সংখ্যা প্রায় ৬ লাখ ৭৭ হাজার।
কৃষিনির্ভর গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা আজও প্রাচীনকালের পুরোনো এক ঐতিহ্য আগলে রেখেছেন। বছরের নির্দিষ্ট দিনে তাঁরা গাছকে খাওয়ান, যা চীনা ভাষায় ‘ওয়েই শু’ রীতি নামে পরিচিত।
এই প্রাচীন রীতি মূলত একধরনের প্রার্থনা। স্থানীয় অধিবাসীদের বিশ্বাস, এতে প্রকৃতি তুষ্ট হয়, ফসল ভালো হয়, পরিবারে শান্তি ও সমৃদ্ধি আসে। প্রতিবছর দুটি উৎসবের সময় এই অনুষ্ঠান পালন করা হয়—চীনা নববর্ষে, যা বসন্ত উৎসব নামে পরিচিত। আর গেলাও নববর্ষে, যা চান্দ্র পঞ্জিকার তৃতীয় মাসের তৃতীয় দিনে পালিত হয়।
অনুষ্ঠানের দিন সকালে আত্মীয়স্বজন ও গ্রামবাসী পাহাড়ের ঢালে জড়ো হন। তাঁরা সঙ্গে করে চাল থেকে তৈরি মদ, শূকরের মাংস, মাছ ও লাল আঠালো চাল নিয়ে আসেন। পাহাড়ে পৌঁছে প্রথমে আতশবাজি পোড়ানো হয়। এতে করে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
এর মধ্যেই একটি পুরোনো ও শক্তিশালী গাছ বাছাই করা হয়। এরপর সবাই ধূপ জ্বালিয়ে নতজানু হয়ে প্রার্থনা করেন। সবশেষে মূল পর্ব ‘গাছকে খাওয়ানো’ শুরু হয়।
একজন কুঠার বা ছুরি দিয়ে গাছে তিনটি জায়গায় ছোট করে কেটে দেন। সেই ক্ষতস্থানে চাল, মাংস ও মদ ঢেলে দেওয়া হয়, যাতে গাছ তাঁদের দেওয়া ভোগ গ্রহণ করতে পারে। পরে ওই জায়গা লাল কাগজে মুড়ে দেওয়া হয়।
এ ছাড়া গাছের গোড়া ঘিরে আগাছা পরিষ্কার করা হয়, মাটি আলগা করে দেওয়া হয়। এতে নতুন জীবনের বার্তা মেলে বলে মনে করেন গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা।
যে গাছকে খাওয়ানো হয়, সেটি যদি ফলদ হয়, তাহলে ভোগ দানকারীরা একটি আশাব্যঞ্জক শ্লোক উচ্চারণ করেন। বলেন, ‘তোমায় চাল খাওয়াই, ফল দিয়ো গুচ্ছ গুচ্ছ; তোমায় মাংস খাওয়াই, ফল দিয়ো দলা দলা।’